ভারত-পাক সম্পর্কের অবনতির জন্য দুই দেশের সাধারণ মানুষকে দায়ী করা চলে না। এহেন মন্তব্য করেই এবার বিপাকে পড়লেন বিজেপি সাংসদ তথা অভিনেতা সানি দেওল। নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তাঁর নির্বাচনী এলাকার মানুষরাই। স্রেফ পাক বিদ্বেষের কারণেই কি এই ক্ষোভ তাঁদের? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
পর্দায় তাঁর ভয়ে কেঁপেছিল পাক মুলুক। কিন্তু বাস্তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে গর্জে ওঠার বদলে অন্য সুরেই কথা বলছেন ‘গদর’ সিনেমার নায়ক সানি দেওল। তিনি সাফ জানিয়েছেন, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যে অশান্তির পরিস্থিতি রয়েছে, পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ তার জন্য দায়ী নয়। বরং এই পরিস্থিতির জন্য রাজনৈতিক নেতাদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুললেন পর্দার তারা সিং। আর এই বক্তব্যের জেরে নিজের নির্বাচনী এলাকাতেই জনতার ক্ষোভের মুখে পড়লেন বিজেপি সাংসদ সানি। সেই ক্ষোভের জল এতটাই গড়িয়েছে যে, তাঁকে ভোট দেওয়া নিয়েই আক্ষেপ করছেন ওই এলাকার সাধারণ মানুষ।
আরও শুনুন: বরেলির বাজারেই হারায় ঝুমকা! কী গল্প মিশে আছে এই গানের ছত্রে ছত্রে
সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তানের পুরনো দ্বৈরথ উসকে দিচ্ছে সানি অভিনীত ‘গদর’ ছবির সিক্যুয়েল ‘গদর ২’-এর খবর। কার্গিল বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তি পেয়েছে এই ছবির ট্রেলার। ‘ক্রাশ ইন্ডিয়া’ হুংকার, পাক সেনাদের অত্যাচার, ভারতবিদ্বেষের ছবিতে ভরপুর সেই ট্রেলার। কিন্তু সেখানে দাঁড়িয়েই পাক আধিকারিককে তারা সিং সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন, সুযোগ পেলে সে দেশের অর্ধেক নাগরিকই ভারতে গিয়ে থাকতে চাইবেন। অর্থাৎ, ভারতের প্রতি পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের তেমন কোনও বিদ্বেষ নেই। আর ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠানেও কার্যত সেই সুরেই কথা বলেন সানি দেওল। যিনি পাঞ্জাবের গুরদাসপুরের বিজেপি সাংসদও বটে। সানি-র মতে, আসলে দুই দেশের সাধারণ মানুষই শান্তি চায়। দু’পক্ষেই ভালবাসা রয়েছে। সেখানে ঘৃণা তৈরি করে দেয় রাজনীতির খেলা।
আরও শুনুন: ‘বড্ড অস্বস্তিকর কাজ!’ সঙ্গমে গীতাপাঠের বিতর্কিত দৃশ্য নিয়ে অকপট ‘ওপেনহাইমারে’র নায়ক
কিন্তু সানি দেওল-এর এই মন্তব্যকে আদৌ ভালভাবে নিচ্ছেন না তাঁর অনুরাগীরা। বিশেষ করে সানি যে এলাকা থেকে জিতে সাংসদ হয়েছেন, সেই গুরদাসপুরের সাধারণ মানুষেরা রীতিমতো আপশোশ করেই বলছেন, সানিকে ভোট দেওয়াই ভুল হয়েছে তাঁদের। তার মানে কি পাকিস্তানের প্রতিই তীব্র বিদ্বেষ রয়েছে তাঁদের? উঁহু, আসলে এই ক্ষোভের নেপথ্যে রয়েছে অন্য কারণ। জানা যাচ্ছে, ভোটে জেতার পর একবারের জন্যও নিজের নির্বাচনী এলাকায় পা-ই রাখেননি সানি দেওল। তাই সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, সানি অন্য দেশের সঙ্গে দেশের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলছেন, অথচ নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র আর তার সমস্যা নিয়ে চুপ কেন? এমনকি লোকসভাতেও নিজের নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করতে দেখা যায় না সানিকে, এই দাবি করেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা। বস্তুত ‘গদর’ ছবির জন্য সানি পর্দায় যেমন জনপ্রিয়, তেমনই সম্প্রীতি নিয়ে ওই বার্তা দিয়েও প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাস্তবে সেই জনপ্রিয়তা দূরে থাক, উলটে এবার সাধারণ মানুষের প্রশ্নের মুখেই পড়তে হল সানি দেওলকে।