রথযাত্রা মানেই জগন্নাথ। অনেকেই এমনটা মনে করেন। তবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আরও কিছু রথের প্রচলন রয়েছে। যার মধ্যে চমরাজেশ্বর রথোৎসব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই রথের সঙ্গে প্রভু জগন্নাথের সম্পর্ক নেই। মূলত নবদম্পতিদের কেন্দ্র করেই এই উৎসবের আয়োজন হয়। দেশের কোন রাজ্যে হয় এই বিশেষ রথোৎসব? আসুন শুনে নিই।
রথের সঙ্গে প্রভু জগন্নাথের নামই একযোগে উচ্চারিত হয়। তবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জগন্নাথকে ছাড়াও রথোৎসবের আয়োজন করা হয়। বাংলায় যেমন মা তারা রথের প্রচলন রয়েছে, তেমনই দেশের অন্যান্য রাজ্যেও বিভিন্ন ধরনের রথ প্রচলিত। যেমন, স্রেফ নবদম্পতিদের কেন্দ্র করেই এক বিশেষ রথোৎসবের প্রচলন রয়েছে কর্ণাটকে।
আরও শুনুন: বন্দে মাতরম বলায় নিষেধ নেই কোরানে, সপা বিধায়কের ‘ধর্মীয়’ আপত্তির পালটা মুসলিম নেতার
চমরাজনগরের এই বিশেষ মন্দিরে মূলত মহাদেবের আরাধনা করা হয়। চমরাজেশ্বর মন্দিরেও একাধিক দেব দেবীর মূর্তি চোখে পড়ে। প্রতিবছর আষাড় মাসে এই মন্দির থেকে বিশেষ রথ বেরোয়। অবশ্য স্রেফ একটা রথ নয়। সবার আগে থাকে গণপতির রথ। এরপর আরও কিছু দেব দেবীর রথ। আর সব শেষ থাকে চমরাজেশ্বরের রথ। আর সেই উৎসবে শামিল হন হাজার হাজার ভক্ত। সকলেই কোনও না কোনও ফল দিয়ে এদিন পুজো দেন। মন্দিরের চিরাচরিত রীতি তাই।
আরও শুনুন: বলতে হবে ‘জয় শ্রীরাম’, ইমামকে গেরুয়া চাদর পরিয়ে নির্দেশ, যোগীরাজ্যের ঘটনায় ফের বিতর্ক
তবে এই রথের বিশেষত্ব কিছুটা আলাদা। মূলত নবদম্পতিদের জন্য আয়োজন করা হয় এই রথোৎসব। এই অঞ্চলের রীতি অনুযায়ী বিয়ের পর নবদম্পতিকে প্রায় এক মাস আলাদা থাকতে হয়। একে অন্যকে ছেড়ে থাকলে ঠিক কেমন অনুভূতি হয়, তা বোঝার জন্যই নবদম্পতিকে এই বিশেষ নিয়ম পালন করতে হয়। আর একমাস পর তাদের মিলন হয় এই চমরাজেশ্বরের দরবারে। রথের দিন যুগল চমরাজেশ্বরের পুজো দেন। বিভিন্ন ধরনের ফল ও ফুল দিয়ে এদিন পুজো দেন সকলে। সেইসঙ্গে প্রার্থনা থাকে অটুট দাম্পত্যের। স্থানীয় বিশ্বাস, রথের দিন এই মন্দিরে প্রার্থনা করলে ফল মিলবেই। সেইসঙ্গে রথের রশিতে টান দেওয়াও বিশেষ ফলদায়ক বলেই মনে করেন সকলে। এমনটাও মনে করা হয়, এইদিন ভক্তিভরে রথে অংশ নিলে নবদম্পতি সন্তানসুখ পান। তাই স্থানীয় সকলেই এইসময় এই উৎসবে অংশ নেন। তবে স্রেফ, নবদম্পতিরা নয়, এই উৎসবে অংশ নেন অবিবাহিতরাও। চমরাজ্বশ্বরের সামনে সকলেই ভক্তিতে মাথা নত করেন। বহু বছর ধরে মহা সমারোহে এই উৎসব পালিত হয়ে আসছে। চলতি বছরেও যার ব্যতিক্রম হয়নি। একদিকে জগন্নাথের রথ ঘিরে গোটা দেশবাসী যেমন মেতে ছিল, সেখানে চমরাজেশ্বরের রথ উপলক্ষে ব্যস্ত ছিলেন কর্ণাটকের চমরাজনগরের বাসিন্দারা।