বৃষ্টির পূর্বাভাস দিতে পারে দেশের এই মন্দির। এমনকি বৃষ্টির পরিমান কতটা হবে তাও নির্ভুল ভাবে জানিয়ে দেয় এই মন্দির। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। বিজ্ঞানীরা এখনও এর নেপথ্যে কোনও যুক্তি খুঁজে পাননি। ঠিক কীভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেয় এই মন্দির? আসুন শুনে নিই।
বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়ার দায়িত্ব আবহাওয়া দপ্তরের। একসময় টিভি বা রেডিওতে বৃষ্টি বা আবহাওয়া সংক্রান্ত যা খবর দেখানো হত, তাতেই ভরসা করতেন সাধারন মানুষ। এখনও সেই ধারা বজায় রয়েছে, কিন্তু ইন্টারনেটের যুগে টিভি বা রেডিওতে আবওহাওয়ার খবর জানার প্রবণতা অনেকটাই কমেছে। কিন্তু কোনওক্ষেত্রেই একেবারে নির্ভুল ব্যাখ্যা পাওয়া সম্ভব নয়। টিভি, রেডিও কিংবা ইন্টারনেট, আবহাওয়া সংক্রান্ত খবরের একেবারে সঠিক গণনা করতে ব্যর্থ হয় প্রায়শই।
আরও শুনুন: ‘মুসলিম নেই আর’, প্রেমের টানে ভারতে আসা পাক বধূকে ফেরাতে নারাজ পরিবার, পড়শিরাও
ব্যতিক্রম উত্তরপ্রদেশের একটি মন্দির। শতাব্দীপ্রাচীন এই মন্দির নির্ভুল্ভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিতে পারে। এখনও পর্যন্ত কবে বৃষ্টি হবে বা কতটা বৃষ্টি হবে, সেই গণনায় কোনও ভুল করেনি এই মন্দির। কানপুরের ভিতরগাঁও বেহাতার ঘতমপুর এলাকায় অবস্থিত এই মন্দিরের প্রধান আরাধ্য জগন্নাথ। মন্দিরের দেওয়ালে প্রায় ৭ ফুট উচ্চতার একটি জগন্নাথ মূর্তি দেখা যায়। মন্দিরেরে স্থাপত্যশৈলীও দেখা মতো। কালো ইঁটের তৈরি এমন মন্দির দেশের আর মাত্র কয়েকটি জায়গাতেই রয়েছে। তার ওপর এর আকৃতি খানিকটা বৌদ্ধ স্তূপের মতো। অনেকেই মনে করেন, সম্রাট আশোকের আমলে নির্মানের কারণেই মন্দিরের এমন আকৃতি। তবে এক বিশেষ কারণে এই মন্দির সকলের কাছে পরিচিত। স্থানীয়রা একে রেইন টেম্পল-ও বলেন। কারণটা অবশ্যই নির্ভুল্ভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া।
আরও শুনুন: ‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগু হলে শাড়ি পরে থাকব’, বিতর্কিত মন্তব্য মুসলিম নেতার
কিন্তু কীভাবে সেই নির্দেশ দেয় এই মন্দির?
সে ইঙ্গিত মেলে মন্দিরের ছাদ থেকে চুঁইয়ে পড়া জল দেখে। স্থানীয়দের দাবি, কড়া রোদের দিনেও মন্দিরের ছাদ থেকে জল পড়তে দেখা যায়। কখনও সেই জলের ফোঁটা বড় হয়, কখনও ছোট। আর এমনটা যেদিন দেখা যায়, তার ঠিক দিনদশেকের মধ্যেই শুরু হয় বৃষ্টি। এক্ষেত্রে যখন মন্দিরের ছাদ থেকে বড় বড় জলের ফোঁটা পড়তে দেখা যায়, তখন প্রবল বৃষ্টির আশঙ্কা থাকে। আর জলের ফোঁটা ছোট হলে, বৃষ্টির পরিমান কম হয়। এখনও পর্যন্ত এর অন্যথা হয়নি। বৃষ্টি হওয়ার আগে মন্দিরের ছাদ থেকে জল পড়বেই, এমনটাই বিশ্বাস স্থানীয়দের। তাই কোনওবার জল না পড়লে বেজায় চিন্তায় পড়ে যান তাঁরা। কারণ সেক্ষেত্রে এলাকায় খরা আশঙ্কা তৈরি হয়। এখানেই শেষ নয়। আরও এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটে উত্তরপ্রদেশের এই মন্দিরে। এমনিতে যে মন্দিরের ছাদ থেকে চড়া রোদে জল পড়ে, বৃষ্টি শুরু হলেই সেখানে জলের চীহ্ন মাত্র দেখা যায় না। স্থানীয়দের দাবি, বাইরে প্রবলবেগে বৃষ্টি হলেও সেসময় মন্দিরের গর্ভগৃহ থাকে একেবারে খটখটে শুকনো। এর নেপথ্যে ঠিক কী কারণ রয়েছে, এখনও তার ব্যাখ্যা খুঁজে পাননি কেউই। এমনকি বিজ্ঞানীরাও পরীক্ষা করে কোনও সদুত্তর পাননি। তাই অনেকেই একে অলৌকিক বলেই ধরে নিয়েছেন। সেইসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের এই মন্দির সকলের কাছেই হয়ে উঠেছে চরম আশ্চর্যের এক স্থান।