প্রেমের টানে এ কূল ও কূল, দু-কূলই হারিয়েছেন তরুণী। প্রেমের জন্যই পাকিস্তান ছেড়ে এসেছিলেন ভারতে। তার জেরে দেশে ফেরার পথ বন্ধ হয়েছে আগেই। এদিকে এবার ভারত ছেড়ে যাওয়ার জন্যও হুমকি দেওয়া হল ওই পাক বধূকে। কী ঘটেছে ঠিক? শুনে নেওয়া যাক।
প্রেমের টানে সব বাধা কাটিয়ে এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন তরুণী। তাও আবার পাকিস্তান থেকে ভারতে, যাদের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক একেবারেই ভাল নয়। দুই দেশের রাজনীতির সেই ছাপ প্রভাব ফেলেছে সীমা হায়দার নামের ওই তরুণীর প্রেমকাহিনিতেও। একের পর এক হুমকির মুখে পড়ছেন যুগলে। কখনও পাকিস্তান থেকে হুমকি আসছে তরুণীকে ফেরানোর, কখনও আবার তাঁর পরিবার পরিজন প্রতিবেশীরা সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন যে সে দেশে আর ঠাঁই হবে না তাঁর। যদিও তিনি নিজে পাকিস্তানে ফেরার বদলে এ দেশেই থাকতে চেয়েছেন। কিন্তু এবার এ দেশ থেকেও চলে যাওয়ার হুঁশিয়ারি পেলেন সীমা হায়দার। পাক বধূকে ভারত ছাড়ার জন্য কড়া হুমকি দিল গো-রক্ষা হিন্দু দল নামের একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। তাদের দাবি, বিশ্বাসঘাতক জাতির কোনও মহিলাকে এ দেশে আশ্রয় দেওয়া চলবে না। বলাই বাহুল্য, পাকিস্তানি এবং মুসলিম, সীমার এই দুই পরিচয়ের দিকেই নিশানা হিন্দুত্ববাদীদের। শুধু তাই নয়, তাঁকে দেশ ছাড়ার জন্য সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে তারা।
আরও শুনুন: ‘মুসলিম নেই আর’, প্রেমের টানে ভারতে আসা পাক বধূকে ফেরাতে নারাজ পরিবার, পড়শিরাও
ঘটনার শুরু হয়েছিল নিছক প্রেম থেকেই। জানা গিয়েছে, ওই পাক তরুণীর স্বামী পেশায় রাজমিস্ত্রি, মূলত সৌদি আরবেই থাকেন তিনি। আর চার সন্তানকে নিয়ে পাকিস্তানে একাই থাকতেন বছর তিরিশের সীমা। এই পরিস্থিতিতে অনলাইন গেম খেলার সূত্রে নয়ডার ২২ বছরের তরুণ শচীন মিনার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল সীমার। আলাপ থেকে ক্রমে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। একাকিত্ব ঢেকে দেয় প্রেম। প্রেমের টানে সংসার ছেড়ে শেষ পর্যন্ত প্রেমিকের কাছে চলে আসার ঝুঁকি নেন তিনি। পাসপোর্ট ভিসার পরোয়া না করেই সন্তানদের নিয়ে ভারতে পালিয়ে আসেন সীমা। কিন্তু বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশের জেরে ওই পাক তরুণীকে আটক করে পুলিশ। সম্প্রতি জামিন পেয়েছেন তিনি। তবে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, পাকিস্তানে ফিরতে চান না আর। তাঁর স্বামী তাঁর উপরে অত্যাচার করতেন বলেও দাবি ওই পাক তরুণীর। তাই হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে এ দেশেই থেকে যেতে চেয়েছেন সীমা হায়দার।
আরও শুনুন: আইন আছে, হেলদোল নেই! যোগীরাজ্যে বিয়ের দু’ঘণ্টা পরেই স্ত্রীকে তিন তালাক ব্যক্তির
কিন্তু ওই তরুণী কী চান, সে কথায় গুরুত্ব দিতে নারাজ কেউই। অভিযোগ, ইতিমধ্যেই প্রাণনাশের বেশ কয়েকটি হুমকি পেয়েছেন সীমা ও তাঁর প্রেমিক। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল বালোচ জঙ্গিদের এক হুমকি ভিডিও, মুম্বই পুলিশের কাছে আসা উড়ো ফোন, সবেতেই দাবি করা হয়েছে, সীমাকে পাকিস্তানে ফেরত না পাঠালে ফল ভাল হবে না। তবে তরুণীর পরিবার-পড়শিদের বক্তব্য, ওই তরুণী আর মুসলিম নেই। সুতরাং পুরোনো ঠিকানায় আর ঠাঁই মিলবে না তাঁর। এদিকে এর মধ্যেই ভারত থেকেও নয়া হুমকি পেলেন সীমা। ওই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের দাবি, পাকিস্তানের গুপ্তচর হতে পারেন ওই তরুণী। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তিনি এ দেশ ছেড়ে না গেলে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হবে, এমনটাই হুঁশিয়ারি ওই সংগঠনের। এই পরিস্থিতিতে ওই পাক তরুণীর অবস্থা যে আরও খানিক ঘোরালো হয়েই উঠেছে, তা বলাই যায়।