একটানা ৫৮ ঘন্টা। ঠোঁটে ঠোঁট রেখে এতক্ষণ চুমু খেয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন এক দম্পতি। কিন্তু তাঁদের এই রেকর্ড ভাঙার সুযোগ পাবেন না আর কেউ। ‘গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’-এর তরফে এই বিষয়টিকেই বিশ্বরেকর্ডের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এমন সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কারণ কী ছিল? আসুন শুনে নিই।
ঠোঁট ঠোঁট রাখার ইতিহাস আজকের নয়। বহু আগে থেকেই এইভাবে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করে আসছেন মানুষ। স্রেফ যৌনতার আবেশ নয়, ঠোঁট ঠোঁট রাখলে শান্ত হয় মনও। বিদেশে এই অভ্যাস খুবই সাধারণ। কে কতক্ষণ এইভাবে চুম্বন করতে পারেন, এতদিন তা নিয়ে একটি প্রতিযোগিতা হত। এর ভিত্তিতেই বিশ্বরেকর্ডের মালিক হতেন কোনও যুগল। কিন্তু সে সুযোগ আর নেই। সেই পথ বন্ধ করেছে আয়োজক সংস্থাই।
আরও শুনুন: ভিনশহরে বিশ্বকাপের ম্যাচ, রাত কাটাবেন কোথায়? স্টেডিয়ামের পাশেই নতুন আউটলেট খুলছে OYO
২০১৩ সালে টানা ৫৮ ঘন্টা চুমু খেয়ে বিশ্বরেকর্ডের মালিক হয়েছিলেন এক দম্পতি। এখনও পর্যন্ত থাইল্যান্ডের একাচী এবং লাকসানাই দীর্ঘতম চুমুর রেকর্ডের মালিক। কিন্তু তাঁরাই প্রথম নন। এর আগে মোট ৮জন দম্পতি এমন রেকর্ড গড়েছেন। তাঁদের কেউ ২৯ ঘন্টা কেউ বা তার থেকে কিছুটা কম সময় ধরে চুম্বন করে বিখ্যাত হয়েছিলেন। কিন্তু এই প্রতিযোগিতার নিয়ম ছিল বেশ কড়া। প্রতিযোগিরা এক মূহুর্তের জন্যও যদি একে অন্যের ঠোঁট থেকে সরে আসতেন তাহলেই তাঁরা বাতিল। এমনকি যতক্ষণ চুম্বন চলবে ততক্ষণ বসার বা শোয়ার সুযোগও ছিল না তাঁদের। খাওয়ার পাইপ ব্যবহারের নিয়ম ছিল, কিন্তু সেক্ষেত্রেও দুজনের ঠোঁট এতটুকু আলাদা হওয়া চলবে না। তবে সবথেকে ভয়ংকর অবস্থা ছিল শৌচকর্মের ক্ষেত্রে। চুম্বনরত অবস্থায় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়া বেজায় কঠিন। সেইসঙ্গে প্রতিযোগিতা চলাকালীন সবসময় ঘিরে থাকবে আয়োজকরা। এভাবে শৌচকর্ম সারা বেশ অস্বস্তিকরও বটে। তবু অনেকেই ঝোঁকের বশে এই প্রতিযোগিতায় নাম লেখাতেন। যার ফল হত মারাত্মক। কয়েক ঘণ্টা ওইভাবে কাটানোর পরই কেউ কেউ জ্ঞান হারাতেন। আর কেউ যদি রেকর্ড গড়ার মতো অবস্থায় পৌঁছেও যান তাহলে প্রতিযোগিতা শেষ হওয়া মাত্র তাঁদের নিয়ে ছুটতে হত হাসপাতালে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই এমন অভিজ্ঞতার সাক্ষী থেকেছে গিনেশ বুকের কর্মকর্তারা।
আরও শুনুন: রোজ যৌনতার অভ্যেস! ভালবাসার টানে নিজের ক্ষতি করছেন না তো?
তাই এই প্রতিযোগিতা চিরতরে তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন তাঁরা। বদলে নিয়মে কিছুটা শিথিলতা এনে অন্য এক চুমু প্রতিযোগিতার কথা ঘোষণা করেছে এই সংস্থা। সেখানে প্রতিযোগিতার মাঝে বিশ্রামের সুযোগ পাবেন প্রতিযোগীরা। তাই অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কাও কিছুটা কম। সেইসঙ্গে পাকাপাকিভাবে থাইল্যান্ডের ওই দম্পতিকে দীর্ঘতম চুমুর চিরস্থায়ী খেতাব দিয়েছে এই সংস্থা। আগামী দিনে তাঁদের রেকর্ড ভাঙার সুযোগ পাবেন না কেউওই। তবে এই সিদ্ধান্ত প্রতিযোগীদের কথা চিন্তা করেই নেওয়া হয়েছে বলে দাবি সংস্থার। ঝোঁকের বশে এই কাজ করে আবারও কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ুক এমনটা একেবারেই চায় না বিশ্বরেকর্ড সংস্থা।