কথায় আছে, মাছে ভাতে বাঙালি! মাছ খেতে ভালোবাসেন না, এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া কঠিন। তবে সেক্ষেত্রে বিশেষ কিছু মাছ নিয়ে ছুঁতমার্গও থাকে অনেকেরই। কিন্তু মাছের ডিম খেতে পছন্দ করেন প্রায় সকলেই। না আছে কাঁটা বাছার ঝক্কি, না আছে অন্য কোনও সমস্যা। কিন্তু শুধুই কি স্বাদের জন্য মাছের ডিম জনপ্রিয়? এরমধ্যে খাদ্যগুণ কী রয়েছে? আসুন শুনে নিই।
ইলিশ, চিংড়ি, কাতলা, চিতল…মাছের নাম শুনলে জিভে জল আসে অনেকেরই। তবে মাছের থেকেও জনপ্রিয় তার ডিম। তা সে যে মাছই হোক না কেন। মাছের ডিমের চাহিদা বরাবরই। আসলে সারাবছর ঠিকমতো মাছের ডিম পাওয়া যায় না। বর্ষাকালেই এর জোগান থাকে সবথেকে বেশি। তাই এইসময় বাজারে মাছের ডিম দেখতে পেলে কিনে ফেলেন অনেকেই।
আরও শুনুন: গরমে ত্বকে ছোপ, হঠাৎ চুলকানি! অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে হচ্ছে না তো?
এবার প্রশ্ন হচ্ছে, শুধুই কি স্বাদের জন্য মাছের ডিম এতটা জনপ্রিয়?
বিজ্ঞানীদের দাবি একেবারেই তা নয়। বরং মাছের ডিমের রয়েছে একাধিক খাদ্যগুণ। বিজ্ঞানীদের মতে, এরমধ্যে মূলত ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। এর জেরেই বিভিন্ন রোগ সারাতে পারে মাছের ডিম। এছাড়া এর মধ্যে, ভিটামিন, প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেটও রয়েছে। তাই নির্দিষ্ট পরিমাণে মাছের ডিম শরীরের জন্য একেবারেই ক্ষতিকর নয়। রোগের ক্ষেত্রে প্রথমেই বলতে হয় আর্থারাইটিসের কথা। এমনিতে এই রোগ যথেষ্ট ভোগান্তির। কিন্তু মাছের ডিম খেলে সেই সমস্যা অনেকটাই মিটতে পারে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। শুধু তাই নয়, দুর্বল হাড়ের সমস্যা থেকেও মুক্তি মিলতে পারে মাছের ডিমের জোরেই। কারণ হাড়ের জন্য যে পরিমান ক্যালসিয়াম আর ভিটামিন ডি প্রয়োজন, তার অনেকটাই রয়েছে মাছের ডিমে। সব মাছের ডিমে খাদ্যগুণ অবশ্যই সমান নয়, কিন্তু বেশিরভাগ মাছের ক্ষেত্রেই এই ধরনের উপকার মিলতে পারে। এরপর বলতে হয় হার্টের অসুখের কথা। মাছের ডিম সে ক্ষেত্রেও যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে। অনেকেই মনে করেন মাছের ডিমে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকে। তাই হার্টের রোগীদের জন্য এই খাবার একেবারেই উপযুক্ত নয়। কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞানীদের দাবি এই ধারণা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। কারণ মাছের ডিমে যে কোলেস্টেরল রয়েছে তা রক্তের কোলেস্টেরলের উপর তেমন প্রভাbenifits ব ফেলে না। বরং এরমধ্যে এমন কিছু ফ্যাট রয়েছে যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতেও পারে। অন্যদিকে মাছের ডিম খেলে দৃষ্টিশক্তিও ভালো থাকে। বিশেষত যারা সারাদিন কম্পিউটার স্ক্রিনে চোখ রেখে কাজ করেন তাঁদের জন্য মাছের ডিম বিশেষ উপকারী।
আরও শুনুন: বাড়ি ফিরেই ফ্রিজের ঠান্ডা জল খাচ্ছেন! হার্টের সমস্যা ডেকে আনছেন না তো?
তবে মাছের ডিম সবথেকে কার্যকরী ডায়বেটিসের ক্ষেত্রে। শরীরে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে এর যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে বলেই দাবি বিজ্ঞানীদের। এরমধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ধর্মী কিছু যৌগ রয়েছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া ক্যানসার প্রতিরোধেও কাজে আসতে পারে মাছের ডিম। এমনটাও দাবি করেন বিজ্ঞানীরা। একইভূমিকা রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রেও। পাশাপাশি ডিপ্রেশন, ওজন কমানো, রক্তাল্পতা ইত্যাদি বিভিন্ন রোগ সারানোয় বিশেষ ভূমিকা রয়েছে মাছের ডিমের। সবক্ষেত্রেই এর মধ্যে থাকা বিশেষ কিছু যৌগ বিশেষভাবে কাজে আসে। তাই স্রেফ স্বাদের জন্য নয়, শরীর ভালো রাখতেও নিশ্চিন্তে মাছের ডিম খাওয়ার পরামর্শই দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।