একদিকে মা হওয়ার আনন্দ আর একদিকে নিজের শরীর, লুক নিয়ে হীনমন্যতা। আমাদের দেশে গড়পড়তা প্রায় ৭০ শতাংশ নারীর জীবনে এই দুই ঘটনা একইসঙ্গে ঘটে। তাঁদের কারও কারও জীবনে আবার এর সঙ্গেই জুড়ে যায় সংসার ভাঙার যন্ত্রণাও।
মাতৃত্বকালীন পরিস্থিতি সব নারীর কাছেই জীবনের এক বিশেষ পর্যায়। মা হওয়ার আনন্দ যেমন আছে তেমনই শারীরিক নানা যন্ত্রণা ও বদলের মধ্যে দিয়েও যেতে হয় নারীদের। স্তনের শিথিলতা থেকে সামগ্রিক মেদবৃদ্ধি, স্ট্রেচ মার্কস- মাতৃত্বের হাত ধরে সারাজীবনের সঙ্গী হয়ে যায় এসব। অনেক সময়ই যা নিয়ে অবসাদেও ভোগেন নতুন মায়েরা। নতুন মায়েদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে এখন অনেকটাই সচেতন আমাদের সমাজ। এই আপদকালীন সময়ে তাঁর স্বামী এবং পরিবারের লোকজনদের তার পাশে থাকার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরাও। কিন্তু ধরুন, সন্তান প্রসবের দরুণ স্ত্রীর এই বদলে যাওয়া রূপ দেখে যদি স্বামী নিজেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন?
আরও শুনুন: খোরপোশ না দিলে জেল, ঝামেলা এড়াতে খুচরোতে ৫৫ হাজার দিলেন স্বামী, হতবাক বিচারক
বিবাহ বিষয়ক এক পরামর্শদাতাকে অনলাইনে জনৈক ব্যাক্তি জানিয়েছেন, যে তাঁর স্ত্রীর প্রসবের পর স্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গমে তাঁর সমস্যা হচ্ছে। স্ত্রীর প্রতি আর কোনও আকর্ষণ তিনি বোধ করছেন না। কারণ তিনি খুবই মোটা হয়ে গিয়েছেন। আর স্থূল মহিলাদের তাঁর একেবারেই পছন্দ নয়। এইটুকুর সঙ্গে হয়তো অনেক পুরুষই একমত হবেন। আবার অনেক নারীও, যারা খুব মোটাসোটা চেহারার পুরুষের প্রতি যৌন আকর্ষণ খুঁজে পান না। কিন্তু যদি সঙ্গী কোনও বিশেষ শারীরিক সমস্যার দরুণ হঠাৎ ওজনে ভারী হতে থাকেন? সমস্যা শুরু হয়েছে ওই ব্যক্তির অন্য কথাতেও। ওই ব্যক্তি লিখেছেন যে, ‘তাঁর স্ত্রীকে তিনি ভালইবেসেছিলেন তাঁর রোগা ছিপছিপে, খেলোয়াড়সুলভ চেহারার জন্য।’
আরও শুনুন: মন ভরছে না পাঁচ স্ত্রীতেও! হিন্দু তরুণীকে অপহরণ করে বিয়ে মুসলিম যুবকের
উত্তরে, ওই বিশেষজ্ঞ তাঁর কলামেই এই ব্যক্তিকে তুলোধনা করেছেন। জানিয়েছেন, কারও শারীরিক গঠনের জন্য তাঁর প্রেমে পড়া বিষয়টিকে একেবারেই মান্যতা দেন না তিনি। কোনও মানুষের ব্যাক্তিত্ব, ভাললাগা না-লাগা, বুদ্ধি-বিবেচনার ধরন এসব বাদ দিয়ে কোনও বাইরের সৌন্দর্যের প্রতি টান আদৌ ভালোবাসা নয়। সঙ্গে তিনি আরও জুড়েছেন যে হয়তো ওই ব্যক্তির স্ত্রীই অবচেতনে এই ওজন বৃদ্ধিটাকে তাঁকে দূরে সরাতে হাতিয়ার করছেন। কষ্ট বা দুঃখ কমাতে আমরা তো অনেক সময়ই অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলি। সঙ্গে ওই বিশেষজ্ঞ এও জানান ওই মহিলা হয়তো নিজেও এই বিষয়টিকে ভালভাবে নিতে পারছেন না। তাই ওই ব্যক্তির এই গোটা বিষয়টির প্রতি সংবেদনশীল হতেও পরামর্শ দিয়েছেন ওই বিবাহ বিশেষজ্ঞ। তবে এই লেখা প্রকাশের পরপরই নেটিজেনদের অনেকেই ওই ব্যক্তিকে এই বিষয়ে তোপ দেগেছেন। তবে এ কি শুধু তাঁর একার মানসিকতা! মনে মনে অনেক পুরুষ কি এরকমই ধারণা পোষণ করেন? যদি তা হয়, তাহলে চিন্তার যে অবকাশ আছে তা বলাই বাহুল্য।