ডিম আগে, না মুরগি? তামাশা করে এ প্রশ্ন অনেকেই করেছেন। প্রশ্নটা সহজ, কিন্তু উত্তর নেই। অন্তত ছিল না এতদিন। তবে সম্প্রতি সে উত্তরই দিলেন বিজ্ঞানীরা। কী বলেছেন তাঁরা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
মুরগির থেকে ডিম পাওয়া যায়, আর সেই ডিম থেকেই যে ফের মুরগির জন্ম, এ কথা তো সকলেরই জানা। কিন্তু একেবারে প্রথমে কী ছিল? ডিম, নাকি মুরগি? মজা করে যে কতজন এই ধাঁধা জিজ্ঞেস করেছেন, তার ইয়ত্তা নেই। তবে কেবল মজার জন্যই নয়, গবেষণার ক্ষেত্রেও উঠে এসেছে এই প্রশ্ন। আপাত নিরীহ এই প্রশ্ন নিয়েই বছরের পর বছর ধরে মাথা ঘামিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আর অবশেষে উত্তর মিলেছে এই পুরনো ধাঁধার। কী সেই উত্তর? বলা যাক সে কথাই।
আরও শুনুন: ঘুমিয়েই কাটে ৩০০ দিন, কীভাবে বেঁচে আছেন রাজস্থানের যুবক?
বিজ্ঞানীদের দাবি, এতদিনে এই হেঁয়ালির উত্তর খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। উভচর এবং টিকটিকিজাতীয় প্রাণীদের নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণার ফলেই নাকি মিলেছে উত্তর। এই গবেষণায় ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরাও। সব মিলিয়ে ৫১টি জীবাশ্ম এবং ২৯টি জীবন্ত নমুনা খতিয়ে দেখেছেন তাঁরা। এর মধ্যে রয়েছে ওভিপারাস অর্থাৎ ডিম পাড়া প্রাণী এবং ভিভিপারাস অর্থাৎ সন্তান প্রসব করা প্রাণী, এই দুই ধরনের প্রজাতিই। আর এই দুই প্রজাতির একাধিক নমুনা খতিয়ে দেখেই বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্তে এসেছেন যে, ডিম নয়, আগে এসেছে মুরগি-ই।
আরও শুনুন: পড়ে রইল ১১ মাসের সন্তান, কর্ণাটকে ফ্রি-বাসে চড়ে প্রেমিকের কাছে ছুটলেন তরুণী
কিন্তু কীভাবে এই সিদ্ধান্তে এলেন ওই বিজ্ঞানীরা? বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানপত্রিকা নেচার ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশন জার্নালে সেই প্রশ্নেরও বিস্তারিত জবাব দিয়েছেন তাঁরা। গবেষণাধর্মী ওই প্রবন্ধে ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, স্তন্যপায়ী প্রাণীরা যেমন সন্তান প্রসব করে, সেইভাবেই সরীসৃপ ও পক্ষী শ্রেণির প্রাণীরাও আগে ডিম পাড়ত না, সরাসরি সন্তানই প্রসব করত। আসলে নিজের প্রজাতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রাকৃতিকভাবেই এমন বৈশিষ্ট্যের উদ্ভব হয়েছিল। এমনকি সদ্যোজাতের জীবনধারণের জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক কোন সময়, সেই বুঝে শরীরের মধ্যে ভ্রূণকে বেশিদিন ধরে রাখতেও পারত। এমনকি পরে ডিমের শক্ত খোসাও এসেছে সেই একই কারণে, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে যাতে নতুন ভ্রূণকে বাঁচিয়ে রাখা যায়। প্রজাতির বংশরক্ষার জন্য এইভাবেই বিবর্তন ঘটিয়েছে প্রকৃতি, দাবি বিজ্ঞানীমহলের।