দেবতাকে কিছু দিলে নাকি তার প্রতিদান মেলে হাতে হাতেই, এমনটাই বিশ্বাস ভক্তদের। আর সে কথা বোধহয় জোর গলাতেই স্বীকার করবেন এই মহিলা। দেবতাকে মঙ্গলসূত্র দিয়ে ফেলে বিনিময়ে দামি সোনার হার পেয়েছেন যে তিনি। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
‘কৃপণ’ কবিতায় রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন এক দানের কথা। দেবতাকে দেওয়া একটি কণা সেখানে দাতার কাছেই ফিরে এসেছিল সোনা হয়ে। তেমনভাবেই যেন প্রতিদান পেয়েছেন এই মহিলাও। ঈশ্বরকে যা দিয়েছিলেন, তার বিনিময়ে অপ্রত্যাশিত প্রাপ্তি ঘটেছে তাঁরও। যদিও কবিতার ওই ব্যক্তির মতো তিনিও যে খুব স্বেচ্ছায় দান করেছিলেন তা বলা যাবে না। কিন্তু তাতে কী! সে দানের প্রতিদান পাওয়ার পর বোধহয় আর আফসোসের কোনও জায়গা নেই তাঁর।
ভাবছেন, কী ঘটেছে ঠিক? তাহলে খুলেই বলা যাক বরং।
আরও শুনুন: বোন মুসলিম ভাই হিন্দু, মায়ের শেষকৃত্যের রীতি নিয়েই বাধল জোর বিবাদ
তামিলনাড়ুর ছটি পবিত্র মুরুগান মন্দিরের মধ্যে একটি হল পালানি মুরুগান মন্দির। দেবতার পূজা করতে সেখানে ভিড় জমান হাজার হাজার ভক্ত। দেবতার উদ্দেশে সাধ্যমতো জিনিসপত্র, টাকাপয়সা, সোনাদানা নিবেদনও করেন তাঁরা। তেমনটাই গিয়েছিলেন সঙ্গীতা নামের এই মহিলাও। পুজোর সময় তাঁর মনে হয়, নিজের গলায় থাকা তুলসীর মালাটি তিনি দেবতাকেই নিবেদন করবেন। যেমন ভাবা তেমনই কাজ। ভক্তিভরে সেই মালাটি গলা থেকে খুলে মন্দিরের দানবাক্সে দিয়ে দেন তিনি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে গলায় হাত দিতেই তাঁর মাথায় হাত পড়ার জোগাড়। গলার মঙ্গলসূত্রটি যে উধাও! একটু ভাবতেই উত্তর মেলে। বুঝতে পারেন, গলা থেকে তুলসীর মালা খোলার সময় তার সঙ্গে জড়িয়ে খুলে গিয়েছে বিয়ের মঙ্গলসূত্রটিও। কিন্তু কী করবেন তিনি, সে মালা তো প্রণামীর বাক্সে ফেলে দিয়েছেন ইতিমধ্যে। অতএব মন্দির কর্তৃপক্ষকে গোটা বিষয়টি জানান ওই মহিলা। তিনি বলেন যে তাঁর পরিবার রীতিমতো দরিদ্র, তাঁদের পক্ষে নতুন করে মঙ্গলসূত্র গড়ানো সম্ভব নয়। অতএব যদি কোনোভাবে ওই হার ফেরত পাওয়া যায়, সেই আরজি জানান মহিলা।
আরও শুনুন: মায়ের লাঞ্ছনার প্রতিবাদ, বাবাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে থানায় হাজির দুই খুদে
ভক্তের কাতর মিনতিতে ভগবান না হোন, তাঁর পুরোহিতরা বেশ বিচলিতই হয়েছিলেন। মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তাঁরা বোঝেন, ওই মহিলার কথা মিথ্যে নয়। এরপরেই মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে একটি নতুন মঙ্গলসূত্র কিনে দেওয়া হয় ওই মহিলাকে, যার দাম পড়েছে এক লাখ ন’হাজার টাকা। আর সেই নতুন হার পেয়ে বেজায় খুশি ওই মহিলা। ভগবানের আশীর্বাদ মনে করেই তা নিয়ে নিজের বাড়ি কেরলে ফিরে গিয়েছেন সঙ্গীতা।