টানা ৭৪ দিন সমুদ্রের নীচে। এর আগে এমন নজির কারও নেই। তাই এর জেরে একেবারে বিশ্বরেকর্ডের মালিক হয়েছেন এক অধ্যাপক। ঠিক কী উদ্দেশ্য নিয়ে এতগুলো দিন সমুদ্রের নীচে কাটিয়েছেন তিনি? আসুন শুনে নিই।
সমুদ্রের নীচের জগতটা ঠিক কেমন? এই নিয়ে অনেকেরই বেশ আগ্রহ থাকে। সিনেমায় বা টেলিভিশনে অনেক সময় সেই দৃশ্য দেখানোও হয়। কিন্তু সেসবই সাময়িক। প্রতিদিন সেই জগতে ঠিক কী পরিবর্তন ঘটছে তা জানতে পারা সাধারণ মানুষের পক্ষে প্রায় অসম্ভব বললেই ছলে। কিন্তু স্বচক্ষে সেই অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে চেয়েছিলেন এক মার্কিন অধ্যাপক। তাই রীতিমতো প্রস্তুতি নিয়ে সমুদ্রের নীচে থাকার ব্যবস্থা করে ফেলেন তিনি। আর এভাবেই তিনি কাটিয়ে ফেলেন ৭৪ দিন।
আরও শুনুন: সমুদ্রের নীচে ৭০০০ বছরের পুরনো রাস্তার হদিশ, এখনও দিব্যি হাঁটতে পারবে মানুষ
এর আগে একটানা সমুদ্রের নীচে থাকার রেকর্ড গড়েছিলেন আরও এক মার্কিন ব্যক্তি। তবে তিনি সমুদ্রের নীচে কাটিয়েছিলেন ৭৩ দিন। তাই ফ্লোরিডার অধ্যাপক জোসেফ ডিটুরি তার থেকে একদিন বেশি সমুদ্রের গভীরে কাটিয়েই গড়ে ফেলেছেন নতুন বিশ্বরেকর্ড। যদিও এখনই উপরে আসার কোনও ইচ্ছা তাঁর নেই। মোট ১০০ দিন ওইভাবে সমুদ্রের নীচে কাটাতে চান তিনি। আসলে বরাবরই সমুদ্রের নীচের জগত সম্পর্কে তাঁর অসীম আগ্রহ। তাঁর অধ্যাপনার বিষয়ও জীববিজ্ঞান। তাই নিজের চোখেই সামুদ্রিক প্রাণীদের রকমফের দেখতে চেয়েছিলেন তিনি। এই কাজে তাঁর ইউনিভার্সিটিও যথেষ্ট উৎসাহ যুগিয়েছে। কারণ দীর্ঘ ৭৪ দিন জলের নীচে থেকেও নিয়মিত ক্লাস করিয়েছেন তিনি। বলা ভালো, এই ক্লাসগুলো তাঁর সাধারণ ক্লাসের তুলনায় অনেক বেশি আকর্ষনীয় ছিল। যেখানে তিনি ক্লাসরুমে বসে কোনও সামুদ্রিক প্রাণীর ছবি দেখাতে পারতেন, সেখানে সমুদ্রের তলায় সরাসরি সেইসব প্রাণীদের দেখাতে পেরেছেন। যা খুবই উপভোগ করেছে তাঁর ছাত্রছাত্রীরাও। শুধু তাই নয়, অনলাইনে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা পড়ুয়াদের ক্লাস করাতে পেরেছেন। এই কদিনে মোট ২৫০০ পড়ুয়াকে ক্লাস করিয়েছেন তিনি।
আরও শুনুন: পেট্রোল নয়, বিয়ার ঢাললেই ছুটবে বাইক, অদ্ভুত আবিষ্কার মার্কিন যুবকের
তবে আগামী দিনেও এই ধারা বজায় রাখতে চান ডিটুরি। সকলকে সমুদ্রের নীচে থাকা জগত সম্পর্কে আগ্রহী করে তোলাই, তাঁর আসল উদ্দেশ্য। এই কদিনে একাধিক জায়গায় ইন্টারভিউ দিয়েছেন তিনি। তাঁর জন্য বিশেষ এক ঘরও বানানো হয়েছে সমুদ্রের তলদেশে। যেখান থেকে অনায়াসে ভিডিও রেকর্ড করতে পারতেন তিনি। তবে এতদিন জলের নীচে থাকার দরুন সূর্যের আলোর সংস্পর্শে একেবারেই আসতে পারেননি ডিটুরি। যা খুবই অস্বস্তিকর মনে হয়েছে তাঁর জন্য। তবে এভাবেই আরও কটা দিন কাটিয়ে দিতে পারবেন বলেই দৃঢ় বিশ্বাস তাঁর। তাই যতই কষ্ট বা অস্বস্তি হোক, মোট ১০০ দিন জলের নীচে কাটিয়ে, তারপরই উপরে আসবেন বলে ঠিক করেছেন এই অধ্যাপক।