বাড়ি থেকে ঠিক করা বিয়েতে বসতে আপত্তি। তাই কার্যত পাত্রের মুখের উপরেই বিয়ে ভেঙে দিয়েছিলেন তরুণী। কিন্তু মেয়েদের ‘না’ শুনতে এখনও অভ্যস্ত নয় সমাজ। তাই এই আপত্তির জন্য বড় দাম দিতে হল তরুণীকে। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
বিয়ে ভাঙার শাস্তি। এই যুগে দাঁড়িয়ে হয়তো শুনতে আশ্চর্যই লাগবে। কিন্তু মেয়েদের নিজস্ব মতামতকে এই যুগেই বা কতখানি গুরুত্ব দেওয়া হয়? মহাভারতে দ্রৌপদী স্বয়ংবর সভাতে দাঁড়িয়েও সূতপুত্র কর্ণকে বিয়ে করতে চাননি, কিন্তু কর্ণ সে কথা মেনে নিয়ে নীরবেই সরে গিয়েছিলেন। কিন্তু এই তরুণী বিয়ে নাকচ করে তেমন কোনও শান্ত প্রতিক্রিয়া পাননি। বরং নিজের পরিবারও তাঁর বিরুদ্ধেই দাঁড়িয়েছে। আর তার জেরে রীতিমতো শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে ওই তরুণীকে। এমনই শাস্তি, যে, এই সময়ে দাঁড়িয়ে তাকে অমানবিক বলেই মনে করবেন যে কেউ। জানা গিয়েছে, ওই তরুণীর চুল কাটিয়ে তাঁকে সারা গ্রাম ঘোরানো হয়েছে। তাঁকে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। আর এই সবটাই ঘটেছে খোদ গ্রাম পঞ্চায়েতের তত্ত্বাবধানে।
কী ঘটেছে ঠিক?
আরও শুনুন: বিজেপির ঔদ্ধত্যের জবাব দিয়েছে জনতা, কর্ণাটক নিয়ে চাঁচাছোলা মন্তব্য রাজ ঠাকরের
জানা গিয়েছে, ওই তরুণী ঝাড়খণ্ডের মেদিনীনগর এলাকার বাসিন্দা। গত ২০ এপ্রিল তাঁর বিয়ে ঠিক হয়েছিল। কথামতো বিয়ে করতে পৌঁছে গিয়েছিলেন পাত্রও। কিন্তু অভিযোগ, ওই তরুণী নিজের বিয়ের দিন বাড়ি ছেড়ে চলে যান। তার আগেই তিনি হবু বরকে মুখের উপরেই জানিয়ে দেন যে, তিনি বিয়ে করতে চান না।
আরও শুনুন: হরিয়ানায় আজব নিয়ম! কর্মক্ষেত্রেও মিলবে বিয়ার, তবে মানতে হবে শর্ত
বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর তরুণীকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি বলেই দাবি তাঁর পরিবারের। অবশেষে ২০ দিন পেরিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি। কিন্তু বাড়ির লোকেরা তাঁর সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেননি আদৌ। বরং তরুণীর শাস্তির দাবি তুলে তাঁকে বিচারের জন্য পঞ্চায়েতে হাজির করানো হয়। পঞ্চায়েতের সদস্যেরা তরুণীকে জিজ্ঞাসা করেন, কেন তিনি বিয়ে ভাঙলেন, এই ২০ দিনই বা তিনি কোথায় লুকিয়ে ছিলেন? কিন্তু তিনি কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি বলে অভিযোগ। এর পরই তাঁর শাস্তির বিধান দেয় পঞ্চায়েত। ঘটনায় পঞ্চায়েত সদস্য এবং তরুণীর বউদি-সহ আপাতত চার জনকে আটক করেছে পুলিশ। সময় যতই পালটাক, মেয়েদের দেখার চোখ কততখানি পালটেছে? সে প্রশ্নই ফের উসকে দিল এই ঘটনা।