প্রতিদিনই লাখো ভক্তের সমাগম। দিনের শেষে অনায়াসে ভরে ওঠে মন্দিরের প্রণামী বাক্স। ৫০ পয়সা থেকে শুরু করে ১০ টাকা, বাক্সের অধিকাংশ জুড়েই থাকে কয়েনের মেলা। এতদিন তা জমা করা হত বিভিন্ন ব্যাঙ্কে। কিন্তু সম্প্রতি সেই কয়েন নিতে অস্বীকার করছে ব্যাঙ্কগুলিও। অগত্যা আরবিআই-এর দ্বারস্থ মন্দির কর্তৃপক্ষ। কোন মন্দিরের কথা বলছি? আসুন শুনে নিই।
প্রতিমাসে প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা জমা পড়ে মন্দিরের প্রণামী বাক্সে। কিন্তু তার বেশিরভাগটাই কয়েনে। এতদিন এই বিপুল অঙ্কের মুদ্রা জমা করা হত বিভিন্ন ব্যাঙ্কে। কিন্তু সম্প্রতি এই বিপুল পরিমাণ কয়েন জমা নিতে চাইছে না ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষও। ফলে বেজায় সমস্যায় পড়েছেন মন্দির কমিটির সদস্যরা।
আরও শুনুন: জন্মবার অনুযায়ী আপনার উপাস্য দেবতা কে? শুনে নিন
কথা বলছি, শিরিডির বিখ্যাত সাঁই বাবা মন্দির সম্পর্কে। মুম্বইয়ের কাছে অবস্থিত এই মন্দির সারা ভারতে বিখ্যাত। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা ভিড় জমান এই মন্দিরে। শুধু দৈব মাহাত্ম্য নয়, মন্দিরের ভিতরের পরিবেশও যথেষ্ট সুন্দর। তাই মুম্বই বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে এই মন্দির অবশ্যই একটি দর্শনীয় স্থান। তবে সম্প্রতি এই মন্দিরে অদ্ভুত এক সমস্যা দেখা দিয়েছে। বলা ভালো, মন্দির কর্তৃপক্ষ এক জটিল সমস্যায় পড়েছেন। সমস্যার মূলে মন্দিরে জমা পড়া প্রণামী। মন্দিরে গেলে অনেকেই প্রণামী হিসবে কিছু দান করে আসেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা হয় এক-দু টাকার কয়েন। যদিও অনেকে এর থেকে বেশি টাকাও দান করেন। তবে বেশিরভাগের প্রবনতাই মন্দিরের প্রণামী বাক্সে অন্তত একটা মুদ্রা দান করা। শিরিডির মন্দিরও তার ব্যতিক্রম নয়। এখানেও প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার প্রণামী জমা পড়ে। যার অধিকাংশটাই হয় বিভিন্ন অংকের মূদ্রা। সম্প্রতি সেই বিপুল পরিমাণ কয়েন নিয়েই নাজেহাল অবস্থা মন্দির কর্তৃপক্ষের। কারণ ওই বিশাল অঙ্কের কয়েন আর জমা নিতে চাইছে না কোনও ব্যাঙ্ক।
আরও শুনুন: শাহরুখ থেকে সলমন… তাঁর ইফতার পার্টিতে ডাক পেতে মুখিয়ে থাকেন তারকারা, কে এই বাবা সিদ্দিকি?
শিরিডির সাঁই বাবা মন্দিরের নামে বিভিন্ন রাজ্যে মোট ১৩টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। বর্তমানে সব মিলিয়ে মোট ১১ কোটি টাকা রয়েছে সেই অ্যাকাউন্টগুলিতে। তবে তার অধিকাংশটাই কয়েন হিসেবে জমা। বর্তমানে তাই ব্যাঙ্ক নতুন করে আর কয়েন জমা নিতে চাইছে না। নেপথ্যে কারণ হিসেবে জায়গার অভাবের কথা জানিয়েছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, বহুদিন ধরেই নাকি ওই ব্যাঙ্কগুলির তরফে মন্দির কর্তৃপক্ষকে কয়েন জমা না করার অনুরোধ করা হচ্ছিল। কিন্তু মন্দির কমিটিও অপারগ। প্রতিদিনই যে হারে মন্দিরের প্রণামী বাক্স ভরে ওঠে, তা খালি না করে উপায় কোথায়। তাই বাধ্য হয়েই আর বি আই-য়ের দ্বারস্থ হয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি আরও কিছু নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন তাঁরা। তবে প্রতিদিনই মন্দিরে যেহারে প্রণামী জমা পড়ে, তাতে আদৌ এই সমস্যা মিটবে কিনা, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।