তিনিই দেশের ধনীতম ব্যক্তি। পৃথিবীর সেরার সেরা ধনীদের তালিকাতেও তাঁর নাম থাকে উপরের দিকেই। অথচ সেই মুকেশ আম্বানি কিনা বর্তমানে এক টাকাও বেতন নেন না। আর শুধু এখনই নয়, বিগত দু-বছর ধরেই কোনও বেতন নেননি রিলায়েন্স প্রধান। কী এমন কারণ রয়েছে এর নেপথ্যে? আসুন শুনে নিই।
মুকেশ আম্বানি। শুধুমাত্র দেশের ধনীতম ব্যক্তিই নন, দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যেও অন্যতম তিনি। বিশ্ববিখ্যাত রিলায়েন্স সংস্থার কর্ণধার মুকেশ। পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রেই ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর কাজের পরিধি। অথচ বর্তমানে এই ধনকুবের নাকি সংস্থা থেকে কোনও বেতন নেন না। বিগত বছর দুই ধরেই বেতন হিসেবে একটি টাকাও নাকি নেননি তিনি।
আরও শুনুন: পড়াশোনায় পিএইচডি, অথচ চালাচ্ছেন অটো, যুবকের জীবনের গল্প শুনে হতবাক যাত্রীরা
অনেকেরই মনে হতে পারে, তিনিই তো সংস্থার কর্ণধার। সংস্থার লভ্যাংশ তাঁরই প্রাপ্য। তাহলে তাঁর বেতন নেওয়া বা না নেওয়ার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে? আসলে নিয়ম বলছে তিনিও রিলায়েন্সের একজন বেতনভুক কর্মী। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং চেয়ারম্যান এই দুটি পদের দায়িত্বই মুকেশ সামলান। তাই নির্দিষ্ট বেতন তাঁরও প্রাপ্য। ২০২০ সাল পর্যন্ত তাঁর বার্ষিক বেতন ছিল ১৫ কোটি টাকা। যা পরবর্তী কালে আরও বৃদ্ধি পাওয়ার কথা। কিন্তু ২০২১ সাল থেকে নিজের বেতন সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করে দেন তিনি। পরের অর্থবর্ষ অর্থাৎ ২০২২ সালেও সেই ধারায় বজায় রাখেন তিনি।
আরও শুনুন: যেন উলটপুরাণ! সনাতন ধর্ম রক্ষায় ‘বেদ বিদ্যালয়ে’ জোর কংগ্রেসেরই
কিন্তু হঠাৎ নিজের প্রাপ্য নেওয়া কেন বন্ধ করলেন তিনি? উত্তরে রিলায়েন্স প্রধান যা জানিয়েছেন তা বোধহয় তাঁর পক্ষেই ভাবা সম্ভব। আসলে ২০২০ সালে শুরু হওয়া বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর জেরেই এমন সিদ্ধান্ত নেন মুকেশ আম্বানি। করোনার ফলে দেশীয় অর্থনীতি ব্যাপক ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। যা দেখার পর মুকেশ সিদ্ধান্ত নেন বেতন হিসেবে এই বিপুল পরিমাণ টাকা তিনি নেবেন না। একইভাবে ২০২২ সালেও সম্পূর্ণ ভাবে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হতে পারেনি। তাই ওই বছরের নিজের সিদ্ধান্তে কার্যত অটল থাকেন রিলায়েন্স প্রধান। শুধু তাই নয়, করোনা দুর্গতের সাহায্যের জন্যও যথেষ্ট দান করেছেন তিনি। বিভিন্ন ভাবে করোনার ত্রাণকাজের শরিক হয়েছিল তাঁর সংস্থা। তবে বেতন না নেওয়ার সিদ্ধান্ত কেবল মুকেশ আম্বানি নিজেই নিয়েছেন। তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্য, বিশষত যাঁরা সংস্থার প্রশাসনিক দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের কারও বেতন বন্ধ হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে করোনার সময়েও তা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে খবর। অন্যান্যদের উপর নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেননি তিনি। তবে দেশের কথা ভেবে এই শিল্পপতি যে পদক্ষেপ করেছেন, তার জন্য তাঁকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলেই।