বছরখানেক আগেই বয়সের কাঁটা পেরিয়েছে ১০০। কিন্তু তাতে কী! স্বপ্নপূরণের ক্ষেত্রে বয়স যে কোনও বাধাই নয়, তা ফের প্রমাণ করে দিয়েছেন এক বৃদ্ধা। এই বয়সে পৌঁছেও সরকারি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন তিনি। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর দেখে রীতিমতো অবাক সরকারি আধিকারিকরা। কার কথা বলছি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
জ্ঞান অর্জনের পথে বয়স কোনও বাধা নয়। নিজের জীবনে এ কথাকেই অক্ষরে অক্ষরে সত্যি করে তুলেছেন ১০৮ বছর বয়সি এই মহিলা। সকলকে তাক লাগিয়ে এক সরকারি পরীক্ষায় ১০০ র মধ্যে ৯৭ পেয়েছেন তিনি। যা বাকি পরীক্ষার্থীদের তুলনায় অনেকটাই বেশি।
আরও শুনুন: চাকরি না করেও কোটিপতি! চমক লাগায় এই মহিলা ইউটিউবারদের সম্পত্তির পরিমাণ
কথা বলছি, তামিলনাড়ুর কমলকান্নি সম্পর্কে। তাঁর বর্তমান বয়স ১০৮ বছর। ছোটবেলায় পরিবারের সঙ্গে পাশের রাজ্য কেরলে চলে যেতে হয় তাঁকে। আর্থিক অনটনের জেরে ছোট থেকেই চাষের কাজ করতে হত। পড়াশোনা করার সুযোগ হয়েছিল দ্বিতীয় শ্রেণি অবধি। কিন্তু মনের ইচ্ছা ছিল প্রবল। এরপর জীবন নদীর জল বয়েছে বহুদূর। তবু খাতায় কলমে শিক্ষা অর্জনের সুযোগ পাননি সেভাবে। কিন্তু ওই যে কথায় আছে, কোনও কিছু মন থেকে চাইলে তা অবশ্যই সত্যি হয়। এই মহিলার ক্ষেত্রেও যেন তেমনটাই হয়েছে। আসলে শিক্ষার দিক দিয়ে ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলি অপেক্ষা অনেকটাই এগিয়ে কেরল। সেখানকার প্রায় ৯৬ শতাংশ মানুষই স্বাক্ষর। কিছুদিন আগে সে রাজ্যের সরকার শিক্ষার হার আরও বাড়ানোর জন্য নতুন একটি পদক্ষেপ নেয়। যেখানে রাজ্যের যত নিরক্ষর প্রবীণ আছেন, তাঁদের স্বাক্ষর করে তোলার পণ নেয় সরকার। এমন কর্মসূচির কথা জানতে পেরেই উৎসাহী হয়ে ওঠেন কমলকান্নি। বয়স ১০৮ হলে কী হবে, তাঁর শরীরে বয়সের এতটুকু ছাপ বোঝা দায়। দিব্যি হাঁটতে চলতে কিংবা শুনতে পারেন এই বৃদ্ধা। তাঁর ইচ্ছামতো সরকারি প্রকল্পে তাঁর নাম নথিভুক্ত করা হয়। প্রকল্পের শেষে মূল্যায়নের ব্যবস্থাও ছিল। সেখানেই দেখা যায়, ১০০-র মধ্যে ৯৭ নম্বর পেয়েছেন কমলকান্নি। তাঁর সঙ্গে আরও যারা সেই পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তাঁদের কারও নাম্বারই তাঁর ধারে কাছে ছিল না।
আরও শুনুন: কেউ যুদ্ধ করেছেন, কেউ সামলেছেন সিংহাসন… ভারতীয় মুদ্রায় কুর্নিশ জানানো হয়েছে যে নারীদের
বৃদ্ধার দুই নাতির দাবি, বরাবরই পড়াশোনা করতে ভালোবাসতেন তাঁদের ঠাকুমা। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সবসময় পড়াশোনা করার জন্য উৎসাহ দিতেন। তাই তাঁর এহেন সাফল্যে বেজায় আনন্দ পেয়েছেন সকলেই। অন্যদিকে তাঁর এই কীর্তিতে খুশি হয়েছেন সরকারী আধিকারিকরাও। প্রথমত মহিলা এই বয়সে এসেও পড়াশোনা করতে আগ্রহী হয়েছেন দেখেই অবাক হয়েছিলেন তাঁরা। উপরন্তু পরীক্ষার ফলাফলেও তিনি এভাবে তাক লাগিয়ে দেবেন তা ভাবতেও পারেননি অনেকেই। এর জন্য সরকারের তরফে বিশেষ সম্মানও প্রদান করা হয়েছে ওই বৃদ্ধাকে।