অন্তর্বাস তো পরেনই না। কখনও সখনও ঊর্ধাঙ্গে সেরকম কোনও পোশাকও পরেন না। তবে এই অবস্থায় প্রকাশ্যে ঘোরাঘুরি করতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠা নেই তরুণীর। সাহসী সিদ্ধান্ত, সনেহ নেই। তবে ঠিক কী উপায়ে আর কেনই-বা এমন সিদ্ধান্ত নিলেন তরুণী? আসুন শুনে নিই।
নারীরা প্রায়শই অভিযোগ করেন যে, পুরুষের দৃষ্টি তাঁদের স্তনের চারপাশেই ঘোরাফেরা করে। এ অভিযোগ অবশ্য মিথ্যে নয়। নিউজিল্যান্ডের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা তথ্য দিয়ে হাতে-নাতে প্রমাণ করে দিয়েছিলেন যে, অন্তত ৪৭ শতাংশ পুরুষ প্রথম দর্শনে নারীশরীরের স্তনের দিকেই তাকায়। পুরুষের দৃষ্টি অবশ্য নারীর কোমর এবং নিতম্বের প্রতিও যায়। তবে স্তনের দিকে তাকানোর প্রবণতাই বেশি। এই সব তথ্য আছে বটে, তবে কুণ্ঠাহীন হয়েই এক তরুণী অন্তর্বাস ছাড়া প্রকাশ্যে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এমনকী কখনও ঊর্ধাঙ্গে কোনও পোশাকও পরেন না।
আরও শুনুন: ৬ ঘণ্টার রেকর্ড যৌনতা পর্ন তারকার, নীল দুনিয়ায় ভাল পারফরমেন্সে মেলে পুরস্কারও
সম্প্রতি এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে নিজের এই সিদ্ধান্তের বিশদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। এমনকী তাঁর বেশ কয়েকটি ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ঊর্ধাঙ্গে সামান্য আবরণ ছাড়া তিনি তেমন কোনও পোশাকই পরেননি। এ নিয়ে অনেকেই অবাক হতে পারেন। এই সময়ে অনেক তরুণীই সোচ্চার হন এই বিশ্বাসে যে, শরীরের স্বাধীনতা সম্পূর্ণ নিজস্ব। আর তাই কী পোশাক পরা হবে বা হবে না, তা নির্বাচনেরও স্বাধীনতা ব্যক্তির উপরই বর্তায়। কিছুদিন আগেই এই তরুণী জানিয়েছিলেন যে, বারটেন্ডার হিসাবে কাজ করলেও তিনি কখনোই অন্তর্বাস পরেন না। তাতে পুরুষরা তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকলেও, তাঁর কিছু যায় আসে না। বরং এর দরুন অন্য সহকর্মীদের থেকে তিনি কিঞ্চিৎ বেশি বকশিশই পান। তবে, স্টেফানি জার্মিনো নামে এই বছর ২৯-এর তরুণী আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি যে এমনি এমনি অন্তর্বাস পরেন না বা ঊর্ধাঙ্গে পোশাক ছাড়াই প্রকাশ্যে আসেন, তা কিন্তু নয়। আসলে নিজের শরীর থেকে স্তনযুগলকে বিদায় দিয়েছেন তিনি।
আরও শুনুন: অন্তর্বাস খুলে ফেলেই লক্ষ্মীলাভ, বারে সহকর্মীদের থেকে বেশি বকশিশ আদায় তরুণীর
প্রশ্ন উঠতে পারে যে, কেন তিনি এমন নির্মম সিদ্ধান্তে পৌঁছলেন? শরীর থেকে স্তন বাদ দেওয়া তো সহজ কথা নয়। শুধুমাত্র পোশাকের সিদ্ধান্ত উদযাপন করার জন্যই কি স্টেফানির এই পদক্ষেপ! তিনি বলছেন, মোটেও না। আসলে ছোট থেকেই তিনি জানতেনযে, তাঁর স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনা আছে। আর তাই স্তনযুগলের উপর কোনোদিনই তাঁর সেরকম মোহ ছিল না। এরপর পরিণত বয়সে গিয়ে জানতে পারেন, BRCA1 জিনের অভিযোজনের দরুন সেই সম্ভাবনা আরও জোরদার হয়েছে। এরপর সিদ্ধান্ত নিতে আর দ্বিধা করেননি তিনি। শরীর থেকে দুটি স্তন বাদ দেওয়ারই কথা ভাবেন। এবং নির্মোহ হয়ে সেই কাজটি করেও ফেলেন। তবে এই তরুণীর সাহসী পদক্ষেপ এখানেই শেষ হয়নি। অনেকেই তাঁকে স্তন প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন। কিন্তু তিনি তাতে রাজি হন না। বিপুল খরচ তার প্রধান কারণ। তা ছাড়া, স্তন ছাড়াও যে নারী থাকতে পারেন, নিজের এই সিদ্ধান্তেই স্থির ছিলেন তিনি। অতএম কৃত্রিম ভাবে স্তন গঠনের দিকে আর ঝোঁকেননি।
আরও শুনুন: ভারতীয় ‘কামসূত্র’ দিল খোঁজ, যৌনতৃপ্তির নতুন উপায় পেয়ে বেজায় খুশি ভিনদেশি মডেল
নিজের এই জীবনকথা এখন সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চান তরুণী। তিনি জানান, অনেকেই তাঁর এই রূপ থেকে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। এমনকী মহিলারাও তাঁর চেহারা নিয়ে নানা পরামর্শ দিয়েছেন কখনও বা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তিনি সে সবে বিচলিত হননি। তরুণীর বক্তব্য, এখনও সমাজে চেহারা দেখেই মানুষের বিচার হয়। নারীর ক্ষেত্রে দুর্ভাগ্যজনক হলেও তা সত্যি। শারীরিক বৈশিষ্টকেই সবার উপরে রাখা হয়। স্টেফানির বার্তা আসলে এর বিরুদ্ধেই। যা অসুস্থতার কারণ, তাকে বিদায় জানানোই ভাল। তাতে সৌন্দর্যের হানি হয় না। কেননা সৌন্দর্যের ধারণাও অনেকটাই বেঁধে দেওয়া। ঊর্ধাঙ্গের পোশাক ছাড়াই প্রকাশ্যে এসে এই বার্তাটিই সোচ্চারে জানাতে চান এই তরুণী।