হিন্দু বাড়ির সন্তান। অথচ বাবা-মা কে ‘আম্মি-আব্বু’ বলে সম্বোধন করছে খুদে। সন্তানের এমন আচরণে রীতিমতো অবাক তার পরিবারের সদস্যরা। খোঁজ করতে জানা গেল, এমনটা নাকি সে বই পড়ে শিখেছে। তাই তড়িঘড়ি বই বদলানোর দাবিতে প্রশাসনের দ্বারস্থ তার বাবা-মা। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন শুনে নিই।
শিশুমন সরল। তারা চারপাশে যা দেখে সেখান থেকেই শেখে। তেমনই এক খুদে বই পড়ে শিখেছিল বাবা-মায়ের প্রতিশব্দ ‘আম্মি-আব্বু’। নতুন শব্দ শিখে বাড়িতে তা প্রয়োগও করে সে। কিন্তু তাতেই বাধে বিপত্তি। বেজায় চটে পড়ার বইটাই বাতিল করার দাবি তোলে তার হিন্দু অভিভাবক।
আরও শুনুন: সন্তান নেই, ছিল তার ‘শুক্রাণু’, নাতনিকে পৃথিবীতে এনে ঠাকুমা হলেন ‘মা’
ঘটনাটি দেরাদুনের। সেখানকার বাসিন্দা মণীশ মিত্তল সম্প্রতি এক অদ্ভুত দাবি নিয়ে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্ত হয়েছেন। অভিযোগ, স্কুলের পাঠ্যবই পড়ে ‘কুশিক্ষা’ পাচ্ছে তাঁর সন্তান। এমনকি এভাবে নাকি ধর্মবিরধী হয়ে যেতে পারে তাঁর সন্তান। তাই অবিলম্বে সেই বই বাতিল করার দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন তিনি।
তা কী এমন শেখাচ্ছে পাঠ্যবই?
বলা বাহুল্য, পাঠ্য বইয়ে স্রেফ উর্দু প্রতিশব্দ লেখা আছে বলেই এমন অভিযোগ এনেছেন তিনি। মণীশের বয়ান অনুযায়ী, কিছুদিন আগে তাঁর বছর সাতেকের সন্তান তাঁকে ‘আব্বু’ বলে সম্বোধন করেছে। একইসঙ্গে তাঁর স্ত্রীকেও ‘আম্মি’ বলে ডেকেছে ওই খুদে। আর এতেই বেজায় চটেছেন তিনি। ছেলেকে প্রশ্ন করায়, সে তার ইংরেজি পাঠ্যবই এনে দেখিয়ে দেয়, সেখানেই লেখা রয়েছে বাবা-মায়ের এই দুই প্রতিশব্দ। যা দেখার পর তড়িঘড়ি স্কুলে হাজির হন মণীশ। তাঁর সাফ দাবি, উর্দু বইতে বাবা-মায়ের প্রতিশব্দ হিসেবে আম্মি আব্বু লেখা যেতেই পারে। কিন্তু ইংরেজি বইতে এমনটা কেন থাকবে? এর মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে ভুল সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ছে। তাই তা অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন মণীশ। এমনকি একে ধর্মবিরোধি কার্যালাপ বলেই চীহ্নিত করেছেন তিনি। ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে জেলা শাসকের কাছে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন তিনি।
আরও শুনুন: অন্তর্বাস খুলে ফেলেই লক্ষ্মীলাভ, বারে সহকর্মীদের থেকে বেশি বকশিশ আদায় তরুণীর
অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং জেলা শাসকও। শিক্ষা দপ্তরের কাছে ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছেন তিনি। আসলে, যে পাঠ্য বই ঘিরে এই বিতর্ক, তা সারা দেশের বিভিন্ন স্কুলেই ব্যবহৃত হয়। এবং গোটা বই জুড়েই যে এমনটা লেখা আছে তা নয়। নির্দিষ্ট একটি গল্পে এই উর্দু প্রতিশব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু মণীশের দাবি, এভাবেই নাকি অপসংস্কৃতির প্রচার হচ্ছে। তাই অবিলম্বে স্কুলগুলিতে এই পাঠ্যবই বন্ধ করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।