কোনও প্রমাণ ছাড়া মুসলিম রমণীর চারিত্রিক শুদ্ধতা নিয়ে সন্দেহ করা বা প্রশ্ন তোলা কাম্য নয়। স্ত্রীর বিরুদ্ধে তোলা স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে এমন কথাই শোনাল পাকিস্তানের আদালত। কেন সতীত্ব নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন ওই ব্যক্তি? আসুন শেনে নিই সেই ঘটনা।
বিচ্ছেদের মামলায় স্ত্রীর চরিত্র নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন এক ব্যক্তি। আর সেই প্রেক্ষিতেই, পাকিস্তানের ফেডারেল শরিয়ত কোর্ট সাফ জানিয়ে দিল যে, বিনা প্রমাণে কোনও মুসলিম মহিলারই চারিত্রিক শুদ্ধতা বা সতীত্ব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার কোনও কারণ নেই। কেননা ‘এল এহসান’ ধারণা অনুযায়ী প্রত্যেক মুসলিম মহিলাই চরিত্রগত ভাবে শুদ্ধ। এবং এই মত কোনও পুরুষকে মুসলিম মহিলাদের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করতে নিষেধই করে।
আরও শুনুন: তাজমহল, কুতুবমিনার ভেঙে হোক বিশ্বসেরা মন্দির, খোদ প্রধানমন্ত্রীর কাছেই আরজি বিজেপি বিধায়কের
এই প্রসঙ্গের সূত্রপাত একটি বিচ্ছেদের মামলাকে ঘিরে। পাক যুবতী সায়রা রউফের সঙ্গে তাঁর প্রাক্তন স্বামীর আসাদ তাহিরের বিচ্ছেদ হয় ২০১৭ সালে। কিন্তু তাঁদের দুই সন্তানের দেখভালের দায়িত্ব কে পাবেন, তা নিয়ে জল গড়ায় আদালতে। এই পর্বেই আসাদ তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী-র চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। যার পালটা হিসাবে স্বামীর বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল কেস দায়ের করেন ওই মহিলা। যদিও জেলা-দায়রা আদালতের বিচারক সেই অভিযোগকে গুরুত্ব দেননি বলেই অভিযোগ মহিলার। ফলত জেলা-দায়রা আদালতের রায়ে অখুশি হয়ে তিনি দ্বারস্থ হন ফেডারেল শরিয়া কোর্টের। সেখানে এই মামলা চলাকালীন আদালত পর্যবেক্ষণে জানায়, সতীত্ব বা চারিত্রিক শুদ্ধতা এক বিশেষ ধারণা। তা যে কোনও নারীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। একজন অবিবাহিতের ক্ষেত্রেও যেমন তা সত্যি, তেমনই তা যথার্থ দাম্পত্যের ক্ষেত্রেও। যদি দাম্পত্যের ধারণায় কেউ বিশ্বস্ত থাকেন, তাহলে সতীত্ব বা চারিত্রিক শুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। আদালতের মতে, ‘আল এহসান’-এর ধারণা এই কথাই জানায়, যে, প্রত্যেক মুসলিম মহিলাকেই চারিত্রিক ভাবে শুদ্ধ হিসাবেই গণ্য করা হবে। যদি না হাতে নির্দিষ্ট কোনও প্রমাণ থাকে, তাহলে কোনও পুরুষেরই কোনও মুসলিম নারীর চারিত্রিক শুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত নয়।
আরও শুনুন: অস্ত্র হাতে ধর্মীয় মিছিল কি বন্ধ করা যায়! এমন আবেদন পেয়ে কী জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট?
মহিলার প্রাক্তন স্বামী এর মধ্যেই তাঁর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। আদালত তাঁদের মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিরই নির্দেশ দিয়েছে।