নিজে থেকে মূত্রত্যাগ করতে পারতেন না এক তরুণী। টানা ১৪ মাস ধরে এমন ভয়ঙ্কর শারীরিক অবস্থা নিয়েই কাটাতে হয়েছে তাঁকে। তবে জন্ম থেকেই যে এই সমস্যা তাঁর শরীরে ছিল এমনটা নয়। বরং একেবারেই সুস্থ স্বাভাবিক ছিলেন তিনি। হঠাৎ কী এমন হয়েছিল তাঁর? যার জন্য এতগুলো দিন মূত্রত্যাগ করতে পারেননি তিনি! আসুন শুনে নিই।
দিব্যি সুস্থ ছিলেন তরুণী। একদিন হঠাৎ মূত্রত্যাগ করতে সমস্যা অনুভব করেন তিনি। শুধু সমস্যা বললে ভুল হবে, অনেক চেষ্টা করেও সেদিন মূত্রত্যাগ করতে পারেননি তিনি। তড়িঘড়ি ছোটেন ডাক্তারের কাছে। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন অদ্ভুত এক রোগের কথা। যার জেরে তিনি নিজে থেকে মূত্রত্যাগের ক্ষমতা হারিয়েছেন।
আরও শুনুন: মেয়েদের নখের আঁচড়ে অপ্রস্তুত বডিগার্ড, তড়িঘড়ি কী ব্যবস্থা নেন শাহরুখ?
কথা বলছি এল অ্যাডমসের সম্পর্কে। বছর ৩০-র এই মার্কিন মহিলা এক বিরল রোগের শিকার হয়েছিলেন। যদিও সঠিক ভাবে সেই রোগ ধরা পড়তে বেশ কিছুদিন সময় লাগে। আর সেই সময়টাতে ভয়ঙ্কর কষ্ট ভোগ করতে হয় অ্যাডমসকে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর সকলেরই মূত্রত্যাগের অভ্যাস থাকে। অ্যাডমসও তার ব্যতিক্রম ছিলেন না। কিন্তু একদিন সেই অভ্যাসমতো প্রস্রাব করতে গিয়ে ভারী সমস্যায় পড়েন তিনি। অনেক চেষ্টা করেও সেদিন কিছুতেই মূত্রত্যাগ করতে পারেননি অ্যাডমস। এদিকে শরীরে অস্বস্তি হচ্ছে। তড়িঘড়ি ছোটেন হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা সব দেখে শুনে তাঁর শরীরে ক্যাথিটার লাগিয়ে দেন। দীর্ঘ ১৪ মাস ওই যন্ত্রের সাহায্যেই মুত্রত্যাগ করতেন তিনি। যার ফলে অফিস কিংবা পার্টিতে যাওয়া প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল তাঁর। হাসাপাতালেও ভর্তীও থাকতে হয়েছিলেন অনেকদিন। অবশেষে এই সমস্যার আসল কারণ ধরা পড়ে।
আরও শুনুন: দ্বীপে বাস দুর্দান্ত অপরাধীদের, তাদের সঙ্গেই একলা জীবন কাটাচ্ছেন মহিলা
অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা জানতে পারেন, তরুণী বিরল ‘ফাউলার সিনড্রোম’-এর শিকার। এই অদ্ভুত রোগের জেরে যে কেউ নিজে থেকে মূত্রত্যাগের ক্ষমতা হারান। একইসঙ্গে মূত্রথলির আকারও বেড়ে যায়। সাধারণ মহিলা থেকে ক্ষেত্রে মূত্র ধারণের ক্ষমতা যেখানে হাফ লিটার, সেখানে অ্যাডমস তাঁর শরীরে ১ লিটার মূত্র ধারণ করতে পারতেন। তাই যথেষ্ট পরিমানে জল খেলেও স্বাভাবিক ভাবে প্রস্রাব করতে পারতেন না তিনি। এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোনও নির্দিষ্ট কারণ নেই। চিকিৎসকদের দাবি ছিল মধ্যবয়সী মহিলারাই মূলত এই রোগের শিকার হন। চিকিৎসাও যে সেই অর্থে আছে এমনটা নয়। জটিল এক নার্ভের অস্ত্রোপচার করলে কিছুটা হলেও সুরাহা হতে পারে। এমনটাই অ্যাডমসকে জানিয়েছিলেন তাঁর চিকিৎসকেরা। অবশেষে সেই পথেই হাঁটেন তিনি। বর্তমানে পুরোপুরি সুস্থ না হলেও আগের তুলনায় অনেকটাই উপশম পেয়েছেন অ্যাডমস। নিজেই নিজের এমন ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে তাঁর আংশিক সুস্থতার কথাও সেখানে প্রকাশ করেছেন তিনি।