মাঝরাতে না ঘুমিয়ে ভিডিও গেম খেলছিল এক খুদে। দেখতে পেয়ে বেজায় চটে যায় তার বাবা। কিন্তু শাস্তি হিসেবে ছেলেকে মারধর করেননি তিনি। বরং আরও বেশি করে ভিডিও গেম খেলার নির্দেশ দেন তাকে। এতটাই বেশি, যে একসময় ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ অবস্থা হয় ওই খুদের। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন শুনে নিই।
সন্তান দোষ করলে অধিকাংশ বাবা-মাই তাকে শাসন করেন। কিছু ক্ষেত্রে কড়া শাস্তির পথও বেছে নেন কেউ কেউ। কিন্তু এই ব্যক্তি যা করেছেন তা শুধুমাত্র শাস্তি বললে ভুল হবে। কারণ শাস্তি হিসেবে মারধর নয়, ছেলেকে ভিডিও গেম খেলিয়েছেন তিনি। ভাবছেন তো, ভিডিও গেম খেলা কখনও শাস্তি হতে পারে? এখানেই আসল ব্যাপারটা লুকিয়ে। আসলে ওই ব্যক্তি টানা ১৭ ঘন্টা ভিডিও গেম খেলতে বাধ্য করেছেন তাঁর ছেলেকে। এতটা সময় ধরে সে না ঘুমোতে পেরেছে, না কিছু খেতে পেরেছে।
আরও শুনুন: রমজানে আগে ছুটি মিলবে মুসলিমদের, বিহার সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ বিজেপির
ঘটনাটি চীনের। সেখানকার শ্যেনজেন শহরের এক বছর ১১-র খুদেকে এমনই কঠিন শাস্তি দিয়েছে তার বাবা। দোষ বলতে মাঝরাতে উঠে ভিডিও গেম খেলছিল সে। আর সেইসময় হাতে নাতে ধরা পড়ে যায় বাবার কাছে। ব্যস আর পালানোর পথ নেই। এমন কিছু হলে সাধারণত মারধর কিংবা কান ধরে দাঁড়ানোর মতো শাস্তি কপালে জোটে। কিন্তু এই খুদের কপালে সে ‘সুখ’ জোটেনি। সুখই বটে, কারণ তাকে যা শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে, তার চেয়ে দু ঘা বেতের বাড়িও ঢের ভালো।
কী ঘটেছে ঠিক?
ঘটনার দিন মাঝরাতে ছেলেকে ভিডিও গেম খেলতে দেখে বেজায় চটে যান ওই চীনা ব্যক্তি। ধরা পড়ার পর বেশ ভালোরকম ভয় পায় ওই খুদেও। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে ছেলেকে মারধর না করে, আরও বেশি করে ভিডিও গেম খেলার নির্দেশ দেন ওই ব্যক্তি। বেশি বলতে অনেকটাই বেশি। টানা ১৭ ঘন্টা ছেলেকে গেম খেলতে বাধ্য করেন তিনি। সেইসময় তার না ছিল কিছু খাওয়ার উপায়, না ছিল ঘুমানোর উপায়। হাজার কাকতি মিনতি সত্ত্বেও এতটুকু ছাড় দেননি তিনি। রাত ১ টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ভিডিও গেম খেলতে হয়েছিল ওই খুদেকে। তারপর গোটা ঘটনাটা মোবাইল বন্দী করেন তিনি। খুদেও নিজের এমন ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা তার কম্পিউটারে লিখে রাখে। সেখানে স্পষ্ট ভাষায় নিজের ভুল স্বীকার করে সে। উল্লেখ করে, এমন ভুল আর হবে না। এবার থেকে নির্দিষ্ট সময় সে ঘুমিয়ে পড়বে। আর ঘুমোতে যাওয়ার আগে কখনই ভিডিও গেমও খেলবে না। তবে ঘটনার ভিডিওটি নেটদুনিয়ায় প্রকাশ করে বেশ গর্ববোধই করেছেন ওই চীনা ব্যক্তি। তাঁর দাবি, এমন অভিনব শাস্তি বেশ কাজে দিয়েছে।
আরও শুনুন: হাত নেই, আছে স্বপ্ন! পা দিয়েই ছবি আঁকেন এই শিল্পী, কুর্নিশ নেটদুনিয়ার
তবে তাঁর এই আচরণ মোটেই ভালোভাবে নেননি নেটিজেনদের একাংশ। অনেকেই এমন শাস্তির তীব্র নিন্দা করেছেন। অনেকে আবার বলেছেন, সন্তানের সঙ্গে এমন ব্যবহার করা একেবারেই উচিত হয়নি ওই ব্যক্তির। বলা বাহুল্য, অনেকেই আজকাল শারীরিক শাস্তির বিরোধিতা করেন। কিন্তু এভাবে শাস্তি দেওয়া যে আরও ভয়ঙ্কর। এমন আচরণের প্রভাব শারীরিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রেই পড়ে, একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই এর তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছে নেটদুনিয়া।