নিজের খাবার জোটে না বললেই চলে। কোনও রকমে আধপেটা খেয়ে দিন কাটান এই মহিলা। এদিকে বাড়িতে রয়েছে ৬টি বিড়াল। তাদের যত্নে এতটুকু খামতি রাখনে না তিনি। নিজে না খেয়ে পোষ্যদের দুবেলা খেতে দেন। পোষ্যদের প্রতি তাঁর এত টান কেন? আসুন শুনে নিই।
পোষ্যরা সন্তানসম। তাই তাদের যত্নে এতটুকু খামতি রাখেন না এই মহিলা। এদিকে তাঁর নিজেরই দুবেলা খাবার জোটে না। তাঁর যা সামর্থ্য, তাতে সারা সপ্তাহে মাত্র একবার ভরপেট খেতে পারেন তিনি। কিন্তু তাতে কী! নিজের খাবার জুটুক বা নাই জুটুক, পোষ্যরা খেতে পেলেই হল।
আরও শুনুন: পালক থেকে সেক্স টয়… যৌন ‘ফ্যান্টাসি’ নিয়ে লিখতে হবে নিবন্ধ, স্কুলে হোমটাস্ক পড়ুয়াদের
কথা বলছি ইয়াসেম কাপতানের। বছর ৪২-এর এই মহিলা উত্তর লন্ডনের বাসিন্দা। বরাবরই বিড়াল পছন্দ করেন ইয়াসেম। তাঁর বাড়িতেও রয়েছে বেশ কয়েকটি বিড়াল। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে যত্ন সহকারে তাদের পালন করেছেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ এক অদ্ভুত সমস্যা নেমে আসে তাঁর জীবনে। বছরখানেক আগে জানতে পারেন, তিনি এক অসুখে আক্রান্ত, ডাক্তারি ভাষায় যার নাম ‘অস্টিওপোরোসিস’। এই রোগের জেরে হাড়ের ভিতরের অংশ ক্ষয়ে যায়। সামান্য অসাবধান হলেই ভেঙে যায় হাত বা পায়ের হাড়। এমন রোগ যার শরীরে বাসা বেঁধেছে, তিনি আর কী করে ভারী কাজ করবেন! ফলত নিজের চাকরিটি হারান ইয়াসেম। একপ্রকার বন্দিদশা শুরু হয় তাঁর জীবনে। এদিকে ঘরে বসে থাকলে তো রোজগার করাও সম্ভব নয়। কিছুদিনের মধ্যেই জমানো সব টাকাই শেষ করে ফেলেন ইয়াসেম। তাও সে দেশের সরকার, শারীরিক ভাবে অক্ষমদের প্রতি মাসে কিছু টাকা দিয়ে সাহায্য করে। কিন্তু সে টাকাই বা কতটুকু! সরকারি তহবিল থেকে ইয়াসেম যা পেতেন তার বেশিরভাগটাই চলে যেত ঘরের ভাড়া মেটাতে। বাকি যেটুকু থাকত, তাই দিয়ে কোনও রকমে দিন কাটানো হয়তো সম্ভব। কিন্তু তিনি তো আর একা নন, বাড়িতে রয়েছে ৬টি পোষ্য বিড়াল। তাদের এতটুকু অযত্ন হতে দেবেন না তিনি। তাদের দুবেলা খাওয়ানো থেকে আরম্ভ করে বিভিন্ন ওষুধের খরচ, সব মিলিয়ে খরচ সামলাতে নাজেহাল হয়ে পড়েন ইয়াসেম।
আরও শুনুন: এবার বেদ পড়ার সুযোগ পাবেন মুসলিমরাও, নয়া প্রকল্প সংঘের
তাই ঠিক করেন নিজে খাবারের খরচ বাঁচিয়ে পোষ্যদের খাবার জোগাড় করবেন তিনি। বাস্তবে তেমনটা করতে শুরুও করেন। সারা সপ্তাহে মাত্র একবার ভরপেট খাবার খান তিনি। বাকি দিনগুলো কোনওরকমে জল খেয়েই কাটিয়ে দেন। যদিও এতে কোনও আক্ষেপ নেই তাঁর। তিনি মনে করেন এই বিড়ালগুলো তাঁর সন্তান। তাই তাদের জন্য সব কিছুই করতে পারেন তিনি। অন্যদিকে একইভাবে দিন কাটান তাঁর স্বামীও। তিনিও শারীরিক ভাবে অক্ষম। তাই দুজনে সরকারের তরফ থেকে যা সাহায্য পান তাই দিয়ে সংসার চালান। যদিও সেই সংসার খরচে তাঁদের নিজেদের বরাদ্দ নামমাত্র। বেশিরভাগটাই খরচ করেন পোষ্যদের জন্য। আর এভাবেই খুশি তাঁরা।