অস্কারজয়ী ছবিতে তাঁদের দেখেছেন বিশ্বজোড়া মানুষ। কিন্তু সেই ছবি এখনও দেখা হয়নি তাঁদেরই। ছবির আগে যেমন হাতির দেখাশোনা করেই জীবন কেটে যেত তাঁদের, এখনও কাটছে তেমনটাই। হ্যাঁ, বলছি ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’-এর দুই চরিত্রের কথা। এই ছবির বিপুল সাফল্যের পর কেমন আছেন ছবির নায়ক বোম্মান? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’-এর অস্কার জয়ের পর রাতারাতি তাঁরা উঠে এসেছেন খবরের শিরোনামে। তাঁরা এই কাহিনির নায়ক কে বোম্মান আর তাঁর স্ত্রী বেলি। অনাথ এক হস্তিশাবক রঘুর কাহিনি ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’। তামিল দম্পতি বোম্মান আর বেলি যাঁকে উদ্ধার করে সন্তানস্নেহে বড় করে তোলেন। মানুষ ও পশুর এই সম্পর্কের কাহিনিই ঝুলিতে পুরেছে ‘অস্কার’। ডকুমেন্টারি শর্ট ফিল্মের বিভাগে সেরার খেতাব জিতে নিয়েছে এই ছবি। কিন্তু এই ছবির পরে কতটা বদলে গিয়েছে ওই মাহুত দম্পতির রোজকার জীবন?
আরও শুনুন: মোদিকেই অস্কারজয়ী ‘RRR’-এর পরিচালক বলে দাবি করবেন না যেন! বিজেপিকে খোঁচা বিরোধী নেতার
বর্তমানে দুটি নিখোঁজ হস্তিশাবকের সন্ধানে হন্যে হয়ে জঙ্গলে ঘুরছেন বোম্মান। না, ছবির সেই দুই হাতির কথা হচ্ছে না। সম্প্রতি ওই সংরক্ষিত অরণ্যেই দুটি হস্তিশাবকের খোঁজ মিলছে না বলে খবর। আর তাদের উদ্ধার করার জন্যেই মরিয়া হয়ে ঘুরছেন বোম্মান। এদিকে সম্প্রতি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়া একটি হাতির শাবকটির সব দায়িত্বও এসে পড়েছে তাঁদের উপরেই। অস্কারের আলো ঝলমলে মঞ্চ, সাফল্যের ভিড়, এসব ছুঁতে পারেনি তাঁদের। সেই আলোর বৃত্ত থেকে অনেক দূরে দাঁড়িয়ে নীরবেই নিজেদের কাজ করে যাচ্ছেন বোম্মান আর বেলি।
আরও শুনুন: ‘নাটু নাটু’ কি শুধু নাচের গান! অস্কার জয়ের পর আসল অর্থ খুঁজছে দেশবাসী
নীলগিরির মুদুমালাই টাইগার রিজার্ভের থেপ্পাকাডু ক্যাম্পের পশুচিকিৎসা কেন্দ্রে হাতিদের দেখাশোনা করেই দিন কাটে এই দম্পতির। আজ নয়, দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে মাহুতের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বোম্মান। তবে এই ছবির খাতিরেই প্রথমবার বোম্মান ও বেলি একসঙ্গে কোনও হস্তিশাবকের যত্নআত্তির দায়িত্বে ছিলেন। ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’-এর অস্কার জয়ের পর পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ওই ক্যাম্প। রঘু আর বমিকে এক ঝলক দেখার জন্য সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু ওই হাতিটিকে দেখাশোনার দায়িত্বে এখন আর বোম্মান বা বেলি কেউই নেই। এক বছর আগেই অন্য মাহুতের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে রঘু আর বমিকে। তাতে স্বাভাবিকভাবেই কষ্ট হয়েছিল এই মাহুত দম্পতির। কিন্তু এরপরে তাঁদের কাছে যে হস্তিশাবক এসেছে, তার প্রতিই এখন সব মনোযোগ দিয়েছেন তাঁরা। এখনও পুরো তথ্যচিত্রটি দেখার সুযোগও পাননি এই দম্পতি। তবে ছবিটি যাঁরা বানিয়েছেন, তাঁদের চেষ্টা যে এত বড় সাফল্য পেয়েছে, এতেই খুশি বোম্মান আর বেলি।