হনুমান মন্দিরের কাছে মাংসের পদ পৌঁছে দিতে আপত্তি। তার জেরেই নাকি চাকরি হারিয়েছেন এক খাবার ডেলিভারি সংস্থার কর্মী। যদিও ওই কর্মীর এহেন আপত্তি শুনে বেজায় খুশি মন্দির কর্তৃপক্ষ। মন্দিরের তরফে রীতিমতো সংবর্ধনা জানানো হয়েছে ওই কর্মীকে। কোথায় ঘটেছে এমন কাণ্ড? আসুন শুনে নিই।
যেখানে হনুমানের প্রসাদ পাওয়া যায়, সেখানে মাংস ডেলিভারি হবে না। গ্রাহককে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন খাবার ডেলিভারি সংস্থার কর্মী। কিন্তু এই আপত্তির জেরে তাঁকে বরখাস্ত করেছে খাবার ডেলিভারি সংস্থা, এমনটাই দাবি ওই ডেলিভারি কর্মীর।
আরও শুনুন: খোঁজ নেয় না সন্তানেরা, দেড় কোটি টাকার সম্পত্তি সরকারকেই দান করলেন যোগীরাজ্যের বৃদ্ধ
বর্তমানে দেশে ব্যবসা বিছিয়েছে একাধিক ফুড ডেলিভারি অ্যাপ। যাদের দৌলতে বাড়িতে বসেই চটজলদি পছন্দসই খাবার হাতে পাওয়া যায়। ব্যস্ত জীবনে খানিক সুবিধা মেলার ফলে ক্রমশই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে খাবার ডেলিভারি করা এই সংস্থাগুলি। সেরকমই খাবার ডেলিভারি অ্যাপ থেকে এক ব্যক্তি অর্ডার করেছিলেন পাঁঠার মাংস আর নান। নির্দিষ্ট সময়ে খাবার পৌঁছে যাবে এমনটা জানিয়েও দিয়েছিল ডেলিভারি অ্যাপ। কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ কেটে গেলেও খাবার নিয়ে কারও দেখা পাননি তিনি। প্রথমে ভেবেছিলেন হয়তো ওই ডেলিভারি অ্যাপের গণ্ডগোল। কিন্তু খাবার না আসার কারণটা পরিষ্কার হয় ডেলিভারির দায়িত্বে থাকা কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করার পর। তাঁর আপত্তির জেরেই নাকি এতক্ষণ খাবার ডেলিভারি হয়নি।
কিন্তু কেন?
আসলে ওই ব্যক্তি খাবার অর্ডার করেছিলেন দিল্লির এক বিখ্যাত হনুমান মন্দিরের চত্বর থেকে। যেখান থেকে পুজোর ডালা কেনা হয়, সেরকম এক দোকানে বসেই অর্ডারটা দিয়েছিলেন তিনি। আর তাতেই বেজায় আপত্তি ওই ডেলিভারি কর্মীর। যেখান থেকে হনুমানের প্রসাদ কেনা হয়, সেখানে মাংসের ডেলিভারি! কভি নেহি। এমনটাই সাফ জানিয়েছিলেন ওই কর্মী। তাই অ্যাপের তরফে কোনও সমস্যা না থাকলেও, ডেলিভারি কর্মীর আপত্তির জেরেই খাবার পাননি তিনি। বেশ কিছুক্ষণ ওই ডেলিভারি কর্মীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন ওই ব্যক্তি। সংস্থার তরফেও তাঁকে কার্যত নির্দেশ দেওয়া হয় খাবার ডেলিভারি করে আসার জন্য। কিন্তু কিছুতেই কিছু লাভ হয়নি। নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন ওই ডেলিভারি কর্মী। তবে এই কাজ যে সংস্থার নিয়মবিরুদ্ধ, সে কথা ভালোমতোই জানতেন তিনি। তাই একপ্রকার ধরেই নিয়েছিলেন সংস্থা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে তাঁকে। এরপরই নিজের কীর্তির কথা হনুমান মন্দির কতৃপক্ষের কাছে গিয়ে জানান ওই কর্মী। তাঁর কথা শুনে অবশ্য বেজায় খুশি মন্দির কমিটি। কর্তৃপক্ষের মতে, ওই কর্মী প্রকৃত হিন্দুর মতো কাজ করেছেন। তাই ওই ব্যক্তিকে রীতিমতো সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে মন্দিরের তরফে।
আরও শুনুন: প্রাক্তন প্রেমিকার নামেই সদ্যোজাত কন্যার নাম রাখতে চান ব্যক্তি, চটে লাল স্ত্রী
তবে ডেলিভারি সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এই কাজের জেরে আদতে চাকরি যায়নি ওই যুবকের। বরং ব্যাপারটাকে গুরুত্ব দিয়েই দেখেছে ওই সংস্থা। একদিকে গ্রাহক, অন্যদিকে ডেলিভারি কর্মী, কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগুক, এমনটা চায় না ওই সংস্থা। তাই ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে আরও সচেতন হবেন তাঁরা, এমনটাই জানানো হয়েছে সংস্থার তরফে।