সম্প্রতি ‘রাহুলকে কি ভারতের টেস্ট দলে রাখা উচিত?’ এই প্রশ্নটি করা হয়েছিল এমন একজনকে যে একদম নিরপেক্ষ। প্রশ্নটি করা হয়েছিল একটি চ্যাটবট-কে যার নাম চ্যাট-জিপিটি। তার সাফ উত্তর, যে তার কোনও নির্দিষ্ট খেলোয়াড় বা টিমের ব্যাপারে ব্যাক্তিগত কোনও মতামত নেই। তবে যুক্তিগত ভাবে, সাম্প্রতিক পারফরমেন্স, ফিটনেস অথবা স্কিল বা ক্ষমতা বর্তমান টিমের কোনও কাজে লাগবে কি-না, এর ভিত্তিতেই ঠিক করা উচিত। তাতে ঠক বাছতে গাঁ উজাড় হবে না তো! আলোচনায় শঙ্খ বিশ্বাস।
ভারতীয় ক্রিকেটে এই মুহূর্তের মোটামুটি সব আলোচনার কেন্দ্রে কেএল রাহুল। দিল্লি টেস্টের পর থেকেই তাঁর অফ ফর্ম নিয়ে বিস্তর চর্চা হচ্ছে। অনেকেই আঙুল তুলেছেন নির্বাচকদের দিকে, যে কেন একের পর এক টেস্টে ব্যর্থ হলেও তাঁকে দল থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে না? আবার উলটো পথে হেঁটে অনেকেরই মত, রাহুলের মতো প্রতিভাবান ব্যাটারকে আরও একটু সুযোগ দেওয়া উচিত। তো আপনি কোন দলে? আপনারও কি মত তাঁকে বসানো উচিত না আরও সুযোগ দেওয়া উচিত? এআই বেসড টেকনোলোজিকাল প্ল্যাটফর্ম চ্যাট-জিপিটি কিন্তু তার মতামত দিয়েই দিয়েছে ওই একই প্রশ্নের উত্তরে।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চলতি সিরিজে তিন ইনিংসে কে এল রাহুলের মোট রান মাত্র ৩৮ । বিগত বেশ কয়েকটি সিরিজে তাঁর পারফরমেন্সের গ্রাফ ক্রমশ নিম্নমুখী। আর ঠিক এই কারণেই ক্রিকেটমহলে কেএল রাহুলকে নিয়ে বেশ একটা গুঞ্জন তৈরি হচ্ছে। ফ্যান, প্রাক্তন ক্রিকেটার থেকে শুরু করে বর্তমান ক্রিকেটার, এই ওপেনিং ব্যাটসম্যানের দোলে জায়গা পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার ভেঙ্কটেশ প্রসাদ আর আকাশ চোপড়ার মধ্যে তো এই নিয়ে রীতিমতো বাগযুদ্ধ শুরু হয়ে যায় টুইটারে। আবার ভারতীয় দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা আর কোচ রাহুল দ্রাবিড়েরও নিজস্ব মতামত রয়েছে। তাঁরা এখন খেলোয়াড়ের খারাপ সময়েও তাঁর পাশেই থাকতে চান।
আরও শুনুন: Audio Blog: স্বপ্ন পূরণের দিনকাল, ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটে নতুন ভোর আনল WPL
তবে একটু পরিসংখ্যান ঘাঁটলেই দেখতে পাবেন, খারাপ ছন্দে শুধু একা রাহুল নেই। আরও দুজন খেলোয়াড় আছেন, যাঁরা প্রায় একই ভাবেই অফ ফর্মে আছেন, কিন্তু তাঁদের নিয়ে এত আলোচনা হচ্ছে না। গত তিন বছরে টেস্টে ভারতীয় ক্রিকেটারদের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, রানের গড়ে সবথেকে খারাপ জায়গায় আছেন বিরাট কোহলি! আর তাঁর ঠিক উপরেই রয়েছেন চেতেশ্বর পুজারা। রাহুল কিন্তু সেই তালিকায় এঁদের থেকে ভালো জায়গায়।
সামগ্রিক পরিসংখ্যান বলছে, রাহুল ১১টি টেস্টের ২১টি ইনিংসে ৬৩৬ রান করেছেন ৩০.২৮ গড়ে, পুজারা ২৫টি টেস্টের ৪৭টি ইনিংসে ১৩১২ রান করেছেন ২৯.৮১ গড়ে আর ২০২০ থেকে এখনও পর্যন্ত ২২টি টেস্টে ৩৯টি ইনিংস খেলে বিরাটের রান ৯৯৩। অর্থাৎ গড় ২৬.১৩। ওদিকে রাহুল ২০২১ কিন্তু সালে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইংল্যান্ডে গিয়ে শতরান করেছেন যেখানে কোহলির শেষ শতরান করেছে ২০১৯-এ। প্রায় সাড়ে তিন বছর হয়ে গেল টেস্টে বিরাটের কোনও শতরান নেই। তাহলে কোন প্লেয়ারকে দলে রাখা হবে কাকে রাখা হবে না সেই মাপকাঠিতে ঠিক কী হওয়া উচিত?
সম্প্রতি ‘রাহুলকে কি ভারতের টেস্ট দলে রাখা উচিত?’ এই প্রশ্নটি করা হয়েছিল এমন একজনকে যে একদম নিরপেক্ষ, যার মধ্যে কোনও খেলোয়াড়ের প্রতি পক্ষপাতিত্বও নেই, আবার অন্ধভক্তদের মতো অন্ধ আবেগও নেই। কার কথা বলছি? এই প্রশ্নটি করা হয়েছিল একটি চ্যাটবট-কে যার নাম চ্যাট-জিপিটি। তার সাফ উত্তর, যে তার কোনও নির্দিষ্ট খেলোয়াড় বা টিমের ব্যাপারে ব্যাক্তিগত কোনও মতামত নেই। তবে যুক্তিগত ভাবে, সাম্প্রতিক পারফরমেন্স, ফিটনেস অথবা স্কিল বা ক্ষমতা বর্তমান টিমের কোনও কাজে লাগবে কি-না, এর ভিত্তিতেই ঠিক করা উচিত। যদি রাহুলের সাম্প্রতিক পারফরমেন্স ভালো না হয় এবং দলের কাছে সেই মুহূর্তে তাঁর থেকেও ভালো কোনও খেলোয়াড় থাকেন, তাহলে ম্যানেজমেন্ট পরিবর্তের কথা ভাবতেই পারে। এই মাপকাঠিতে দেখতে গেলে ঠক বাছতে কিন্তু গাঁ উজাড় হওয়ারই দশা হবে।