ফেলে দেওয়া চিপসের প্যাকেট দিয়েই তৈরি হচ্ছে সানগ্লাস। বানাচ্ছে পুনের একটি সংস্থা। ভাবছেন তো এমনটাও কি হওয়া সম্ভব? অসম্ভবকেই সম্ভব করার দায়িত্ব নিয়েছে এই সংস্থা। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
দূষণ-দানবের সঙ্গে আমাদের লড়াই করতে হবে। নইলে মানুষের অস্তিত্বই পড়বে প্রশ্নচিহ্নের মুখে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘনঘটা আমাদের সেই সতর্কবার্তাই দিচ্ছে। আর তাই দূষণ রোধে, বিশেষত প্লাস্টিক দূষণ রোধে অনেকটাই সচেতন হয়েছে মানুষ। প্লাস্টিকের প্যাকেট আজকাল অনেকেই ব্যবহার করেন না। গৃহস্থ আবর্জনা ফেলার সময়ও প্লাস্টিককে, পচনশীল বর্জ্যের থেকে আলাদা করা হচ্ছে। তবে সতর্কতা থাকলেও এখনও অপব্যবহার যে কমেনি তা বলাই যায়। আর তাই রাস্তায় এদিক ওদিক তাকালেই দেখা যায় বিস্কুট বা চিপসের প্লাস্টিকে প্যাকেট পড়ে আছে। সেই ফেলে দেওয়া জিনিসকেই কাজের জিনিস করে তুলছে একটি সংস্থা, ব্যবহার শেষে ফেলে দেওয়া চিপসের প্যাকেট দিয়েই বানাচ্ছে সানগ্লাস।
আরও শুনুন: Audio Blog: কর্মহীনতা কি ক্রমে মহামারীর রূপ নিতে চলেছে বিশ্বে?
সংস্থার নামই ‘উইদআউট’। বাংলায় যার অর্থ হয় ‘ছাড়া’ বা ‘ব্যতীত’। নামের মতো কাজেও ব্যতিক্রমী পুনে শহরের এই সংস্থাটি মূলত সানগ্লাস বানায়। তবে তার উপকরণ একেবারেই সাধারণ নয়। ফেলে দেওয়া চিপসের প্যাকেট দিয়ে সানগ্লাস তৈরি করে ওই সংস্থা। ভাবছেন তো, এ বার কেমন রোদচশমা যা চিপসের প্যাকেট দিয়ে তৈরি হয়েছে! শুনতে অবাক লাগলেও, বাইরে থেকে দেখে এতটুকু বোঝার উপায় নেই এই সানগ্লাসের প্রধান উপকরণ কী। একেবারে সাধারণ রোদচশমার মতোই দেখতে। কাজের ক্ষেত্রেও কোনও পার্থক্য নেই। আসলে উত্তরোত্তর বেড়ে চলা প্লাস্টিক দূষণের কথা ভেবেই এমন পুনর্ব্যবহারের কথা মাথায় আসে ‘উইদআউট’ কর্তৃপক্ষের। কীভাবে ফেলে দেওয়া চিপসের প্যাকেট কাজে লাগানো যায়, সে-কথা ভাবতে গিয়েই এমন অভিনব আবিষ্কার করে ফেলেন তাঁরা। তবে শুধুমাত্র চিপসের প্যাকেট নয়। বেশিরভাগ প্যাকেটজাত দ্রব্যের মোড়ুকই রিসাইকল করেন তাঁরা। আর তারপর বিশেষ পদ্ধতিতে সেগুলো ব্যবহার করেই সুদৃশ্য রোদচশমা তৈরি করেন।
আরও শুনুন: Audio Blog: নৃশংস পরিণতি শ্রদ্ধা-নিকির, সম্পর্কে বিশ্বাসের ভিতই কি নড়িয়ে দিচ্ছে এই ঘটনা?
অন্যদিকে, বিভিন্ন জায়গা থেকে প্লাস্টিক কুড়ানো যাদের প্রধান জীবিকা, সেইসব মানুষরাও স্থায়ী রোজগারের রাস্তা খুঁজে পেয়েছেন এই কোম্পানির দৌলতে। এমনকি যারা তাঁদের প্লাস্টিক প্যাকেট সরবরাহ করেন, তাঁদের ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার দায়িত্বও এই কোম্পানিই সামলায়। সব মিলিয়ে পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে সমাজের একটি স্তরের মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যেতেও যথেষ্ট সাহায্য করছে এই সংস্থা।