তাঁর শেষ ছবি ‘আরআরআর’-এর ক্লাইম্যাক্সে পৌরাণিক রামের বেশেই পর্দায় দেখা দিয়েছেন একালের রাম। এমনকি দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর রাম সীতার মিলনের প্রসঙ্গও এসেছে। তবে কি বিজেপির শ্রীরাম প্রকল্পের পথেই হাঁটছেন পরিচালক রাজামৌলী? প্রশ্নের জবাবে কী বললেন পরিচালক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
নিজের ছবির মধ্যে দিয়ে কি বিজেপি শিবিরের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন দক্ষিণী পরিচালক রাজামৌলী? ‘আরআরআর’ সিনেমার প্রভূত সাফল্যের পর এমনই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হল পরিচালককে। কেবল দেশ নয়, বিশ্ব জুড়েই প্রশংসা কুড়িয়েছে রাজামৌলীর এই ব্লকবাস্টার ছবি। এমনকি গোল্ডেন গ্লোবের মঞ্চেও জায়গা করে নিয়েছে এই ছবির গান। সব মিলিয়ে ‘আরআরআর’-এর জনপ্রিয়তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলার আর জায়গা নেই। কিন্তু এই সিনেমার চিত্রনাট্যের দিকে তাকালে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, ভিএফএক্স-এর কারিকুরি, চোখধাঁধানো সেট, আর অ্যাকশনের ধুমধাড়াক্কার আড়ালে আরও স্তর রয়েছে এই ছবির। ছবির ক্লাইম্যাক্সে পৌরাণিক রামের বেশেই পর্দায় দেখা দিয়েছেন একালের রাম। আর এই প্রেক্ষিতেই এবার বিজেপি-ঘনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়লেন রাজামৌলী। মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে এই প্রশ্নের জবাবে ঠিক কী বললেন খ্যাতনামা পরিচালক?
আরও শুনুন: বৃথা বিচারপতি নাগরত্নর সতর্কবার্তা! টিপু সুলতান নিয়ে মন্তব্য ফের উসকে দিল ঘৃণাভাষণ বিতর্ক
আরআরআর সিনেমায় রামচরণ অভিনীত চরিত্রের নামই রাম, আর তার স্ত্রী সীতার চরিত্রে অভিনয় করেছে আলিয়া ভাট। কেবল নামের মিলই নয়। ছবির ক্লাইম্যাক্সে বনবাসী রামের আদলেই গেরুয়া বসন পরে, পিঠে ধনুর্বাণ নিয়ে শত্রুপক্ষের সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন নায়ক। তাঁর তিরবৃষ্টির সামনেই পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে শত্রুপক্ষ। আর অবশেষে দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর মিলন হয়েছে রাম সীতার। এই পুরো কাহিনির মধ্যেই রামায়ণের অনুষঙ্গ খুঁজে পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। এদিকে রাম ও রামায়ণ, এবং গেরুয়া পোশাক, এই সবকিছুকেই হাতিয়ার করে দেশের রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে নেমেছে বিজেপি। তাই অ্যাকশন ফিল্মের মধ্যে রাজামৌলীর এমন সূত্র ছেড়ে যাওয়া দেখে প্রশ্ন, বিজেপির প্রতি কি এভাবেই প্রচ্ছন্ন সমর্থন জানাতে চাইছেন তিনি? নাকি জাতীয়তাবাদী ধাঁচের ছবি বানানোর জন্য কোনোরকম চাপ রয়েছে তাঁর উপরে?
আরও শুনুন: হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণা করা হোক ভারতকে, হিন্দুত্ববাদীদের সুরেই সুর শিল্পী অনুপ জলোটার
মার্কিন সংবাদমাধ্যমের সামনে অবশ্য এমন সম্ভাবনার কথা একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছেন দক্ষিণী পরিচালক। তাঁর দাবি, সরাসরি এমন কোনও প্রস্তাব কখনোই দেওয়া হয়নি তাঁকে। কোনও অ্যাজেন্ডার উপর ভিত্তি করে কেউ তাঁকে ছবি বানাতে বলেনি বলেই দাবি পরিচালকের। বরং তাঁর ছবি নিয়ে কখনও মুসলিম, কখনও হিন্দু, কখনও অন্য কোনও সম্প্রদায়ের তরফে আপত্তি উঠেছে। তবে রাজামৌলী স্বীকার করে নিয়েছেন, দেশে কোনও বিশেষ ভাবাবেগের ধুয়ো উঠলে ছবিতে তার প্রভাব পড়বেই, কারণ দেশের আমজনতার কাছে পৌঁছতে হয় সব ছবিকেই। যদিও হিন্দুত্ববাদের প্রোপাগান্ডা থেকে তিনি নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে চান বলেই সাফ জানিয়েছেন পরিচালক রাজামৌলী।