স্ত্রী-কে বড় ভালোবাসেন। তাই তাঁকে খুশি করতে বেআইনি কাজ করতেও দুবার ভাবেননি এক ব্যক্তি। পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের সরকারি সিস্টেম হ্যাক করে, তিনি রীতিমতো চিন্তায় ফেলে দিয়েছিলেন প্রশাসনকে। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ে, ঠাঁই হলো গারদের ওপারে। আর পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন শুনে নিই।
বিদেশ যাত্রার আগে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন এক মহিলা। সাধারণত এই কাজে বেশ কিছুদিন সময় লাগে। কিন্তু এই অপেক্ষা মোটেই পছন্দ হয়নি তাঁর স্বামীর। তাই পাসপোর্ট ভেরিফাই করার কম্পিউটারটিকেই হ্যাক করে ফেলেন তিনি। বেআইনি ভাবে তাঁর স্ত্রী-সহ আরও দুজনের পাসপোর্ট ‘ভেরিফায়েড’ বলে চিহ্নিতও করার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পুলিশের কাছে ফাঁস হয়ে যায় তাঁর সমস্ত কাণ্ড কারখানা।
আরও শুনুন: হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণা করা হোক ভারতকে, হিন্দুত্ববাদীদের সুরেই সুর শিল্পী অনুপ জলোটার
ঘটনার সূত্রপাত মুম্বইয়ে। সেখানকার এক বেসরকারি অফিসেই কাজ করতেন অভিযুক্তের স্ত্রী। যদিও অভিযুক্ত উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। পেশায় একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। তবে কম্পিউটার হ্যাকিং নিয়েও বিস্তর জ্ঞান তাঁর। তাই, স্ত্রী পাসপোর্ট ভেরিফাই করতে পাঠিয়েছেন শুনেই তিনি এমন অদ্ভুত কাজের প্ল্যান ছকে ফেলেন। মূল উদ্দেশ্য ছিল স্ত্রী-কে খুশি করা। কিন্তু আদতে তাঁর এই কাজের জন্যই যে স্ত্রী-র বিদেশ যাত্রা চিরতরে বন্ধ হয়ে যেতে পারে, সে-কথা ভেবেও দেখেননি তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত ব্যক্তি তাঁর স্ত্রী সহ আরও দুজনের পাসপোর্ট অবৈধ ভাবে ভেরিফাই করার চেষ্টা করেন। পাসপোর্ট সংক্রান্ত যাবতীয় নথি যে কম্পিউটারে ছিল সেটি হ্যাক করেই এমন কাজ ঘটান ওই ব্যক্তি। যদিও, প্রথমে কিছুই বুঝতে পারেননি পুলিশের আধিকারিকরা। কারণ বেছে বেছে কোনও এক ছুটির দিনে এই কাজ সেরেছিলেন অভিযুক্ত। কিছুদিন পর, সিষ্টেম হ্যাকের ব্যাপারটা বুঝতে পারেন পুলিশ আধিকারিকরা।
আরও শুনুন: সম্ভাবনা এল নিনোর, গরমের তীব্রতায় কি নাজেহাল হবে দেশ?
সঙ্গে সঙ্গে সব কিছু খতিয়ে দেখা শুরু হয়। প্রাথমিক ভাবে, পুলিশের অনুমান ছিল এইভাবে হয়তো কোনও গুরুত্বপূর্ণ নথি চুরি করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তের পর দেখা যায় তেমন কিছুই হয়নি। তবু সরকারি সিস্টেম যিনি হ্যাক করেছেন তাঁকে তো আর ছেড়ে দেওয়া যায় না। অবিলম্বে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ওই ব্যক্তিকে। আপাতত পুলিশি হেফাজতেই তাঁকে রাখা হয়েছে। তবে যে জিনিসের জন্য এতকিছু করা, সেই পাসপোর্ট কী আদৌ হাতে পেলেন তাঁর স্ত্রী? উত্তর, অবশ্যই না। পুলিশের দাবি ওই পাসপোর্টগুলিতে আদৌ কোনও ভুলই ছিল না। স্থানীয় থানার তরফে সেগুলি হেড অফিসে ভেরিফাই করার জন্য পাঠানোও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এর মাঝে এই হ্যাকিং কাণ্ড চলে আসায় অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে দেওয়া হয়েছে ওই পাসপোর্টগুলি। ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্ত শেষ হওয়ার পরই সে বিষয়ে কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। বলা বাহুল্য, স্ত্রী-র ভালো করতে গিয়ে তাঁর ক্ষতিই করে ফেলেছেন অভিযুক্ত ব্যক্তি।