লায়লা-মজনু, হির-রাঞ্জা, কিংবা রোমিও জুলিয়েট। ইতিহাসের পাতায় একাধিক রোম্যান্টিক জুটির গল্প আমরা পড়েছি। ভালোবাসার জন্য কত কিছুই না করেছেন এঁরা। কিন্তু এ যুগের এক প্রেমিকও এঁদের থেকে কম অংশে কম যান না। নিজের ভালোবাসার মানুষের জন্য তিনি যা করেছেন, তা অবাক করেছে গোটা নেটদুনিয়াকে। কী এমন করেছেন তিনি? আসুন শুনে নিই।
বড় ভালবাসেন প্রেমিকাকে। ভালবাসার মাসে তাঁকে একটা মাত্র গোলাপ দেবেন? এতে কী কারও মন ভরে! তাই প্রেমিকার জন্য আস্ত একটা গোলাপের বাগানই বানিয়ে ফেলেছেন তিনি। সাধ করে বাগানের নামও দিয়েছেন প্রেমিকার নামেই। যুবকের এহেন কাণ্ড দেখে চক্ষু চড়কগাছ নেটিজেনদের।
আরও শুনুন: পৃষ্ঠপোষক আদানি গোষ্ঠী, জানা মাত্রই সাহিত্য সম্মান প্রত্যাখান মহিলা দলিত কবির
সিনেমায় হোক বা গল্পে, প্রেমিকার সামনে হাঁটু মুড়ে গোলাপ দেওয়ার চল বেশ পুরনো। প্রথমবারের জন্য প্রেমপ্রস্তাব থেকে আরম্ভ করে প্রেমিকার মানভঞ্জন, সব মুহূর্তেই অব্যর্থ গোলাপ। আর ভালোবাসার মাসে তো আলাদা করে একটা দিনই পালিত হয় প্রেমিক-প্রেমিকাকে গোলাপ দেওয়ার জন্য।
তবে সে পথে হাঁটেননি গাজিয়াবাদের এক যুবক। নিজের প্রেমিকাকে খানিক অন্যরকম ভাবে প্রেম নিবেদনের ইচ্ছা হয় তাঁর। সেই থেকেই গোলাপের বাগান বানানোর কথা তাঁর মাথায় আসে। কিন্তু গোটা একটা বাগান বানানোর মতো জায়গা কোথায়? তখনই তাঁর মাথায় আসে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা ফার্মগুলির কথা। পৌঁছে যান শহরের এক প্রান্তে অবস্থিত পরিবেশবিদ প্রদীপ ধালিয়ার ফার্মে। যেখানে যত্ন সহকারে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা বড় করেন তিনি। তাঁর কাছে নিজের মনের ইচ্ছা জানান ওই যুবক। একবার শুনেই এমন অভিনব আবদার বেশ পছন্দ হয় তাঁর। ভালবাসা জানানোর পাশাপাশি, পরিবেশের জন্যেও যে এক মহৎ কাজ হবে, একথা সেদিনই বুঝতে পারেন তিনি। সেদিন থেকেই শুরু করে দেন প্রস্তুতি। দীর্ঘ আট মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর তৈরি হয় একটা আস্ত গোলাপ বাগান। ভালবাসার মরশুমে যা ভরে ওঠে নানা রঙের গোলাপে।
আরও শুনুন: মানুষের আলিঙ্গন কি উপভোগ করবে গরুরা! পোষ্যদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে কী মত গবেষকদের?
নিজের ইচ্ছাপূরণ হওয়ার পরই সেই বাগানের নামকরণ করেন যুবক। প্রেমিকার নামের সঙ্গে মিল রেখেই বাগানটির নাম রাখেন, ‘শ্রিয়া গুলাব উপবন’। শোনা যায়, নবাব সিরাজ উদ দৌল্লা তাঁর এক রানির জন্য এমন ‘গোলাপবাগ’ বানিয়েছিলেন। যা আজও মুর্শিদাবাদের অন্যতম দর্শনীয় স্থান। গাজিয়াবাদের এই যুবকের কাণ্ডও যেন মনে করিয়ে দিল সেই কথাই। অন্যদিকে, এই কাজের কথা প্রকাশ্যে আসতেই নেটিজেনদের চোখে তিনি রীতিমতো ‘ভালোবাসার প্রতীক’ হয়ে উঠেছেন। অনেকেই তাঁকে ইতিহাসের অমর প্রেমিক চরিত্রদের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তবে ভালোবাসার আড়ালে তিনি যে পরিবেশেরও বেশ বড় উপকার করেছেন সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না।