মাত্র ৩০ বছর বয়সেই ৫৭ সন্তানের বাবা হয়েছেন। অথচ তাঁর নাকি এখনও বিয়েই হয়নি! এমনকী অনেক চেষ্টা করেও কারও সঙ্গে পাকাপাকি ভাবে সম্পর্কে জড়াতে পারেননি তিনি। এমনটাও কী সম্ভব? তাহলে এতগুলো সন্তানের জন্মই বা হল কীভাবে? আসুন শুনে নিই।
একটি দুটি নয় একেবারে ৫৭ জন শিশুর ‘বায়োলজিক্যাল ফাদার’ তিনি। অর্থাৎ তাঁর শুক্রাণু থেকেই জন্ম হয়েছে এই এতগুলো শিশুর। অথচ তাঁর জীবনে নেই কোনও পাকাপাকি প্রেম। হাজার চেষ্টা করেও আজ পর্যন্ত কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়াতে পারেননি তিনি। আক্ষেপের সুরে নিজেই সে কথা প্রকাশ করেছেন বছর ৩০-এর ‘স্পার্ম ডোনার’ কাইলে গরডি।
আরও শুনুন: ‘গুজরাটের হিংসা কি ভিনগ্রহীদের কাজ?’ BBC-র তথ্যচিত্র প্রসঙ্গে মোদিকে কটাক্ষ ওয়েইসির
ঠিক যেন বাস্তবের ‘ভিকি-ডোনার’। বছর দশেক আগে বলি অভিনেতা আয়ুস্মানের হাত ধরে দর্শকের পরিচয় হয়েছিল এক নতুন পেশার সঙ্গে। নতুন ঠিক নয়, বলা যায় অপ্রচলিত পেশা বলা যায়। আয়ুষ্মানের ‘ভিকি ডোনার’ সিনেমাতেই একজন প্রফেশনাল স্পার্ম ডোনারের গল্প আমরা দেখেছিলাম। বলা বাহুল্য এর আগে এমন পেশার কথা জানতেনই না অনেকেই। তবে বিদেশের মাটিতে এ কোন নতুন ঘটনা নয়। সে দেশে অনেক স্বাস্থ্যবান পুরুষই নিজের শুক্রাণু বিক্রি করেন। এর জন্য নির্দিষ্ট কিছু জায়গাও রয়েছে, যেখানে নিজের শুক্রাণু বিক্রি করতে পারেন যে কেউ। তবে তার জন্য নির্দিষ্ট কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হতে হয় তাঁদের। কাইলে গরডিও সেই রকমই একজন স্পার্ম ডোনার। যিনি বর্তমানে ক্যালেফোর্নিয়া শহরের বাসিন্দা। ইতিমধ্যেই তাঁর শুক্রাণুর মাধ্যমে জন্ম হয়েছে ৪৭ শিশুর। এবং আরও ১০ জন মহিলা তাঁর শুক্রাণু ব্যবহার করে গর্ভবতী হয়েছেন। তাই তাঁকে অনায়াসে ৫৭ শিশুর বাবা হিসেবে ধরাই যায়। প্রথম দিকে নিজের এই পেশা খুবই উপভোগ করতেন কাইলে। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সমস্যার কারণে যাঁদের সন্তান হচ্ছে না, তাঁদের অনেকেই সন্তানলাভের আশায় কাইলে-র থেকে শুক্রাণু নিয়ে যেতেন। কিন্তু বছর দুয়েক এইভাবে কাটানোর পর কাইলে বুঝতে পারেন, মহিলারা কেবলমাত্র এই একটি উদ্দেশ্য নিয়েই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আর সেই উদ্দেশ্য পূরণ হয়ে গেলেই তাঁরা আর কোনও সম্পর্ক রাখেন না কাইলের সঙ্গে। যদিও বা কারও সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক তৈরি হয়, তাহলে এহেন পেশার কথা শোনার পর তা আর টেকে না।
আরও শুনুন: অঙ্ক কষলে তবেই মিলবে ফোন নম্বর, অঙ্কের শিক্ষক চেয়ে অভিনব বিজ্ঞাপন স্কুলে
বর্তমানে এই নিয়েই বেজায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন কাইলে। তাঁর মতে, প্রয়োজন ছাড়া তাঁর সঙ্গে কেউ কথাও বলেন না। কোনও সম্পর্ক তৈরি হলেও তার স্থায়ীত্ব হয় মাত্র কয়েক মাস। অন্যদিকে তাঁর স্পার্ম ডোনার হওয়ার কারণে বেশ কিছু নিয়মের বেড়াজালে আটকে থাকতে হয় তাঁকে। এমনকি কারও সঙ্গে যৌনমিলনেরও অনুমতি নেই তাঁর। তবু কিছুদিন আগে পর্যন্ত জীবনে একজন বিশেষ মানুষ আসার অপেক্ষা করতেন কাইলে। কিন্তু বর্তমানে আর কোনোও আশার আলো খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। শুনতে অবাক লাগলেও তাই এখন প্রায় নিঃসঙ্গ প্রেমহীন জীবনই কাটাচ্ছেন ৫৭ জন সন্তানের ‘জনক’।