মাত্র দশ ডিজিটের ফোন নম্বর। আর তা পেতে হলে কষতে হবে মস্ত একখানা অঙ্ক। তা না কষে উপায় কী! ফোন নম্বরটি দেওয়া হয়েছে চাকরির বিজ্ঞাপনে, আর সে চাকরি অঙ্ক শিক্ষকেরই। অভিনব এই বিজ্ঞাপনই চোখ টেনেছে নেটদুনিয়ার। কোন স্কুলে দেখা মিলল এই বিজ্ঞাপনের? শুনে নিই।
‘চাকরির খোঁজ। অঙ্ক শিক্ষক প্রয়োজন।’- কর্মখালির সাধারণ বিজ্ঞাপন যেভাবে এগোয়, সেই চেনা চাঁছেই চলছিল বিজ্ঞাপনটি। কিন্তু ঠিক পরের লাইনে এসেই চক্ষু চড়কগাছ। ‘ফোন করুন’ বলে যে সংখ্যার উল্লেখ আছে, তা কোনও ফোন নম্বর নয়, বরং মস্ত একটা অঙ্ক। যোগ, ভাগ, গুণ, বিয়োগ, বর্গমূল- সব কষেই তবে পেতে হবে ফোন নম্বর। সেই ফোন নম্বরে ফোন করলে তার পরে তো বাকি কাজ। কিন্তু আগে তো ফোন নম্বর জোগাড় করতে হবে। অতএব কষতে হবে অঙ্ক। কারা কষবেন? না, যাঁরা অঙ্ক শিক্ষকের পদে চাকরি করতে চান। বিজ্ঞাপনের এই অভিনবত্বই নজর কেড়েছে নেটিজেনদের।
আরও শুনুন: ‘প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিদ্রুপ কাম্য নয়’, বিবিসি-কে খোলা চিঠি ৩০০ জন বিখ্যাত ব্যক্তির
বিজ্ঞাপন মানেই অভিনব ভাবনার সুলুক-সন্ধান। এমন কিছু, যা মানুষকে চমকে দেয়। আবার কোনও একটা কাজ করতেও উৎসাহিত করে। সাধারণ কোনও বিজ্ঞাপন যদি বলে- ‘প্রচুর ছাড় মিলছে, এখুনি অমুক জিনিসটা কিনুন’ – আসলে সে ক্রেতাকে পণ্যটির কাছে পৌঁছানোর কথাই বলছে। আবার এরকম সরাসরি না বলা হলেও, বিজ্ঞাপনের অন্তর্নিহিত অর্থের ভিতরই এরকম কিছু-না-কিছু করে ফেলার বার্তা লুকিয়ে থাকে। এই বিজ্ঞাপনেও সেই অ্যাকশন বা কিছু করার বার্তাটি লুকিয়ে আছে। অঙ্ক শিক্ষকের কর্মখালির সঙ্গে অঙ্ক কষে ফোন নম্বর পাওয়ার বিষয়টি এতই সাযুজ্যপূর্ণ যে, নিমেষেই বিজ্ঞাপনটি ভাইরাল হয়েছে নেটদুনিয়ায়।
আরও শুনুন: বোরখা পরে কলেজে ঢুকতে বাধা মুসলিম ছাত্রীদের, উঠল বোরখাকেও ‘ইউনিফর্ম’ করার দাবি
Answer is “9428163811”. That’s the 10-difitnmobile number to call.
Manually self-solved myself. No calculator, no help, no check, nothing else. In quick time as I just saw ur tweet. Prize Money at least plz award me, Sir! pic.twitter.com/u5TATI34TK— Simply PRABEEN (@prabeennet) January 21, 2023
এখন অঙ্ক নিয়ে মানুষের একটা স্বাভাবিক ভীতি কাজ করে। তৈলাক্ত বাঁশে বাঁদরের ওঠা-নামার অঙ্ক হোক কিংবা জলাধারের জল ভর্তি আর খালি হওয়ার বিষয় – অঙ্কের সেই জটিল প্যাঁচ মনে পড়লেই যে কোনও বয়সের মানুষেরই ভয়ে যেন বুকটা একটু দুরুদুরু করে ওঠে। আর তাই বিজ্ঞাপনে যে মস্ত অঙ্কটি দেওয়া হয়েছে, তা নিয়েও নেটদুনিয়ায় নানা মুনির নানা মত। মশকরা করে একজন বলেছেন, স্কুলটির বোধহয় রামানুজন অথবা শকুন্তলা দেবীর মতো কাউকে দরকার। অন্য অনেকেই আবার বলছেন, বহরে বড়সর হলেও, অঙ্কটি জটিল কিছু নয়। নিচু ক্লাসের পড়ুয়ারাও একটু মাথা খাটালে তা পেয়ে যাবে। একজন তো কাগজ-কলম নিয়ে বসেই পড়েছেন। অঙ্ক কষে ফোন নম্বর বের করে নেটদুনিয়ায় তা জানিয়েও দিয়েছেন। তাঁর প্রশ্ন, অঙ্কটা কষে ফেলার জন্য, তাঁকে চাকরি না হোক, অন্তত একটা পুরস্কার কি দেওয়া যাবে? অন্য একজনের মত, এই বিজ্ঞাপনের কোনও মানে হয় না। কেননা অঙ্ক কষার পরেও তো সেই ইন্টারভিউ দিতে হবে। তাহলে আর শুধু অঙ্ক কষে কী লাভ হল! এইসব কথাবার্তার মধ্যেই অবশ্য বিজ্ঞাপনটি তার কাজ হাসিল করেছে। অর্থাৎ পৌঁছে যাচ্ছে বহু বহু মানুষের কাছে। তথাকথিত সংযোগের মাধ্যমকে একটু পাশে সরিয়ে রেখে, এভাবেও যে বৃহত্তর যোগাযোগ গড়ে তোলা যায়, এ বিজ্ঞাপন তাই-ই দেখাচ্ছে। আর একই সঙ্গে বহু সংখ্যক মানুষ জেনে যাচ্ছেন, গুজরাটের ভক্তাশ্রম স্কুলের কথা। যে স্কুলের তরফে দেওয়া হয়েছে এই বিজ্ঞাপন। একদিকে অঙ্ক শিক্ষকের সন্ধান অন্যদিকে স্কুলের প্রচার- এক বিজ্ঞাপনে দুই উদ্দেশ্যই হাসিল করেছে গুজরাটের এই স্কুলটি।