মোটা মাইনের চাকরি নয়, চা বানিয়ে মোটা টাকা রোজগারের স্বপ্ন দেখেন এই বাঙালি মেয়ে। আর সেই স্বপ্ন পূরণ করার তাগিদেই নামী সংস্থার চাকরি ছেড়েছেন তিনি। আসুন, শুনে নেওয়া যাক তাঁর গল্প।
পড়াশোনা করেছেন মন দিয়ে। ডিগ্রি পেতেও অসুবিধে হয়নি। এমনকি নামী সংস্থায় ভাল চাকরিও জুটে গিয়েছিল। কিন্তু সেই ছকবাঁধা জীবনে সন্তুষ্ট হতে পারেননি দিল্লি প্রবাসী বাঙালি মেয়ে শর্মিষ্ঠা ঘোষ। নিজে হাতেই বড় কিছু গড়তে চেয়েছিলেন তিনি। আর সেই ইচ্ছে পূরণের জন্যই চাকরি ছেড়ে চায়ের দোকান খুলেছেন তিনি। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ার সূত্রে এই লড়াকু মেয়ের কথা সকলের সামনে এনেছেন ব্রিগেডিয়ার সঞ্জয় খান্না। দিল্লি ক্যান্টনমেন্টের গোপীনাথ বাজারে চা খেতে গিয়ে তিনি দেখেছিলেন, ঝরঝরে ইংরেজি বলতে পারা, সপ্রতিভ আধুনিক এক যুবতী ঠেলাগাড়ির উপরে অস্থায়ী চায়ের দোকান দিয়েছেন। কৌতূহলের জেরে সেনা আধিকারিক এর কারণ জানতে চান। আর তখনই ওই নিজের স্বপ্নের কথা খুলে বলেন ওই যুবতী।
আরও শুনুন: টিভি-ফ্যান সবই চলে, অথচ আসে না বিদ্যুতের বিল! নয়া দিশা দেখাচ্ছেন পদ্মশ্রী জনক
কোনও কাজই ছোট নয়, এ কথা মুখে যতই বলা হোক না কেন, বাস্তবে মেনে নেওয়া কি অতটাই সহজ? বিশেষ করে পড়াশোনা করে উচ্চশিক্ষিত হওয়ার পর পেশার জগতে সেই শিক্ষাকে কাজে লাগাবেন না, এমনটাও সাধারণত কেউ ভাবেন না। তবে এই মেয়েটি সব দিক থেকেই যেন ব্যতিক্রম। ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর করেছেন তিনি। বেশ কিছু দিন চাকরিও করেছিলেন বিদেশি এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। কিন্তু বাঁধাধরা চাকরির গতানুগতিক জীবন তাঁর পছন্দ ছিল না। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন, চায়ের ব্যবসা করেই যশ কুড়োবেন তিনি। না, চা-বাগানের ব্যবসা নয়, স্রেফ চা বানানোর মতো একটি সাধারণ কাজকে ঘিরেই এত বড় স্বপ্ন দেখেছিলেন শর্মিষ্ঠা।
আর যেমন কথা, তেমনই কাজ। চারচাকা ঠেলা গাড়িতেই সেই চায়ের দোকান খুলে ফেলেছেন এই বাঙালি মেয়ে। তিনি স্বপ্ন দেখেন, কোনও একদিন তাঁর এই ছোট্ট চায়ের দোকানের নাম ছড়িয়ে পড়বে দিকে দিকে। তাঁর চায়ের দোকান থাকবে দেশের প্রতিটি প্রান্তে। তৈরি হবে একটি বড় ‘ফুড চেন’। শর্মিষ্ঠার সঙ্গে এই কাজে যোগ দিয়েছেন তাঁর আরেক বন্ধু, পেশায় বিমানসংস্থার কর্মী ভাবনা রাও।
আরও শুনুন: গরিবও সাবান পাক, হোটেলের ফেলে দেওয়া সাবানেই মুখে মুখে হাসি ফোটাচ্ছেন সমীর
নিজের স্বপ্নকে গুরুত্ব দিয়েই এত বড় ঝুঁকি নিয়েছেন এই বাঙালি মেয়েটি। তাও একেবারে অপ্রচলিত একটা পথ ধরেই এগোতে শুরু করেছেন তিনি। আর তাঁর এই লড়াকু মনোভাবকেই কুর্নিশ জানিয়েছেন নেটিজেনরা।