একসময় জিলিপি বিক্রি করতেন, পরে গুরুর ভেক ধরেন। আর সেই গুরু হওয়ার সুবাদেই অন্তত ১০০ মহিলা ভক্তকে ধর্ষণ করেছেন এই ব্যক্তি। সেই কাণ্ডের ভিডিও করতেও ছাড়েননি এই জালেবি বাবা। কী ঘটেছে তারপর? শুনে নেওয়া যাক।
ধর্মের আড়াল নিয়ে অন্যায় চালিয়ে যাওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। সেই তালিকাতেই নয়া সংযোজন জালেবি বাবা। এক কালে জিলিপি বিক্রি করেই পেট চালাতেন এই ব্যক্তি। হঠাৎই নিজেকে ধর্মগুরু বলে দাবি করে বসেন তিনি। আর সেই স্বঘোষিত গুরুর কীর্তিতে সকলেরই চোখ চড়কগাছ। জানা গিয়েছে, অন্তত শ-খানেক মহিলাকে ড্রাগে আচ্ছন্ন করে ধর্ষণ করেছেন তিনি। আর সেই ধর্ষণের ভিডিয়োও করেছেন। ধর্ষণের ভিডিয়ো দেখিয়ে নির্যাতিতাদের ব্ল্যাকমেলও করতেন জালেবি বাবা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধর্মের আড়ালে গা ঢাকা দিতে পারেননি এই ব্যক্তি। আদালতের রায়ে শেষমেশ গরাদের ওপারেই যেতে হল সেই জালেবি বাবাকে।
কী ঘটেছে ঠিক?
আরও শুনুন: ‘বেশরম’ উরফি! খোলামেলা গেরুয়া পোশাকে বিজেপিকে পালটা দিলেন তারকা, দাবি নেটিজেনদের
৬৩ বছরের জিলিপি বাবার আসল নাম অমরবীর ওরফে অমরপুরী। আদতে পঞ্জাবের মানসা গ্রামের বাসিন্দা এই ব্যক্তির স্ত্রী মারা গিয়েছেন, তবে ছয় সন্তান রয়েছে তাঁর। ২৩ বছর আগে মানসা থেকে হরিয়ানার ফতেহাবাদের তোহানা গ্রামে চলে আসেন অমরপুরী। সেখানে জিলিপি বিক্রি করতেন তিনি। এই সূত্রেই এক তান্ত্রিকের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। বছর কয়েকের জন্য গ্রাম থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন এই ব্যক্তি। পরে ফের গ্রামে ফিরে নিজেকে গুরু বলে দাবি করেন তিনি। ঘোষণা করেন, অলৌকিক শক্তি রয়েছে তাঁর। সে কথায় বিশ্বাস করেই তাঁর মন্দিরে ভক্তদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। জালেবি বাবা নামেই পরিচিত হয়ে যান এই ব্যক্তি। এমনকি অন্য শহর বা রাজ্য থেকেও ভক্তরা এখানে আসতেন বলে জানা গিয়েছে। আর এই জনপ্রিয়তার আড়াল নিয়েই মহিলা ভক্তদের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করতেন ওই গুরু।
২০১৮ সালে এক মহিলা অভিযোগ করেন, মন্দিরের ভিতর তাঁকে ধর্ষণ করেছেন জালেবি বাবা। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করলেও জামিকন পেতে সমস্যা হয়নি। এরপর ২০১৯ সালে ফের একটি ধর্ষণের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। তাঁর মন্দিরে তল্লাশি চালিয়ে যৌন উত্তেজক ওষুধ, ধর্ষণের ভিডিও, অপরাধের এমন নানা প্রমাণ পায় পুলিশ। আর তার ভিত্তিতেই ওই গুরুকে আটক করা হয়। দেখা যায়, নিজের মোবাইলেই অন্তত ১২০টি ভিডিও তুলেছিলেন ওই স্বঘোষিত ধর্মগুরু। আর সেই ভিডিও দেখিয়েই নির্যাতিতাদের ব্ল্যাকমেল করে ফের ধর্ষণ করতেন তিনি।
আরও শুনুন: পড়ানোর সময় হজরত মহম্মদের ছবি দেখিয়ে বিপাকে, চাকরি খোয়ালেন অধ্যাপিকা
ধর্ষণের ঘটনায় আগেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল জালেবি বাবাকে। এবার তাঁকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিল ফতেহাবাদের আদালত। ধর্মের আড়াল নিয়ে যত অন্যায়ই তিনি করে থাকুন না কেন, ধর্মের ছুতো করে সেই অন্যায় ঢাকার চেষ্টা কিন্তু সফল হল না শেষ পর্যন্ত।