শেষ হয়েছে শাস্তির মেয়াদ। দীর্ঘ ৫ বছর জেলে কাটিয়ে অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন ৯৮ বছরের বৃদ্ধ। কিন্তু তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য কেউ আসেননি জেলের সামনে। তাই সেই দায়িত্ব পালন করলেন জেলের আধিকারিকরাই। রীতিমতো বিদায় সংবর্ধনা দিয়ে বৃদ্ধকে বাড়ি পৌঁছে দিলেন তাঁরা। কোথায় ঘটেছে এমন ঘটনা? আসুন শুনে নিই।
জীবনের শেষভাগে পৌঁছে কারাবাসের শাস্তি পেয়েছিলেন রামসুরত নামে এক বৃদ্ধ। তাঁকে রাখা হয়েছিল অযোধ্যার একটি জেলে। কিন্তু শাস্তির মেয়াদ সম্পূর্ণ হওয়ার দিন দেখা যায়, তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পরিবারের কেউ আসেননি। তাই সেই দায়িত্ব নিজেদের কাঁধেই তুলে নিলেন জেলের সুপারিটেনডেন্ট। রীতিমতো সংবর্ধনা দিয়েই বিদায় জানানো হয়েছে ওই বৃদ্ধকে। সম্প্রতি সেই ঘটনার ভিডিওই ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়।
আরও শুনুন: ‘বিয়ে করে সংসার করো’, বিমানবন্দরেই ঘটকালির উদ্যোগ, আধিকারিককে কী জবাব তরুণীর?
ভিডিওর সঙ্গেই বিস্তারিত ভাবে বৃদ্ধের পরিচয় জানানো হয়েছে। ভিডিওর শুরুতেই দেখা যাচ্ছে, ওই বৃদ্ধ চেয়ারে বসে রয়েছেন, তাঁর গায়ের উপরে দুটি কম্বল। জেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, পাঁচ বছর ধরে অযোধ্যা জেলে বন্দি ছিলেন বৃদ্ধ রামসুরত। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৫২, ৩২৩ এবং ৩৫২ নম্বর ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছিল। অন্য এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগে জেলে পাঠানো হয় তাঁকে। তখন রামসুরতের বয়স ছিল ৯৩। এখন তিনি একশো ছুঁইছুঁই।
আরও শুনুন: অলৌকিক নয় লৌকিক, হৃৎপিণ্ড ছাড়াই ১ মাস বেঁচে ব্যক্তি, কীভাবে?
আদালতের রায় অনুযায়ী, তাঁর শাস্তির মেয়াদ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের আগস্ট মাসে। কিন্তু মে মাসে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৯০ দিনের জন্য প্যারোলে মুক্তি পান তিনি। তারপর ফের জেলে ফিরে শেষ করেন কারাবাসের মেয়াদ। কিন্তু মুক্তির দিন দেখা যায়, বৃদ্ধকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কেউই হাজির হননি জেলে। তাই পুলিশের গাড়িতে করে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেন খোদ অযোধ্যা জেলের ডিস্ট্রিক্ট সুপারিনটেনডেন্ট শশীকান্ত মিশ্র পুত্রওয়াত। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতেই ধরা পড়েছে সেই ছবি। ভিডিওতে আরও দেখা গিয়েছে, জেলে কাজ করে এই ৫ বছরে ওই বৃদ্ধ যা উপার্জন করেছেন, তাঁর হাতে সেই টাকাও তুলে দিয়েছেন জেল সুপার। সেই সময় সেখানে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় জেলের অন্যান্য কর্মীদেরও। ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাগ করে নিয়েছেন ওই জেলেরই এক আধিকারিক। ওই পুলিশ কর্মীদের এহেন মানবিকতার নজির দেখে প্রশংসা জানিয়েছেন নেটিজেনরাও।