বাঁদরের সঙ্গে সেলফি তুলতে গিয়েছিলেন ব্যক্তি। কিন্তু সেই দিকে মন দিতে গিয়ে খেয়াল করেননি তিনি খাদের ধারে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। আর এই অন্যমনস্কতাতেই ঘটে গেল মারাত্মক বিপদ। প্রায় ৫০০ ফুট গভীর খাদে পড়ে বেঘোরে প্রাণ হারালেন এক ব্যক্তি। আসুন শুনে নিই।
খাদের ধার বরাবর গাড়ি চালিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। চলতি পথেই সামনে আসে একদল বাঁদর। সাধারণত এই প্রাণীটিকে সবাই এড়িয়ে চললেও, এই ব্যক্তির মনে শখ জাগে, বাঁদরের সঙ্গে সেলফি তোলার। আর সেই ছবি তুলতে গিয়ে ঘটে যায় মারাত্মক কাণ্ড। খাদের ধারে পা পিছলে পড়ে বেঘোরে প্রাণ হারান মহারাষ্ট্রের আব্দুল শেখ।
আরও শুনুন: আরও সন্তান চাই! ৬০-তম সন্তানের বাবা হয়ে নতুন স্ত্রীর খোঁজে পাকিস্তানের ব্যক্তি
সেলফি তোলা এখন আর নেহাত শখ নয়, রীতিমতো আশক্তির পর্যায়ে চলে গিয়েছে। সেলফি তুলতে গিয়ে এর আগেও অনেকে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন। বিপজ্জনক পরিস্থিতে সেলফি তুলতে গিয়ে অনেকের প্রাণও গিয়েছে। তবু শখ বড় বালাই। আর তার থেকেও বেশি, কম সময়ে জনপ্রিয় হওয়ার নেশা। সেই নেশার টানেই, অকালে প্রাণ হারালেন আব্দুল শেখ। জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন গাড়ি চালিয়ে কোঙ্কণ উপত্যকা যাচ্ছিলেন আব্দুল। যাওয়ার পথে একদল বানর দেখে তাঁর ছবি তোলার শখ জাগে। সেই মুহূর্তে তিনি যে অঞ্চলে ছিলেন তার পাশেই ছিল মস্ত বড় এক খাদ। তবু আব্দুলের ইচ্ছা হয় বাঁদরের পাশে দাঁড়িয়ে নয়, ব্যাকগ্রাউণ্ডে বাঁদরের দলকে রেখে সেলফি তুলবেন তিনি। কিন্তু ছবি তুলতে গিয়ে কখন যে পৌঁছে গিয়েছেন একেবারে খাদের ধারে তা তিনি খেয়ালই করেননি। পরিণতি হল মারাত্মক। প্রায় ৫০০ ফুট গভীর এক খাদে পড়ে গিয়ে অকালে প্রাণ হারালেন ৩৯ বছরের আব্দুল। ঘটনার পরদিন স্থানীয়দের সহযোগিতায় মৃতদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। প্রশাসনের তরফেই ঘটনার প্রাথমিক বিবরণ জানানো হয়।
আরও শুনুন: এমআরআই যন্ত্রের ভিতরেই যৌনতায় মাতেন যুগল, তোলা হয় ছবিও… কিন্তু কেন?
তবে এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও চলন্ত ট্রেন কিংবা নৌকা থেকে সেলফি তুলতে গিয়ে বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। সেই কারণে বেশ কিছু বিপজ্জনক জায়গায় সেলফি তোলার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাও জারি রয়েছে। তবু যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে কিছুতেই আর সেলফি-র নেশা কাটছে না মানুষের। জীবনের বিশেষ মুহূর্ত থেকে আরম্ভ করে কোনও দর্শনীয় স্থানে যাওয়া, সব কিছুই আগেভাগে মুঠোফোনে বন্দি করার দৌড়ে নেমেছে ‘জেন-ওয়াই’। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলা সোশ্যাল মিডিয়ায় ফলোয়ার্সের নেশা যেন সেই আগুনেই ঘি ঢালতে ব্যস্ত। কী ভয়ানক নেশায় যে মেতে আছে বর্তমান পৃথিবী, আব্দুলের মৃত্যু যেন আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে তা প্রমাণ করে দিল।