চুল কাটার পর তা সাধারণত জঞ্জাল হিসেবেই ফেলে দেওয়া হয়। কিন্তু কেটে ফেলার পর ফেলে দেওয়া সেই চুল যে ফেলনা নয়, তাই-ই প্রমাণ করে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কেননা এই পরিত্যক্ত চুল দিয়েই নাকি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে দূষণ-দানবকে।কোন দেশের বিজ্ঞানীরা করলেন এমন দাবি? আসুন, শুনে নিই।
ফেলে দেওয়া চুল মোটেই হেলাফেলার জিনিস নয়। বিজ্ঞানীদের দাবি, মানুষের ফেলে দেওয়া চুল নাকি কাজে লাগতে পারে পরিবেশ দূষণ কমানোর ক্ষেত্রে। তাই বিভিন্ন জায়গা থেকে পরিত্যক্ত চুল সংগ্রহ করার কাজ শুরু করেছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: কন্ডোমের বিজ্ঞাপনে গরবা শ্লীল না অশ্লীল! সিদ্ধান্ত জানাল আদালত
সম্প্রতি বেলজিয়ামের একদল বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, পরিবেশে দূষণ ঘটানো বেশ কিছু পদার্থ শুষে নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে চুলের মধ্যে। তাই পরিতক্ত্য চুলকে কাজে লাগিয়ে তেল বা হাইড্রোকার্বন জাতীয় বস্তুর ফলে তৈরি হওয়া দূষণ কমানো সম্ভব। তাঁরা জানিয়েছেন ১ কিলো চুল নাকি ৭-৮ লিটার তেল ও হাইড্রোকার্বন শুষে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। এক্ষেত্রে তাঁরা একটি নতুন প্রযুক্তির আবিষ্কার করছেন। যা কাজে লাগিয়ে ওই পরিতক্ত্য চুল দিয়েই তৈরি হয়েছে বর্গাকার ‘ম্যাট’। এনজিও সংস্থার মাধ্যমে সেইসব ‘ম্যাট’ দেশের বিভিন্ন নালার মধ্যে রাখা হয়ছে। সাধারণত এইসব নালা দিয়েই শহরের ব্যবহৃত অর্থাৎ দূষিত জল নদীতে এসে মেশে। যার মধ্যে বিভিন্ন দূষক থাকার দরুণ ব্যাপক হারে দূষিত হয় নদী। এবং সেই নদীর জল অন্যান্য কাজে লাগানো হলে সেই দূষণ ছড়িয়ে পড়ে বাইরেও। বিজ্ঞানীদের দাবি নালার মধ্যে থাকা ওই ম্যাটগুলি অনায়াসেই জলের মধ্যে থেকে তেল ও হাইড্রোকার্বন পদার্থগুলি শুষে নিতে পারবে। ফলে নদীতে এসে যে জল মিশবে তা আসলে আংশিক ভাবে পরিশোধিত হবে।
আরও শুনুন: মা-বাবার ঝগড়ায় অতিষ্ঠ, দাম্পত্য ঝামেলা এড়াতে ভগবান বিষ্ণুকে বিয়ে তরুণীর
আসলে প্রাকৃতিক ভাবেই চুলের মধ্যে এমন গুণ বর্তমান। যার দরুন এইসব দূষণ সৃষ্টিকারি পদার্থ সহজেই শুষে নেওয়া সম্ভব। পাশাপাশি সে দেশের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এই ‘ম্যাট’ তৈরি করার জন্য অন্য কারও কাছে সাহায্য চাইতে হবে না তাঁদের। দেশের স্থানীয় মানুষের সহযোগিতাতেই এই কাজ করা সম্ভব। ইতিমধ্যেই নাকি হাজার হাজার সেলুন দোকানের মালিক তাঁদের এই কর্মযজ্ঞে শামিল হতে রাজি হয়েছেন। এনজিওগুলির তরফেও জানা গিয়েছে, প্রতিদিন নাকি বিভিন প্রান্তের নাপিতরা এসে সারাদিনের পরিতক্ত্য চুল তাঁদের দিয়ে যাচ্ছেন। পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হয়েই যে তাঁরা এই কাজে সানন্দে যোগ দিয়েছেন এই কথা বলাই বাহুল্য। একইসঙ্গে বেশি খরচ না করেই পরিবেশ দূষণের মতো জটিল সমস্যার কিছুটা সমাধান করতে পারা, বেশ গর্বের বলেই মনে হয়েছে তাঁদের। ফেলে দেওয়া জিনিস নানা কাজে লেগে যায়, তা আমরা জানি। তবে ফেলে দেওয়া চুল যে পরিবেশ দূষণ কমানোর কাজে লাগতে পারে তা সত্যিই অবাক করেছে বিশ্বকে।