আঙ্কল পোজারকে কি আপনাদের মনে আছে? জেরোম কে জেরোম-এর সেই বিখ্যাত ভুলোমনা চরিত্র, যিনি প্রায় সবকিছুই ভুলে যেতেন। এখনও, কিছুই প্রায় মনে রাখতে পারেন না, এমন ব্যক্তির কথা এলে আঙ্কল পোজারের সঙ্গেই তাই তুলনা টানা হয়। তবে এবার ভুলোমনের নয়া কীর্তি গড়লেন থাইল্যান্ডের এক ব্যক্তি। নিজের স্ত্রীকেই ভুলে দিব্যি বাড়ির পথ ধরলেন তিনি। আসুন শুনে নিই সেই গল্প।
ভুলো মনের জন্য স্বামীদের প্রায়শই গঞ্জনা শুনতে হয়। তার অবশ্য কারণও আছে। বাজারে গেলেন এক জিনিস কিনতে, তারপর গল্পগুজব করে ফিরে যখন এলেন, দেখা গেল আসল জিনিসটাই আনেননি। দৈনন্দিন জীবনে এসব ঘটনা হামেশাই ঘটে। আর তা নিয়ে মজা-মশকরাও কম হয় না। কিন্তু তাই বলে নিজের স্ত্রীকেই ভুলে রাস্তায় রেখে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি চলে যাবেন স্বামী! শুনতে আজগুবি লাগলেও ঘটনা কিন্তু সত্যি।
আরও শুনুন: নতুন বছরেও বিপর্যয়! ২০২৩ নিয়ে কী কথা শুনিয়ে গিয়েছিলেন বাবা ভাঙ্গা?
ভুলোমনা স্বামীদের কীর্তিকলাপে নয়া সংযোজন এই ঘটনা। আর কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন থাইল্যান্ডের এক ব্যক্তি। ভদ্রলোকের নাম বুনটম, আর তাঁর স্ত্রী হলেন আমনুয়া। নতুন বছর উদযাপনে লম্বা ড্রাইভে বেরিয়েছিলেন তাঁরা। সারা রাতের ব্যাপার। তিনটে নাগাদ বুনটমের মনে হয়, প্রকৃতির ডাকে আর সাড়া না দিলেই নয়। রাস্তার পাশে গাড়ি পার্ক করে ভদ্রলোক একটু দূরে চলে যান। তাঁর স্ত্রী তখন গাড়িতেই বসে ছিলেন। বেশ কিছুক্ষণ কাটে। স্বামী ফিরছেন না দেখে, আমনুয়া ভাবেন, তিনিও এইবেলা প্রাকৃতিক কাজটা সেরেই ফেলবেন। তিনিও তাই নামেন গাড়ি থেকে আর এগিয়ে যান অন্য দিকে। আর ঠিক এখান থেকেই শুরু ভ্রান্তিবিলাস। খানিকক্ষণ পর বুনটম ফিরে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে দিব্যি চলে যান। তিনি ভেবেছিলেন, স্ত্রী গাড়িতেই বসে আছেন। এদিকে তাঁর স্ত্রী ফিরে এসে দেখেন, না আছে গাড়ি, না আছে স্বামী। ফাঁকা রাস্তায় বেশ বেকায়দায় পড়ে যান ভদ্রমহিলা। স্বামীকে ফোন করবেন যেই না মনস্থ করেছেন, অমনি খেয়াল হল ফোন তো গাড়িতে, ব্যাগের মধ্যে। এখন উপায়! আর কোনও রাস্তা না দেখে রাস্তা ধরেই হাঁটতে শুরু করেন।
আরও শুনুন: বারাণসী নাকি হরিদ্বার! ২০২২-এ কোন ধর্মস্থানে ভক্তরা ভিড় জমালেন বেশি?
বেশ কিছুটা যাওয়ার পর একটা থানায় পৌঁছান তিনি। সেখানে গিয়ে খুলে বলেন পুরো ঘটনাটা। কিন্তু এখানেও আর এক বিপত্তি! স্বামীর ফোন নম্বরটাই মনে করতে পারলেন না ভদ্রমহিলা। অগত্যা থানার আধিকারিকরা মহিলার নম্বরেই ফোন করেন, যাতে স্বামীর কানে অন্তত খবরটা তুলে দেওয়া যায়। কিন্তু সে ফোনও বেজে যায়, কেউ ধরেন না। দেখতে দেখতে রাত কেটে যায়। যোগাযোগ আর হয় না। শেষমেশ সকাল আটটা নাগাদ ঘটনাচক্রে এক ব্যক্তির দেখা পাওয়া যায়, যিনি সেই সময় ওই রাস্তা ধরেই যাচ্ছিলেন। কাকতালীয় ভাবে এই যোগাযোগ হল বলেই রক্ষে। শেষমেশ মহিলার স্বামীর কাছে খবরটা দেওয়া যায়। তিনি তখনও বাড়ি পৌঁছাননি বটে তবে ১০০ কিমির উপর ড্রাইভ করে ফেলেছেন। খবর শুনেই তো তড়িঘড়ি ফিরে আসেন ওই ব্যক্তি। তারপর এরকম ঘটনার জন্য যে তিনি বেজায় লজ্জিত, স্ত্রীর কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, স্ত্রী যে গাড়িতে নেই, সে কথা কি একটিবারও মনে হল না তাঁর? গোবেচারা মুখে ভদ্রলোকের উত্তর, এমনিতে তো আমনুয়া বেশিরভাগ সময় ঘুমিয়েই ছিলেন। তাই সাড়াশব্দ না পেয়েও কোনও সন্দেহ হয়নি তাঁর। ভেবেছিলেন পিছনের সিটে ঘুমিয়েই আছেন স্ত্রী। আর তাই তিনি মনের আনন্দে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। এই শুনে উপস্থিত সকলের মুখ টিপে হাসা ছাড়া অবশ্য আর কিছু করার ছিল না। তবে ভুলোমনা ব্যক্তিদের কীর্তির তালিকায় যে ঘটনা জুড়লেন এই ভদ্রলোক, তা বোধহয়য় আঙ্কল পোজারকেও হার মানায়।