প্রায় ৩৬ বছর পুরনো একটা জার্সি। কিংবা ১০০ বছর আগেকার কোনও হাতঘড়ি। সাধারণ ভাবে এমন বর্ণনা দিয়ে যদি এইসব জিনিস বিক্রির কথা ভাবা হয়, তাহলে কেউ ফিরেও তাকাবেন না। কিন্তু যদি উল্লেখ করা থাকে ফুটবলের জার্সিটি ৮৬-র বিশ্বকাপে মারাদোনার গায়ে ছিল। কিংবা হাতঘড়িটির মালিক স্বয়ং অ্যাডলফ হিটলার! কত দাম উঠতে পারে এই ঐতিহাসিক জিনিসগুলির? আসুন শুনে নিই দামের দৌড়ে কে এগিয়ে।
ফুটবলারের জার্সি কিংবা অতি পুরনো হাতঘড়ি। কিংবা একটি ব্যবহার করা জ্যাকেট। আপাতদৃষ্টিতে এইসব পুরনো জিনিস অবাঞ্ছিত মনে হলেও এর দাম শুনলে অবাক হবেন যে কেউ। শুধুমাত্র ইতিহাস জড়িয়ে থাকার কারণে এইসব জিনিসই বিক্রি হয়েছে কোটি টাকায়। আবার কিছুক্ষেত্রে ইতিহাসের বদলে একটি জিনিসকে বহুমূল্য করে তুলেছে তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানুষটির প্রতি বিশ্ববাসীর আবেগ।
আরও শুনুন: পড়ার খরচ জোগাতে রাতভর চা বিক্রি, পরিশ্রমী পড়ুয়াকে কুর্নিশ নেটদুনিয়ার
ঠিক যেরকম কোটি কোটি ফুটবল ভক্তের আবেগ জড়িয়ে আছে ১৯৮৬-র ফুটবল বিশ্বকাপের সঙ্গে। বিশ্বকাপের ইতিহাসেও এই সালটি বিশেষ ভাবে স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। তার কারণ অবশ্যই কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো মারাদোনা। এবার সেই মারাদোনার গায়ে থাকা জার্সি যদি নিলামে ওঠে, তাহলে তার দাম তো আকাশছোঁয়া হবেই। চলতি বছরেই নিলামে উঠেছিল ৮৬-র বিশ্বকাপে মারাদোনার গায়ে থাকা জার্সিটি। প্রায় ৭৭ কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছিল সেই জার্সি। একইসঙ্গে নিলামে উঠেছিল মেরিলিন মনরোর একটি পোট্রেট। বলা বাহুল্য এই ছবিটিই বিশ শতকের সবথেকে দামী ছবি হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। জানা গিয়েছে প্রায় ১ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা দিয়ে ছবিটি কিনেছিলেন জনৈক সমঝদার! এ বছরই বিক্রি হয়েছে ১৯৫৫ সালের একটি মার্সিডিজ গাড়ি। যার দাম উঠেছিল প্রায় ১ হাজার ১৮৩ কোটি টাকারো বেশি! বলা বাহুল্য এটিই নাকি এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর সব থেকে দামে বিক্রিত গাড়ি। একইসঙ্গে নিলাম হয়েছিল একটি জ্যাকেট। তবে এই জ্যাকেট কোনও সাধারণ জ্যাকেট নয়। ১৯৬৯ সালে প্রথম বার এই জ্যাকেটটি পরেই চাঁদে গিয়েছিলেন অলড্রিন। সেই ঐতিহাসিক মূল্যের কথা মাথায় রেখেই এর দাম উঠেছিল ২.৮ মিলিয়ন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় সাড়ে ২৩ কোটি টাকার সমান।
আরও শুনুন: ‘আত্মরক্ষার জন্য ঘরে অস্ত্র রাখুক হিন্দুরা’, ফের বিতর্কিত নিদান সাধ্বী প্রজ্ঞার
তবে চলতি বছরে নিলামের বাজারে সবথেক বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল শতাব্দী প্রাচীন হাতঘড়ি। মনে করা হয়েছিল, প্রায় ২০ থেকে ৪০ লক্ষ ডলারে বিক্রি হবে সেই ঘড়ি। কিন্তু একটি পুরনো হাতঘড়ির এত বেশি দাম কীভাবে সম্ভব?
কারণ ঘড়িটির মালিক ছিলেন অ্যাডলফ হিটলার। এমন এক বিতর্কিত ঐতিহাসিক চরিত্রের ব্যবহার করা জিনিস দাম বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঘড়িটি বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৯ কোটি ৯ লক্ষ ৩০ হাজার টাকায়। আশ্চর্যভাবে ঘড়িটি কিনেছিলেন ইউরোপের এক ইহুদি। অতীতে যাঁদের নিধন করতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন হিটলার তাঁদের বংশধরের হাতেই বহাল রইল তাঁর স্মৃতির টুকরো। সেই হিসাবে বলা যায়, নিলামের বাজারে হিটলারের ঘড়িকেও টেক্কা দিয়েছে মারাদোনার জার্সি।