প্রত্যেকের আছে বাঁচার অধিকার। আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার অধিকার। আর তাই হিন্দুরা যেন ঘরে একটা অস্ত্র রাখেন। এরকমই মন্তব্য করে বছর শেষে বিতর্ক উসকে দিলেন বিজেপি নেত্রী সাধ্বী প্রজ্ঞা। এর সঙ্গে জুড়ে গেল ‘লাভ জিহাদ’ বিতর্কও। ঠিক কী প্রসঙ্গে নেত্রীর এই নিদান? আসুন শুনে নিই।
বছরের শেষে এসে বিতর্ক উসকে দিলেন বিজেপি সাংসদ সাধ্বী প্রজ্ঞা। কোনও রাখঢাক না করেই হিন্দুদের ঘরে ঘরে অস্ত্র রাখার নিদান দিলেন তিনি। আর সেই সঙ্গে ‘লাভ জিহাদ’ প্রসঙ্গেও করলেন বিতর্কিত মন্তব্য। তাঁর দাবি, পাপীদের এ পৃথিবী থেকে সরিয়ে না দিলে ঈশ্বরের পৃথিবীতে ভালবাসার প্রকৃত মর্ম রক্ষিত হবে না। আর তাই প্রতি-আক্রমণেরই নিদান দিয়েছেন তিনি। কিন্তু ভালবাসা রক্ষার খাতিরে কি ঘৃণাই ছড়ালেন নেত্রী? সেই প্রশ্নেই জমেছে বিতর্ক।
আরও শুনুন: মশলাতেই বাজিমাত, বিশ্বের সেরা খাবারের তালিকায় পঞ্চম স্থান ভারতীয় খানার
সাধ্বী প্রজ্ঞা এই যে প্রথম বিতর্কিত মন্তব্য করছেন, তা নয়। অতীতে বহুবার তিনি এ কাজ করেছেন। এমনকী কিছুদিন আগে হজরত মহম্মদকে ইঙ্গিত করে নূপুর শর্মার মন্তব্যে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, তাতে নাম না করে নূপুরকেই সমর্থন করেছিলেন তিনি। সেই সাধ্বীই এবার হিন্দুদের হাতে অস্ত্র রাখার নিদান দিলেন। রবিবার কর্ণাটকে হিন্দুদের এক সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তিনি তাঁর মত ব্যক্ত করে জানান, প্রত্যেকেরই আত্মরক্ষার অধিকার আছে। কেউ যদি জোর করে কারও ঘরে ঢুকে পড়ে, তবে অনুপ্রবেশকারীকে প্রতিহত করে জবাব দেওয়ার অধিকার নিশ্চিতই আছে সকলের। আর তাই হিন্দু সম্প্রদায়ের উচিত ঘরে যেন ধারালো অস্ত্র রাখা। নিদেনপক্ষে একটা সবজি কাটার ছুরি যেন থাকে। কেননা কখন কী পরিস্থিতি তৈরি হয় তার ঠিক নেই, এমনটাই মত নেত্রীর।
শুধু তাই নয়, লাভ জিহাদ প্রসঙ্গেও এই অনুষ্ঠানে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি। নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ওরা যদি ভালও বাসে, তার মধ্যেও জিহাদ থাকে। পক্ষান্তরে হিন্দুরা ভালবাসে ঈশ্বরকে, এমনটাই মত সাধ্বীর। আর তাই উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, পৃথিবী থেকে পাপীদের সরিয়ে না দিলে প্রকৃত ভালবাসার মর্ম বোঝা যাবে না। আর এরপরই তিনি বলেন, লাভ জিহাদে যারা মদত দেয়, তাদেরও একইরকম ভাবে জবাব দিতে হবে। হিন্দুরা যেন তাঁদের ঘরের মেয়েকে রক্ষা করে। ঘরে ধারালো অস্ত্র রাখা থেকে পৃথিবীকে পাপমুক্ত করা এবং লাভ জিহাদিদের জবাব দেওয়া- সাধ্বী প্রজ্ঞার বক্তব্যের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট। আর তা নিয়েই চলছে বিতর্ক।
আরও শুনুন: ‘মেরি ক্রিসমাস’ বললেই কারাবাস! কোন দেশে জারি এমন আইন?
ঘৃণাভাষণের অভিযোগ আগেও উঠেছে সাধ্বীর বিরুদ্ধে। তাতে অবশ্য তাঁকে দমানো যায়নি। খোলাখুলি অস্ত্র হাতে নেওয়ার নিদান দেওয়ার পাশাপাশি সাধ্বী পরামর্শ দিয়েছেন, হিন্দুরা যেন তাঁদের সন্তানদের মিশনারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না পড়ায়। তাতে নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি থেকে দূরে চলে যাবে বাচ্চারা। আর ভবিষ্যতে অভিভাবকদের পাঠিয়ে দেবে বৃদ্ধাশ্রমে। তাই তাঁর পরামর্শ, হিন্দুরা যেন তাঁদের সন্তানদের ধর্ম ও শাস্ত্রের শিক্ষা দেয়। বাড়িতে যেন নিয়মিত পুজো হয়, এমনটাই পরামর্শ বিতর্কিত বিজেপি নেত্রীর।