দীর্ঘ লড়াইয়ের শেষে যেন তৃপ্তির ঘুম। বিশ্বকাপ ট্রফিকে পাশে নিয়ে মেসির শিশুর মতো ঘুমের দৃশ্য দেখে সারা বিশ্ব উদ্বেল। খেলোয়াড়ি জীবনে যে মানুষটা প্রায় সব খেতাবই পেয়েছেন, শুধু বিশ্বকাপের জন্য তিনি কতখানি উদগ্রীব ছিলেন, এই ছবিই তার প্রমাণ দিচ্ছে। আর সে ছবি দেখে নিজের কথাই মনে পড়ল এক ফুটবলারের। কে তিনি? আসুন শুনে নিই।
বিশ্বজয়ের ঠিক একদিন পরে নেটদুনিয়ায় ছবিগুলি পোস্ট করেন খোদ লিওনেল মেসি। একটিতে দেখা যাচ্ছে বিশ্বকাপের ট্রফি পাশে নিয়েই ঘুমোচ্ছেন মেসি। অন্যটিতে দেখা যাচ্ছে, সদ্য ঘুম ভাঙা মেসি আগলে রেখেছেন ট্রফিটিকে। এমনকী চা পানের সময়ও ট্রফিটি হাতছাড়া করছেন না। ঠিক যেমন শিশু তার জিনিস ছাড়তে চায় না, সেভাবে ট্রফিটিকে আগলে আগলে রেখেছেন মেসি। আর এ ছবি দেখেই অতীতে ফিরে গিয়েছেন নিল ওয়ারনক। ১১ বছর আগে ঠিক এভাবেই তিনিও একটি ট্রফিকে পাশে নিয়ে শুয়ে ছিলেন। তবে তা অবশ্য বিশ্বকাপ নয়।
আরও শুনুন: মেসি কেন পেলেন গোল্ডেন বল? ‘ফিফা’র উপর রেগে আগুন ক্রোয়েশিয়ার সেই সুন্দরী
মেসির এই ছবিটি আসলে এক বৃত্ত সম্পূর্ণ হওয়ার দৃশ্য। এর আগে মেসির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, আরও একটি ব্যালন ডি-অর নাকি বিশ্বকাপ, প্রাপ্তির নিরিখে কোনটিকে এগিয়ে রাখবেন তিনি? মেসি নির্দ্বিধায় জানিয়েছিলেন, অবশ্যই বিশ্বকাপ। কিন্তু সেই ট্রফি এতদিন তাঁর কাছে ছিল অধরা মাধুরী। একের পর এক বিশ্বকাপে দারুণ পারফরমেন্স করেও, খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে তাঁকে। সম্ভবত জীবনের শেষ বিশ্বকাপে পৌঁছে তাই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন মেসি। গোটা টুর্নামেন্ট জুড়েই তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এই একটা খেতাব যে মেসির কাছে কতখানি আদরের ছিল, তা তাঁর জয়ের পরবর্তী উচ্ছ্বাস আর ট্রফিকে আগলে রাখার দৃশ্যই বুঝিয়ে দিয়েছে সকলকে। সেই ছবি রাতারাতি ভাইরাল হয় নেটদুনিয়ায়। আর তা দেখে পুরনো দিনের কথা মনে পড়েছে নিল ওয়ারনকের। ইংল্যান্ডের এই প্রাক্তন ফুটবলার, খেলোয়াড়ি জীবন পেরিয়ে এসে কোচ তথা ম্যানেজার হিসাবে খ্যাতি লাভ করেন। তাঁর প্রশিক্ষণে কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্স ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ সেকেন্ড ডিভিশনে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফার্স্ট ডিভিশনে জায়গা পায়। সেদিন তৃপ্তির ট্রফি নিয়ে এভাবেই ঘুমিয়েছিলেন তিনি। মেসিকে দেখে সে কথাই মনে পড়ে গিয়েছে তাঁর।
Deja duvet .. 🤣#Messi𓃵 pic.twitter.com/7PEsWxuTY3
— Neil Warnock (@warnockofficial) December 20, 2022
আসলে যে কোনও সৃষ্টিশীল মানুষের কাছে, তাঁর সৃষ্টির খেতাব যে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, মেসি আর ওয়ারনকের ছবি সে কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে। দুই ট্রফির মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক। দুজন ব্যক্তির মধ্যেও হয়তো কোনু তুলনাই হয় না। তবু লক্ষ্যপূরণের তৃপ্তির স্বাদ যে সর্বদা একই, তা বোধহয় বলাই যায়।