পেশায় সাধারণ চা-ওয়ালা। কিন্তু তার অসাধারণ কীর্তির খবর পেয়ে হতবাক সকলে। আইপিএস অফিসারের ভেক ধরে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার জাল বিছিয়েছিল এই ব্যক্তি। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
কোনও জাদুকর নয়, এক চা-ওয়ালার ভেলকি দেখেই চমকে গিয়েছেন সকলে। সেই ভেলকির জোরেই অন্তত ১৪ লক্ষ টাকা হাতে এসেছে তার, এমনটাই দাবি পুলিশের। সবটাই অবশ্য লোক ঠকিয়ে। চা-ওয়ালা নয়, নিজেকে একজন আইপিএস অফিসার বলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় দিত এই যুবক। আর সেই নকল পরিচয় কাজে লাগিয়েই অন্তত ৫০ জনকে প্রতারিত করে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা আদায় করেছে সে, খবর পুলিশ সূত্রে। একা হাতেই রীতিমতো বড়সড় এক আর্থিক প্রতারণার জাল বিছিয়ে ফেলেছিল গোয়ালিয়রের বাসিন্দা এই সাধারণ যুবক।
আরও শুনুন: ভক্তদের মন্দিরে যেতে অসুবিধে, রাস্তা বানাতে নিজের চাষের জমি দান করলেন মুসলিম কৃষক
কী ঘটেছে ঠিক?
জানা গিয়েছে, বছর তিরিশ বয়সের ওই যুবকের নাম গৌতম। অষ্টম শ্রেণির পরে আর পড়াশোনা এগোয়নি তার। কিন্তু তাতে দমে যায়নি সে। বরং চটজলদি পথেই সাফল্যের উপায় খুঁজে নিয়েছিল ওই যুবক। আর তাই একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে নিজের পরিচয় জাল করেছিল সে। সেখানে নিজেকে উত্তরপ্রদেশ ক্যাডারের একজন আইপিএস আধিকারিক হিসেবেই পরিচয় দিত গৌতম। এমনকি ভারচুয়াল দুনিয়ায় নিজের আসল নামও পালটে ফেলেছিল সে, নয়া নাম নিয়েছিল বিকাশ যাদব। ২০২০ সালে ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের তালিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাগ করে নিয়ে নিজের পরীক্ষা পাশের খবর জানিয়েছিল সে।
আরও শুনুন: রামরাজ্যে চটুল নাচের জেরেই বিপত্তি, সাসপেন্ড অযোধ্যার ৪ মহিলা পুলিশ
কিন্তু কেন এত কাণ্ড করেছিল ওই যুবক? আসলে এই সবই ছিল এক বড়সড় প্রতারণার ছক। জীবিকার তাগিদেই দিল্লিতে এসেছিল গৌতম। মুখার্জিনগর এলাকায় চা বিক্রি করত সে। এদিকে ওই অঞ্চলেই একাধিক কোচিং সেন্টার রয়েছে, যেখানে ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আর সেখানে পরীক্ষার্থীদের ভিড় দেখেই তার মাথায় এই প্রতারণার পরিকল্পনা আসে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেকে ওই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বলে পরিচয় দিয়ে এই পরীক্ষার্থীদের জন্য ফাঁদ পাতত ওই যুবক। মূলত তরুণীরাই ছিল তার নিশানায়। এরপর বিভিন্ন ফন্দি করে তাদের কাছ থেকে টাকা চাইত সে।
চলতি মাসেই তার নামে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এক মহিলা চিকিৎসক। তাঁর দাবি, মায়ের মারণ অসুখের অজুহাত দিয়ে তাঁর কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা চেয়েছিল ওই যুবক। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করে স্থানীয় পুলিশ। গৌতমের মোবাইল ফোনেই ওই ভুয়ো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলির হদিশ মেলে। তার ভুয়ো ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটিতে প্রায় ২০ হাজার অনুরাগী রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। তবে নিজে দেশের পুলিশ প্রশাসনে যোগ দিতে না পারুক, বমাল ধরা পড়ে আপাতত পুলিশের হেফাজতেই ঠাঁই হয়েছে ওই চা-ওয়ালার।