একটা হাতের ওজনই প্রায় ৮ কিলো। দৈর্ঘ্য প্রায় ২ ফুট। ১৬ বছরের কিশোরের এমন লম্বা হাত দেখে সকলেই অবাক। তবে এর জেরে বেশ বিপাকে ওই কিশোর। কারণ এক বিরল রোগের শিকার হয়েই কিশোরের হাতের এরকম অবস্থা। আসুন শুনে নিই তার কথা।
বয়স মাত্র ১৬। কিন্তু বয়সের তুলনায় তার হাত যেন একটু বেশিই লম্বা। সাধারণ ভাবে সেই হাত দেখলে কোনও কিশোরের হাত নয়, মনে হবে যেন কোনও অতিমানবের হাত। যা দেখে বিস্ময় জাগে, তাই-ই দুর্ভোগের কারণ হয়েছে এক কিশোরের ক্ষেত্রে। কেননা বিরল গোত্রের এক রোগের শিকার হয়েই এই কিশোরের হাত দুটির এমনই অবস্থা হয়েছে।
আরও শুনুন: ভক্তদের মন্দিরে যেতে অসুবিধে, রাস্তা বানাতে নিজের চাষের জমি দান করলেন মুসলিম কৃষক
কিশোরের নাম মহম্মদ কালিম, বাড়ি ঝড়খণ্ডের বোকারো শহরের কাছাকাছি এক গ্রামে। জন্মের সময়ই তার হাত দুটি নাকি সাধারণের থেকে একটু বড়ই ছিল। তখন অবশ্য এ নিয়ে কেউ চিন্তা করেননি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতের আকার আরও বাড়তে থাকে। স্থানীয়রা মহম্মদের হাতের এমন অবস্থা দেখে ‘দানবের হাত’ বলে আখ্যা দেয়। ছোট থেকেই এমন অদ্ভুত হাতের জন্য হাজারও কথা, ক্টূক্তি শুনতে হত মহম্মদকে। দেখেশুনে পরিবারের লোকজন তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। তখনই জানা যায়, এক বিরল রোগের কথা। যে রোগের জন্য তার হাতের এমন অবস্থা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, সারা পৃথিবীতে মাত্র ৩০০ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। যাঁদের মধ্যে মহম্মদও একজন। ‘ম্যাক্রোডাক্টাইল’ নামে এই বিরল রোগে আক্রান্তদের শরীরে অদ্ভুত ধরনের কিছু লক্ষণ দেখা যায়। সেই কারণেই মহম্মদের একটি হাতের ওজন হয়ে গিয়েছে প্রায় সাড়ে ৮ কেজি। এ ছাড়াও তাঁর কবজি থেকে হাতের আঙুলের দূরত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৪ ইঞ্চি। সবমিলিয়ে তাঁর তাঁর হাতের মোট দৈর্ঘ্য হয়েছে প্রায় ২ ফুট।
আরও শুনুন: বাবা অকালে প্রয়াত, ২৫ বছর পর মায়ের ফের বিয়ে দিলেন তরুণী
এমন অদ্ভুত রোগ ধরা পড়ার পরই কিশোরকে নিয়ে ভারী সমস্যায় পড়ে তাঁর পরিবার। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি অপারেশন করার নিদান দেন। সেই মতো ব্যবস্থাও করা হয়। কিন্তু অপারেশনের ফল হয় উলটো। হাতের আকার কমার বদলে আবার বাড়তে শুরু করে। বর্তমানে নিজে হাতে কিছুই করতে পারছেন না তিনি। স্নান করা থেকে আরম্ভ করে খাবার খাওয়া, সব কিছুর জন্যই তাঁকে ভরসা করে থাকতে হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের উপর। অন্যদিকে তাঁর বাবা একজন দিনমজুর মাত্র। তাই অন্য কোথাও চিকিৎসার জন্য ছেলেকে নিয়ে যাওয়াও তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়েই এমন দৈত্যাকার হাত নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে মহম্মদকে।