অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ নয়। বরং সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ। হিন্দু তীর্থযাত্রীদের মন্দিরে পৌঁছনোর জন্য পথ বানাতে নিজের চাষের জমিরই একাংশ দান করলেন এক মুসলিম কৃষক। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
মন্দিরে যেতে অসুবিধা হচ্ছে ভক্তদের। আর সেই অসুবিধা দূর করতেই এগিয়ে এলেন ৭৫ বছর বয়সি এক কৃষক। নিজের চাষের জমি থেকেই এক অংশ ছেড়ে দিয়েছেন তিনি, যাতে সেই অংশে মন্দিরে যাওয়ার জন্য পথ বানানো যায়। আশ্চর্যের কথা হল, ধর্মের দিক দিয়ে ওই ভক্তদের সঙ্গে কিন্তু কোনও যোগ নেই তাঁর। আদতে তিনি ইসলাম ধর্মাবলম্বী। কিন্তু কোনও প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম নয়, মানুষের পাশে দাঁড়ানোই যে সবচেয়ে বড় উপাসনা, সে কথাই যেন আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন ওই সাধারণ ব্যক্তি।
আরও শুনুন: হিন্দু স্ত্রীর জন্য নিজেই ধর্মান্তরিত হলেন মুসলিম ব্যক্তি, নাম হল কৃষ্ণ সনাতনী
কী ঘটেছে ঠিক?
জানা গিয়েছে, মহম্মদ সৈফু নামে ওই কৃষক তামিলনাড়ুর বাসিন্দা। রমানাথাপুরম জেলার অন্তর্গত এক ছোট্ট গ্রামে বসবাস করেন ৭৫ বছর বয়সের ওই ব্যক্তি। কাঞ্চিরঙ্গুডি মেলাভালাসাই নামের ওই গ্রামটিতেই রয়েছে আয়ানার মন্দির, যাকে পবিত্র তীর্থস্থান বলে মানেন স্থানীয় হিন্দুরা। কিন্তু ওই মন্দিরটিতে যাওয়ার জন্য আলাদা করে কোনও পথ নেই। চাষের জমির মধ্যে দিয়েই সেখানে যেতে হয়। ফলে চাষের মরশুমে মন্দিরে যাওয়ার উপায় থাকে না ভক্তদের। তাই ওই জমির মালিকের কাছেই এ বিষয়ে আরজি জানিয়েছিলেন ভক্তরা। আর তাঁদের আবেদনে সাড়া দিয়েই নিজের জমি থেকে ৮ ছটাক অংশ ছেড়ে দিয়েছেন মহম্মদ সৈফু, যাতে সেখানে মন্দিরে যাওয়ার জন্য পথ বানানো যায়। তাঁর এই কাজে তীর্থযাত্রীরা যে অত্যন্ত আনন্দিত, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও শুনুন: দুই সন্তানের একজন হিন্দু অন্যজন মুসলিম, মহিলার শেষকৃত্যে বাধল জোর বিবাদ
তবে জানা গিয়েছে, এই প্রথম নয়। আরও একবার এমনই স্বার্থত্যাগের নজির রেখেছেন ওই ব্যক্তি। স্থানীয় একটি দরগায় যেতেও একইভাবে সমস্যায় পড়তেন মুসলিমরা। সেখানে যাওয়ার পথটি বর্ষাকালে সমুদ্রের জলের নিচে চলে যেত। তাই ওই অঞ্চলে সরকারি রাস্তা নির্মাণের সময়ও নিজের ১৫ শতাংশ জমি দান করেছেন এই কৃষক।
ওই ব্যক্তি মনে করেন, ধর্মে ধর্মে বিভেদ না করে আগামী প্রজন্মের একসঙ্গেই শান্তিতে বসবাস করা উচিত। আর নিজের কাজের মধ্যে দিয়ে সেই সম্প্রীতিরই নজির গড়ে দিয়েছেন এই বৃদ্ধ।