হ্যারি পটারের গল্পে ছিল ‘ইনভিজিবিলিটি ক্লোক’ বা অদৃশ্য হওয়ার জামার কথা। যা গায়ে চাপালেই আর তাকে দেখতে পেত না কেউ। তবে কল্পজগতের সেই ‘ইনভিজ়িবিলিটি ক্লোক’ শুধুমাত্র গল্পে বাঁধা পড়ে নেই। বাস্তবেই নাকি এমন এক পোশাক তৈরি করে ফেলেছেন চিনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। যা পরলে সিকিউরিটি ক্যামেরাকেও অনায়াসেই ফাঁকি দেওয়া সম্ভব। কীভাবে কাজ করবে এই ম্যাজিক পোশাক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
এমনই আশ্চর্য জামা, যা গায়ে পরলে যে কেউ গায়েব হয়ে যাবেন সকলের চোখের সামনেই। এমনকি এই পোশাক গায়ে থাকলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্যামেরাও ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে হার মানবে। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। সম্প্রতি এমনই আশ্চর্য পোশাক বানিয়ে ফেলেছেন চিনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা।
আরও শুনুন: দেওয়ালে রং করলেই আলো জ্বলবে ঘরে, বিজ্ঞানীদের আশ্চর্য আবিষ্কার সৌর রং
চিনের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এই পোশাকের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইনভিসডিফেন্স’। যা দিনের আলোয় একেবারেই সাধারণ টি-শার্টের মতো। কিন্তু রাত বাড়লে এর অদ্ভুত এক ক্ষমতা প্রকাশ পায়। বিজ্ঞানীদের মতে এই বিশেষ পোশাক নাকি দেহের তাপমাত্রা বাইরে আসা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। অর্থাৎ ফোনের পর্দায় যেভাবে আলো কমানো কিংবা বাড়ানো যায়, তেমনভাবেই, দৈহিক তাপমাত্রার কতটুকু পোশাকের বাইরে আসবে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব এই পোশাকে।
কিন্তু তার সঙ্গে ক্যামেরায় ধরা না পড়ার সম্পর্কটা ঠিক কেমন?
আরও শুনুন: উলটোদিকে ঘুরল বয়সের চাকা, ইঁদুরের মতো মানুষের বয়সও কি কমিয়ে দেবে বিজ্ঞান?
আসলে রাতের অন্ধকারে কোনও মানুষকে খুঁজে পেতে অবলোহিত তরঙ্গ বা ইনফ্রারেড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এই ইনফ্রারেড ক্যামেরায় মানুষের দেহের উষ্ণতা ধরা পড়ে। পোশাক পরেও দেহের তাপমাত্রা যেহেতু লুকিয়ে রাখা যায় না, তাই লুকিয়ে থাকা মানুষকে খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তির তুলনা মেলা ভার। এছাড়াও বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জোরে বিভিন্ন ক্যামেরা বা গাড়ি সহজেই মানুষ চিনে নিতে পারে। এই পোশাক ব্যবহার করে সেই আশঙ্কা থেকে সহজেই মুক্তিলাভ সম্ভব। কারণ ‘ইনভিসডিফেন্স’ ব্যবহার করলে ক্যামেরা শুধু বুঝতে পারবে কিছু একটা সামনে রয়েছে, কিন্তু নির্দিষ্ট ভাবে কোনও মানুষই আছে কি না, তা চিহ্নিত করতে পারবে না। তবে এখনও এই পোশাক পরে মানুষের চোখকে ফাঁকি দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই নিজেদের প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করে তোলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন এই পড়ুয়ারা।