মায়ের মৃত্যুর পর শেষকৃত্য নিয়েই গোলমালে জড়াল দুই ভাই। একজন হিন্দু, অন্য ভাই ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। এই পরিস্থিতিতে নিজের নিজের ধর্মমতকে প্রাধান্য দিতে গিয়েই উসকে উঠল বিতর্ক। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
কথায় বলে, ভাগের মা গঙ্গা পায় না। সে কথাই যেন একভাবে সত্যি হয়ে গিয়েছে এই মহিলার ক্ষেত্রে। মৃত্যুর পর তাঁর দেহের অন্ত্যেষ্টি হবে কোন পথে, তাই নিয়েই গোলমালে জড়িয়েছে তাঁর দুই ছেলে। মায়ের মৃত্যুর পরও শোককে ছাপিয়ে গিয়েছে ধর্ম। জানা গিয়েছে, সহোদর হলেও ধর্মবিশ্বাসের ক্ষেত্রে একই পথের পথিক নয় ওই দুই ব্যক্তি। এক ভাই ধর্মে হিন্দু, অন্যজন মুসলিম। সুতরাং মায়ের দেহ কবর দেওয়া হবে, নাকি চিতার আগুনে দাহ করা হবে, তা নিয়েই সমস্যা। নিজের ধর্মকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে রীতিমতো ঝামেলা বেধে গিয়েছে দুই ভাইয়ের মধ্যে।
আরও শুনুন: মাতৃগর্ভ কি ‘চাষের জমি’! জনসংখ্যা নিয়ে মুসলিম নেতাকে তুলোধোনা অসমের মুখ্যমন্ত্রীর
জানা গিয়েছে, বিহারের বাসিন্দা ওই মহিলার নাম রায়কা খাতুন। জীবদ্দশায় দুবার বিয়ে করেছিলেন ওই মহিলা। প্রথমবার এক মুসলিম ব্যক্তির সঙ্গেই বিয়ে হয়েছিল তাঁর। কিন্তু প্রায় বছর ৪৫ আগে সেই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এরপরে লাখিসরাই জেলার বাসিন্দা, রাজেন্দ্র ঝা নামের এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন ওই মহিলা। তাঁর দ্বিতীয় স্বামী ধর্মে হিন্দু। স্থানীয় রীতিনীতি মেনে দ্বিতীয় বিয়ের সময় নিজের ধর্ম পরিবর্তন করেন মহিলা, নতুন নাম হয় রেখা দেবী। এদিকে দুই বিয়ের সূত্রেই দুই সন্তান রয়েছে তাঁর। প্রথম বিয়ের সন্তান মহম্মদ মহফিল তাঁর বর্তমান পরিবারেই থাকত। তাঁর দ্বিতীয় বিয়ের সন্তানের নাম বাবলু ঝা। মহিলার মৃত্যুর পর তাঁর শেষকৃত্যের পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক বেধেছে এই দুই ভাইয়ের মধ্যেই।
আরও শুনুন: মৃত্যুতে বিভেদ নেই, একই স্থানে হিন্দু-মুসলমান-খ্রিস্টানদের সৎকারের আয়োজন দেশে
যদিও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এতদিন একসঙ্গেই বসবাস করেছেন ওই দুই ব্যক্তি। কখনোই ধর্ম নিয়ে তাঁদের মধ্যে কোনও বিবাদ বিসংবাদ হতে দেখা যায়নি। এমনকি বছর দশেক আগে দ্বিতীয় স্বামীর মৃত্যুর পরে দুই ছেলের সঙ্গে এক বাড়িতেই থাকতেন ওই মহিলা। সম্প্রতি বয়সজনিত কারণেই মৃত্যু হয় তাঁর। আর এরপরেই আকস্মিক ভাবে বিতর্ক উসকে ওঠে। অবস্থা এমন ঘোরালো হয়ে দাঁড়ায় যে শেষমেশ পুলিশের কাছেও খবর পৌঁছয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপেই দাহ করা হয়েছে মৃতা মহিলাকে।