কাঁথির জনসভায় জননেতার মেজাজেই অভিষেক। ভাঙলেন অধিকারী গড়ের মিথ। জনসভায় যাওয়ার পথে কাঁথির গ্রামে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কাঁথির জনসভা থেকে বিস্ফোরক অভিষেক। ‘ন্যূনতম মূল্যবোধ থাকলে ইস্তফা দিন’, চ্যালেঞ্জ শিশির-দিব্যেন্দুকে। অভিষেকের কাঁথিতে সভার দিনই ডায়মন্ড হারবারে সভা শুভেন্দুর। ‘সাংসদ সর্বভুক’ ঈঙ্গিতে আক্রমণ অভিষেককে। কলেজিয়াম বিতর্কে এবার সরব উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে হারের পর ব্রাজিল শিবিরে দুঃসংবাদ।
হেডলাইন:
বিস্তারিত খবর:
1. কাঁথির জনসভা থেকেই মেদিনীপুরের অধিকারী গড়ের মিথকে ধুলোয় মেশালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই জনসভা নিয়ে এমনিতেই উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। সভার বিরোধিতা করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যদিও আদালত সভার অনুমতিই দিয়েছিল। সেই সভা থেকেই মেদিনীপুরের অধিকারী গড়ের তকমাকে ভাঙলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সাফ জানিয়ে দিলেন, অধিকারী গড় নয়, তিনি এসেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষের গড়ে। নাম না করে এদিন শুভেন্দুর উদ্দেশে একের পর এক তোপ দাগেন অভিষেক। একের পর এক তথ্য তুলে ধরে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন শুভেন্দুর উদ্দেশে। সিবিআই-ইডি-এনআইএ’র মামলায় জামিন করিয়ে দেওয়ার নামে তোলাবাজিরও অভিযোগ আনেন শুভেন্দুর বিরুদ্ধে। তাঁর সভার আগে ভূপতিনগরের বোমা বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করেও চলছিল শাসক-বিরোধী জোর তরজা। কাঁথির সভায় শুভেন্দু অধিকারী বোমাবাজির পরিকল্পনা করেছিলেন বলেই দাবি করেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। শুভেন্দুকে RAC বিধায়ক বলে কটাক্ষ করে অভিষেকের দাবি, ‘নন্দীগ্রামে ভোট বাতিল হবেই’। পাশাপাশি স্বাধীনতা সংগ্রামে মেদিনীপুরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে তিনি সাম্প্রতিক রাজনীতি নিয়েও কার্যত তুলোধোনা করেন শুভেন্দুকে। তাঁর কথায়,”যে মাসে তাম্রলিপ্ত সরকার তৈরি হয়েছিল, সেই ডিসেম্বরই বিশ্বাসঘাতক দল ছাড়ল। ইডি-সিবিআইয়ের ভয়ে, নিজের ঘাড়, পিঠ বাঁচাতে দু’বছর আগে মেদিনীপুরের সম্মান বিক্রি করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে বিশ্বাসঘাতকরা। মেদিনীপুরের মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না।” এরপরই স্থানীয় নেতৃত্বকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশ, “ডিসেম্বর জুড়ে ‘বেইমানমুক্ত; ‘বিশ্বাসঘাতকমুক্ত’ মেদিনীপুর তৈরির কর্মসূচি নিন।” ডিসেম্বর নিয়ে এর আগে বহুবার রাজনীতি সরগরম করেছে বিজেপি। কাঁথির মাটি থেকে তারই পালটা দিলেন অভিষেক, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
2. কাঁথির জনসভার আগে জননেতা হয়েই সাধারণের মানুষের পাশে এসে দাঁড়ালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সভায় যাওয়ার সময় একটি গ্রামে যান তিনি। কথা বলেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। অভিষেককে সামনে পেয়ে অপ্রাপ্তির ক্ষোভ উগরে দেয় জনতা। গ্রামবাসীরা জানান, রেশন পেলেও, জলকষ্টে ভুগছেন তাঁরা। এ ছাড়া এলাকায় জল জমলেও তা সহজে নামে না। এ নিয়ে উচ্চ নেতৃত্বের কাছে দরবার করেও সুরাহা মেলেনি। মানুষের দুর্দশার কথা শুনে নিয়ে সভামঞ্চ থেকেই মারিশদার পাঁচ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান এবং অঞ্চল সভাপতিকে অবিলম্বে ইস্তফার নির্দেশ দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা না দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। সাধারণ মানুষের অসুবিধা দূর করতে কাঁথির মঞ্চ থেকেই ‘এক ডাকে অভিষেক’ প্রকল্প চালু করেছেন তিনি, যেখানে নির্দিষ্ট ফোন নম্বরে অভাব-অভিযোগ নিয়ে সরাসরি কথা বলা যাবে তাঁর সঙ্গে। পাশাপাশি এদিন তিনি স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, নেতাদের যেতে হবে মানুষের কাছে। মমতা বন্দ্যপাধ্যায়ের নমুনা টেনে অভিষেক জানান, স্বয়ং দলনেত্রী গ্রামে গ্রামে যেতে পারলে নেতারা যেতে পারবেন না কেন! পঞ্চায়েত নিয়েও এদিন তিনি সাফ জানিয়ে দেন, মানুষের সার্টিফিকেট পেলে তবেই পঞ্চায়েতের টিকিট মিলবে। কোনও নেতার সুপারিশে নয়। তৃণমূল সরকার যে মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ, এদিন কথায়-কাজে তা আরও একবার স্পষ্ট করেই দিতে চেয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
শুনে নিন বিশেষ বিশেষ খবর।