ধর্মান্তরিত হলে আর মিলবে না সংরক্ষণের সুবিধা। একটি মামলার প্রেক্ষিতে এমনটাই রায় দিল মাদ্রাজ হাই কোর্ট। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
হিন্দু ধর্মের কোনও ব্যক্তি যদি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন, তবে আগের ধর্ম মোতাবেক জাতিগত সংরক্ষণের সুবিধা আর পাবেন না তিনি। সাফ নির্দেশ উচ্চ আদালতের। এক ব্যক্তির সংরক্ষণের আরজির প্রেক্ষিতে এমনটাই রায় দিল মাদ্রাজ হাই কোর্ট।
আরও শুনুন: ‘হিন্দুদেরও কমবয়সি মেয়ে বিয়ে করা উচিত’, জনসংখ্যা প্রসঙ্গে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য মুসলিম নেতার
কী ঘটেছে ঠিক?
জানা গিয়েছে, টিএনপিএসসি, অর্থাৎ তামিলনাড়ু পাবলিক সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ ছিল, তিনি অনগ্রসর শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত হলেও কমিশন তাঁকে সংরক্ষণের সুবিধা দেয়নি। আসলে ২০১৮ সালে তামিলনাড়ুর সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসেছিলেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু ফল প্রকাশ হলে দেখা যায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের তালিকায় তাঁর নাম নেই। এরপরেই তথ্য অধিকার আইনে মামলা করেন ওই ব্যক্তি। সেই সূত্রে দেখা যায়, তিনি নিজেকে অনগ্রসর শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত বলে দাবি করলেও কমিশন সেই দাবি মানেনি। তাঁকে অসংরক্ষিত শ্রেণির পরীক্ষার্থী হিসেবেই দেখা হয়েছে।
আরও শুনুন: হার মানবে সিনেমাও! জীবনবিমার ২ কোটি টাকা পেতে স্ত্রীকে খুনের নিখুঁত ছক ব্যক্তির
অভিযোগকারী ব্যক্তি জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর পরিবার হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে অনগ্রসর শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। কিন্তু ২০০৮ সালে তাঁরা ধর্ম পরিবর্তন করে মুসলিম হয়ে যান। তাঁর দাবি, সংবিধান কোনও ব্যক্তিকে নিজের ইচ্ছেমতো ধর্মাচরণের অধিকার দিয়েছে। আর সেই অধিকার প্রয়োগ করতেই তিনি ধর্মান্তরিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু তাঁর আশা ছিল, প্রয়োজনে নিজের হিন্দু পরিচয়কেও তিনি ব্যবহার করতে পারবেন। সেই কারণেই পরীক্ষায় সংরক্ষণের সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। এদিকে হিন্দু ধর্মের অনগ্রসর শ্রেণিগুলির পাশাপাশি মুসলিমদের কোনও কোনও সম্প্রদায়কেও অনুন্নত বলে গণ্য করা হয় সে রাজ্যে। ফলে সব মিলিয়ে তাঁর সংরক্ষণের সুবিধা নাকচ হতে পারে, এমন আশঙ্কা কখনোই করেননি ওই ব্যক্তি। কিন্তু সেই আশাতেই এবার জল ঢেলে দিল জাস্টিস জিআর স্বামীনাথনের বেঞ্চ। হিন্দু ধর্মের অনুশাসন অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি কেবল জন্মসূত্রেই নিজেকে হিন্দু বলে দাবি করতে পারেন। ফলে ধর্মান্তরিত হওয়ার পর তিনি কোনওভাবেই আর হিন্দু ধর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকছেন না। সুতরাং আগের ধর্মের সঙ্গে জড়িত সামাজিক সুযোগসুবিধাও আর পাবেন না ওই ব্যক্তি, এমনটাই জানিয়ে দিল তামিলনাড়ুর উচ্চ আদালত।