মাথার উপর ঋণের খাঁড়া। তাও প্রায় ৫২ কোটি টাকার ধাক্কা। তাতেও ভেঙে পড়েননি তিনি। সব হারিয়ে ফের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই লড়ছেন এক ব্যবসায়ী। আর তাঁর জীবনসংগ্রামই অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে বহু মানুষকে। আসুন শুনে নিই তাঁর গল্প।
হাল ছেড়ো না… বরং দেওয়ালে পিঠ ঠেকলে ঘুরে দাঁড়ানোই শ্রেয়। নিজেকে বোধহয় এমনটাই বুঝিয়েছেন দেউলিয়া এক ব্যবসায়ী। সব হারিয়েও তাই ভেঙে পড়েননি। বরং ভাঙাচোরা জীবনের গল্পগুলোকে জোড়া লাগাতে শুরু করেছেন নতুন যাত্রা, নতুন উদ্যমে।
আরও শুনুন: বিছানায় বসে যুবকেরা মগ্ন উরফি জাভেদে, তরুণদের মোক্ষম খোঁচা চেতন ভগতের
অথচ এক সময় কী না ছিল তাঁর! তাঙ্গ জিয়ান নামে চিনা এই ব্যবসায়ীর ব্যবসায় হাতেখড়ি অল্প বয়সেই। পরিশ্রম আর বুদ্ধিমত্তাকে সম্বল করে দ্রুত উত্থান তাঁর। একটা সময় তাঁর একাধিক রেস্তরাঁ রমরমিয়ে চলত। পাল্লা দিয়ে বেড়েছিল ব্যক্তিগত সম্পত্তিও। প্রাসাদোপম বাড়ি থেকে বিলাসবহুল গাড়ি- ছিল সবই। ছিল বিলাসিতায় মোড়া জীবন। একজন কোটিপতি ব্যবসায়ীর জীবনযাপন যেমন হয়, এঁর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম কিছু হয়নি। কিন্তু জীবন যে কখন কাকে কোন বাঁকের মুখে এনে দাঁড় করায়, তার ঠিক নেই। সৌভাগ্যের আলো একদিন নিভে এল। ব্যবসায়ী দেখলেন জীবনের অন্ধকার মুখ। রেস্তরাঁ ব্যবসায় সব ঠিকঠাকই চলছিল। পাশাপাশি অন্য একটি ব্যবসা শুরু করেন তিনি। করেন মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ। আর সেখান থেকেই ভরাডুবির সূত্রপাত। দ্বিতীয় ব্যবসাটি কিছুতেই জমল না। উলটে যা ছিল, একে একে সবই হারাতে শুরু করলেন তিনি। একটা সময় ঋণের বোঝা এত বেড়েছিল যে, রেস্তরাঁগুলো বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন তিনি। বাড়ি-গাড়িও যায়। মাথার উপর এখনও ৫২ কোটি টাকার ঋণ। ব্যাঙ্ক তাঁকে দেউলিয়া ঘোষণা করে।
আরও শুনুন: সঙ্গিনীর সঙ্গে সঙ্গমের উত্তেজনায় মৃত্যু বৃদ্ধের, দেহ লোপাটে সহায়তা খোদ মহিলার স্বামীর
জীবনের এরকম বিপর্যয়ের বিন্দু থেকেই শুরু হয় তাঁর ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। সব হারিয়ে রাস্তার পাশে একটা সসেজ তৈরির দোকান খোলেন তিনি। আপাতত এই সসেজ বিক্রিই তাঁর রুটি-রুজি। তবে এখানেই থেমে থাকতে চান না তিনি। পণ করেছেন, এই দোকানের বিক্রি বাড়িয়েই একদিন সব ধার শোধ করে ফেলবেন। কতদিনে তা সম্ভব হবে তা জানেন না অবশ্য। তবে আত্মবিশ্বাস আছে যে, একদিনে না হলেও, একদিন তা হবেই। সম্প্রতি এই ব্যবসায়ীর লড়াইয়ের কথা সামনে আসে। আর তাতে অনেকেই অবাক হয়ে যান। তিনি নিজে অবশ্য তাঁর কাজে অবাক হচ্ছেন না। তাঁর বক্তব্য, জীবনে তো কেউ সঙ্গে করে কিছু নিয়ে আসে না। তাহলে সব হারিয়ে ভেঙে পড়ারই বা দরকার কী? হারালে আবার নতুন করে শুরু করা যায় বইকি। তাঁর এই দৃঢ়তাই অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে বহু মানুষকে। ব্যবসায়ী তাঙ্গ জিয়ান সকলের উদ্দেশে তাই বলছেন, কোনও কিছু হারিয়েই তাই ভেঙে পড়তে নেই। বরং যেখানে এসে নিঃস্ব হওয়া, সেখান থেকেই শুরু করতে হয় সর্বস্ব ফিরে পাওয়ার লড়াই।