জন্ম থেকেই নেই দুটি পা। কিন্তু মনের জোর রয়েছে প্রবল। আর সেই মনের জোরেই স্কুল বাস্কেটবল টিমে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। শুনতে অবাক লাগলেও জীবনের সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে এমনই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এই যুবক। আসুন শুনে নেওয়া যাক, তাঁর হার না মানার কাহিনী।
জন্ম থেকেই হাঁটতে চলতে অক্ষম। কারণ জন্মের সময় থেকেই তাঁর শরীরে ছিল না দুটি পা। সাধারণত কেউ এমন পরিস্থিতির শিকার হলে বাকী জীবনটা অন্যের দয়াতেই বেঁচে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু সেই ধারাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন এই যুবক। শরীরে এমন প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও বাস্কেটবল খেলতে মাঠে নামেন তিনি। এমনকি স্কুলের বাক্সেটবল টিমেও ইতিমধ্যেই জায়গা হয়েছে তাঁর।
আরও শুনুন: চুরি করতে নয়, আরামের স্নানের লোভেই অন্যের বাড়িতে অনুপ্রবেশ যুবকের
শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করার কাহিনী এর আগেও আমাদের শুনিয়েছেন মাসদুর রহমানের মতো ব্যক্তিত্বরা। কাঠের পায়ে ভর করেই তিনি সাঁতরে পার করেছিলেন ইংলিশ চ্যানেল। এই যুবকের গল্পও যেন তাঁর সেই লড়াই মনে করায়। জোসিয়া জনসন নামে এই যুবক আমেরিকার কেন্টাকি প্রদেশের বাসিন্দা। জন্ম থেকেই তাঁর শরীরে নেই দুটি পা। ফলত নিজের পায়ে হেঁটে চলে বেড়ানোর কোনও ক্ষমতা নেই তাঁর। কিন্তু রয়েছে প্রবল মনের জোর। আর সেই জোরের উপর ভর করেই এক অসাধ্য সাধন করে দেখিয়েছেন তিনি। সাধারণত যেকোনও আউটডোর গেমেই খালোয়াড়দের দৌড়ে পারদর্শী হতে হয়। বাস্কেটবলের মতো খেলায় দৌড়ের পাশাপাশি লাফ দিতেও জানতে হয় খেলোয়াড়দের। বলাই বাহুল্য এর কোনওটিই জোসিয়ার পক্ষে করা সম্ভব নয়। তবু ছোটবেলা থেকেই তাঁর শখ বাস্কেটবল খেলবেন। কিন্ডারগার্টেনে পড়ার সময় থেকেই এই খেলাটির প্রতি প্রবল আগ্রহ জন্মায় তাঁর। পরবর্তীকালে যা একপ্রকার জেদে পরিণত হয়। তাঁর জীবনের লক্ষ্যই ছিল নামকরা বাস্কেটবল খেলোয়াড় হওয়া। অবশেষে সেই স্বপ্নের সিড়ির বেশ কয়েকটি ধাপ পেরোলেন তিনি।
আরও শুনুন: মৃত প্রিয়জনকে আইনি বিয়ের সম্মতি মেলে এই দেশে, কী নাম এই প্রথার?
অদম্য মনের জেদ আর সাহসের উপর ভর করে বর্তমানে তাঁর জায়গা হয়েছে স্কুলের বাস্কেটবল টিমে। নিজের যোগ্যতার বলেই এই স্থান অর্জন করেছেন তিনি। সেকথা নিজে মুখেই জানিয়েছেন তাঁর স্কুলের বাস্কেটবল কোচ বয়েড। তিনি বলেন জোসিয়া নাকি রোজ বল নিয়ে অনুশীলন করতে আসতো। শারীরিক অক্ষমতার কারণে লাফাতে না পারলেও, বল নিয়ে বাস্কেটে ভরার অসাধারণ কিছু কৌশল জানা ছিল তাঁর। তাঁর সেই অসাধারণ শৈলী দেখার জন্য রীতিমতো ভিড় জমে যেত স্কুলের গ্যালারিতে। রোজই নাকি অনুশীলনের পর স্কুলের দলে সুযোগ পাওয়ার ইচ্ছারপ্রকাশ করতেন জোসিয়া। অবশেষে তাঁর সেই স্বপ্নকেই সত্যি করার অনুমতি দিলেন কোচ বয়েড। তিনিও মনে করেন জোসিয়ার শারীরিক অক্ষমতা কখনোই তাঁর খেলার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। এবং আগামী দিনে আরও বড় মঞ্চে জোসিয়াকে দেখতে চান তিনি।