যে বাড়িতে বসবাস করছেন, সেখানেই যে এমন গোপন বার্তা লুকিয়ে ছিল, তা জানতেই পারেননি বাড়ির বাসিন্দারা। ঘটনাচক্রেই হাতে এল ১৩৫ বছর ধরে লুকিয়ে থাকা ওই সংকেত। কী লেখা তাতে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
শোনা যায়, কোনও জাহাজ বিপদে পড়লে বোতলের মধ্যে বার্তা পুরে সমুদ্রে ভাসিয়ে দিতেন জাহাজের কোনও আরোহী। কখনও কখনও সেই বোতল মানুষের হাতে এসে পৌঁছাতে কেটে যেত অনেকগুলো বছর। এখানেও যেন ঘটেছে তেমনই এক ঘটনা। তফাতের মধ্যে, কোনও সমুদ্রের জলে ভেসে আসেনি সেই বোতল। বরং তা লুকিয়ে ছিল বাড়ির দেওয়ালের মধ্যে। আর সেইভাবেই কেটে গিয়েছে ১৩৫টি বছর। অথচ কেউ ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেনি তার অস্তিত্বের কথা।
আরও শুনুন: হেঁটেচলে বেড়ায় গাছ, করে স্থান পরিবর্তনও… এ কি ভূতুড়ে কাণ্ড?
কী ঘটেছে ঠিক? তাহলে খুলেই বলা যাক।
ঘটনাস্থল স্কটল্যান্ডের এডিনবরার একটি বাড়ি। গৃহকর্ত্রী ইলিদ স্টিম্পসন সম্প্রতি বাড়ির কয়েকটি কাজ করানোর জন্য কলের মিস্ত্রিকে ডেকে পাঠান। বাড়ির একটি দেওয়ালে পাইপলাইনের কাজ হওয়ার কথা ছিল। আর সেই কাজ করতে গিয়েই এই আশ্চর্য আবিষ্কার করে বসেন পিটার অ্যালান নামের ওই মিস্ত্রি। কাঠের দেওয়ালে হাতুড়ি দিয়ে গর্ত করতেই সেখান থেকে উঁকি দেয় একটি বোতলের মুখ। দেওয়ালের ভিতরে কী করে বোতল এল বুঝতে না পেরে তিনি তড়িঘড়ি বাড়ির কর্ত্রীকেই ডেকে আনেন। ওই মহিলার সামনেই বোতলটি দেওয়ালের মধ্যে থেকে বের করে আনলে দেখা যায়, মুখবন্ধ বোতলটির মধ্যে এক টুকরো কাগজ লম্বা করে পাকিয়ে ঢোকানো রয়েছে। বোতলটি দেখে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিল, তার বয়স ১০০ বছরেরও বেশি। কিন্তু ভেতরের কাগজটি পড়ার পর দেখা যায়, আদতে আরও আগে বোতলটি ওখানে রাখা হয়েছিল।
আরও শুনুন: ফুলে সাজানো গাড়িতে নয়, কফিনে চড়ে বিয়ের আসরে এলেন বর
দেখা যায়, বোতলের ভিতরের কাগজটি আদতে একটি চিঠি। চিঠিটি লেখা হয়েছিল ১৮৮৭ সালের ৬ অক্টোবর তারিখে। কিন্তু সেখানে যা লেখা, তার ঠিকঠাক মানে বুঝে উঠতে পারেননি ওই মহিলা। চিঠিতে লেখা ছিল, ‘‘জেমস রিচি এবং জন গ্রিভ এই মেঝেটি তৈরি করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা এই বোতলের হুইস্কি খাননি। ৬ অক্টোবর, ১৮৮৭। যে এই বোতলটি খুঁজে পাবে সে নিশ্চয়ই ভাবতে পারে যে আমরা রাস্তার ধুলোর মতো উড়ে গিয়েছি।’’ ওই মহিলার ধারণা, এই অর্থহীন লেখার মধ্যে কোনও গোপন বার্তা লুকনো রয়েছে। আসলে এর মধ্যে দিয়ে কোনও গুপ্তধনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে কি না, সেই সন্দেহও করছেন তিনি। তবে এই বার্তার আসল অর্থ উদ্ধার করা সম্ভব হোক বা না হোক, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য চিঠিটি সংরক্ষণ করে রাখবেন বলেই ঠিক করেছেন ওই মহিলা।