পথের পাশে বাগানে ফুলে ফুলে ঢাকা একটি গাছ। লাল ফুলের বাহারে মন ভালো হয়ে যাওয়ার কথা। অথচ তা দেখেই চমকে উঠলেন এক মহিলা। কারণ, এই গাছ নাকি সায়ানাইডের থেকেও ৬০০০ গুণ বিষাক্ত। আসুন শুনে নিই সেই ঘটনা।
চমৎকার লাল রঙের ফুলে ছেয়ে আছে গাছ। দেখে মন ভালো হয়ে যায়। কিন্তু যে গাছ মানুষের প্রাণ বাঁচায়, সে নাকি প্রাণ নিতেও পারে। তথ্য বলছে, এই গাছ নাকি সায়ানাইডের থেকে অন্তত ৬০০০ গুণ বিষাক্ত। সম্প্রতি এই গাছই খুঁজে পেলেন ব্রিটেনের এক মহিলা।
আরও শুনুন: জঙ্গিহানা নয়, প্রেম-পরকীয়া-যৌনতার ছুরির কোপেই খুন বেশি মানুষ
রাস্তার পাশে একটি বাগানে গাছটি দেখা মাত্র খোঁজখবর শুরু করেন ওই মহিলা। বাগানের কর্মীদের ডেকে গাছটির নাম জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন, গাছটির নাম ‘রাইসিনাস’। নাম থেকেই এই মারণগাছে সম্পর্কে আন্দাজ পান মহিলা। তখুনি আরও বিস্তারিত তথ্য-তালাশ করে তিনি বোঝেন, এটি আসলে বিপজ্জনক ‘রাইসিনাস কমিউনস’ (Ricinnus Communis)। এই গাছটি থেকে এমন একটি পদার্থ পাওয়া যায়, যা মারাত্মক বিষাক্ত। সায়ানাইডের থেকেও প্রায় ৬০০০ হাজার গুণ বিষময় সেই পদার্থ। মহিলা তাঁর স্বামীকে গাছটি সম্পর্কে জানান। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনকেও সতর্ক করেন। জানা যাচ্ছে, গিনেস বুকেও গাছটির নাম আছে। সেখানে এই গাছকে এর বীজের কারণে বিশ্বে সবথেকে বিষাক্ত হিসাবেই উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও শুনুন: মানুষকে বাঁচাতে এসেছে মঙ্গল গ্রহ থেকে, আজব দাবি খুদের, কিন্তু কেন?
গাছটিকে সাধারণ ভাবে ‘ক্যাস্টর অয়েল প্ল্যান্ট’ হিসাবেও অনেকে চেনেন। এর থেকে ‘রাইসিন’ নামে একটি পদার্থ পাওয়া যায়, যা মারাত্মক বিষাক্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর বীজ থেকে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সে কারণেই গিনেস বুকে একে বিষাক্ত তকমা দেওয়া হয়েছে। ‘রাইসিন’ নামক পদার্থটি একরকম নিষিদ্ধ, কেননা তা জৈব অস্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হলে বিপন্ন হবে মানবসমাজ। এই গাছের বীজে সেই পদার্থটিরই দেখা মেলে। কতটা মারণক্ষ্মতা সম্পন্ন এই পদার্থ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৭২ কেজি ওজনের কোনও ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে পদার্থটির ৭০ মাইক্রোগ্রামেই। অর্থাৎ এই গাছ যে বিপজ্জনক তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আর তাই বাগানে এই গাছ দেখে চমকে উঠেছিলেন মহিলা। প্রশ্ন উঠছে তাহালে বাগানে কেন এরকম গাছ লাগানো হয়েছিল? জানা গিয়েছে, বাহারি ফুলের গাছ হিসাবেই তা রোপণ করা হয়েছিল। এরকম বহু ফুলের গাছই আছে যেগুলি বিষময় হয়ে উঠতে পারে। এমনকী বিখ্যাত ড্যাফোডিলেরও বিষাক্ত হয়ে ওঠার ক্ষমতা আছে। তবে সে সবই সম্ভব যদি গাছগুলির বা তা থেকে প্রাপ্ত পদার্থের অপব্যবহার করা হয়। এই গাছটির ক্ষেত্রেও সে কথা মাথায় রাখা হয়েছে। ফুল থেকে বীজ হয়ে ওঠার আগেই তা সরিয়ে দেওয়া হয়। যাতে তা সাধারণ মানুষের বিপদ ডেকে আনতে পারে। তবে মহিলার সতর্কবার্তা পেয়ে এই গাছ সম্পর্কে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বনেরই পদক্ষেপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।