দুজনের শরীরের একটা দিক মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। দুই শরীর মিলে তাঁদের একটাই শরীর। যদিও তাঁরা দুই বোন। এর মধ্যে আবার একজন প্রেম করেন, অন্যজন করেন না। তা যিনি প্রেম করেন তিনি কেমন করে সময় কাটান প্রেমিকের সঙ্গে? দেখাই বা হল কীভাবে! উত্তর দিয়েছেন দুই বোনই।
দিব্যি হাসিখুশি দুই বোন। তবে তাঁদের দুই বোন নাকি এক বোন বলা হবে, তা নিয়ে ধন্দ আছে। কেননা তাঁরা কনজয়েন্ড (Conjoined) যমজ, অর্থাৎ তাঁদের শরীরের একজনের অঙ্গ মিশে গিয়েছে অন্যজনের অঙ্গে। তাঁরা অবশ্য বলছেন, তাঁরা মোটেও এক নয়। হতে পারে শরীরের কিছু কিছু অংশ তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ভাগ করছেন, তবে তাঁদের হৃদযন্ত্র আলাদা। আর মস্তিষ্কও আলাদা। অতএব শরীরে শরীর জোড়া থাকলেও তাঁরা দুজন দুটো আলাদা মানুষ।
আরও শুনুন: কখনোই পিতৃহারা হবে না সন্তানেরা, ৮ পুরুষের থেকে ১১ সন্তান লাভের পর মন্তব্য তরুণীর
মেক্সিকোর দুই বোন, কারমেন আর লুপিতার ক্ষেত্রে একেবারে সত্যি সে কথা। দুজন প্রকৃতিগত বেশ আলাদাই। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে নিজেদের গল্প শোনাচ্ছিলেন এই দুই বোন। জানাচ্ছিলেন, তাঁদের শরীরের কথা। ধড় অংশ মিশে আছে একে অন্যের সঙ্গে। পেলভিস অংশও একটিই। পাচন ও জনন প্রক্রিয়ায় অঙ্গসমূহ মোটামুটি মিলেমিশেই আছে। এই যখন অবস্থা, তখন জীবনযাপনে তাঁদের কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। সে কথা তাঁরা মেনেই নিয়েছেন। কিন্তু শুধু শরীর নিয়ে ভাবলে চলবে কেন! মন তো আছে! মনের দিকে থেকে বা মেজাজ-মর্জিতে দুই বোন কিন্তু বেশ আলাদা। আর তাই একজন প্রেম করছেন। অথচ এক শরীরে থেকেও আর-একজনের প্রেম-ভালোবাসায় বিন্দুমাত্র রুচি নেই।
আরও শুনুন: নিজের ডিম্বনালি দিয়ে বানালেন লকেট, গর্ভপাতবিরোধী আইনের অভিনব প্রতিবাদ মার্কিন তরুণীর
প্রেমে পড়ছেন কারমেন। লুপিতা অবশ্য এ ব্যাপারে নির্বিকার। অবশ্য এইরকম শারীরিক অবস্থায় প্রেম করাও তো মুখের কথা নয়! লুপিতা মেনে নিয়েছেন যে, তা একটু সমস্যারই বটে। তবে প্রায় বছর দেড়েক ধরে তিনি এক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছেন। ড্যানিয়েল নামে সেই যুবকের সঙ্গে আলাপ একটি ডেটিং অ্যাপে। তাঁরা যে কনজয়েন্ড, এই বিষয়টি বলতে প্রথমে একটু সংকোচই হচ্ছিল। তবে সম্পর্কের ব্যাপারে তিনি গোড়া থেকেই স্বচ্ছ থাকতে চেয়েছিলেন। তাই বলে দিয়েছিলেন সব কথা। ফলত পরবর্তী জীবনে এ নিয়ে আর কোনও সমস্যা হয়নি। তাঁদের সম্পর্কের সীমাবদ্ধতা নিয়েও তাঁরা কথা বলে নিয়েছেন। যেমন শারীরিক কারণেই তাঁরা ঘনিষ্ঠ হতে পারেন না। আর তা নিয়ে প্রেমিকেরও কোনও সমস্যা নেই। অতএব হাসিমুখে তিনি জানান দিব্যি চলছে তাঁর প্রেমপর্ব। অন্য বোন লুপিতা বলছেন, তিনি তো তাঁর বোন আর বোনের প্রেমিক, দুজনকেই নিয়েই বিস্তর মজা-ঠাট্টা করেন।
আরও শুনুন: গর্ভনিরোধক বড়ি খেলে মহিলাদের সম্পর্কে কী ভাবে পুরুষরা? জানাল সমীক্ষা
এইভাবেই দিন কেটে যাচ্ছে লুপিতা আর কারমেনের। অনেকেই ভেবেছিলেন, তাঁদের জীবনের চাকা গড়াবে না। কিন্তু তাঁরা দিব্যি আছেন। আর তাই দুই বোন জানাচ্ছেন, প্রতিবন্ধকতাকে বাধা ভাবলেই তা বাধা, নইলে নয়। জীবন আসলে বেশ সুন্দর।